মাশরাফির গর্বের অর্জন

২০১৪ সালে নেতৃত্ব পাওয়ার পর এত দূর আসার কথা চিন্তাও করতে পারেননি মাশরাফি। যত দিন চলে, চলতে থাকুক- এই চিন্তা নিয়ে দ্বিতীয় দফায় নিয়েছিলেন নেতৃত্ব। তারপর পার হয়ে গেছে চার বছর। দাঁড়িয়ে আছেন ওয়ানডেতে দেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ডের সামনে। মাশরাফির কাছে এই কীর্তি তার ও পরিবারের জন্য অনেক গর্বের।   

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2018, 02:39 PM
Updated : 13 Dec 2018, 03:06 PM

দ্বিতীয় দফায় নেতৃত্ব পাওয়ার পর ২০১৪ সালের ২১ নভেম্বর প্রথম টস করতে নেমেছিলেন মাশরাফি। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে টস করলেই হাবিবুল বাশারকে ছাড়িয়ে যাবেন তিনি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাশারের ৬৯ ম্যাচ নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড স্পর্শ করেন মাশরাফি।

রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রোমাঞ্চিত মাশরাফি ফিরে গেলেন তার নেতৃত্বের শুরুর সময়টায়।

“এমন কোনো আশা নিয়ে শুরু করিনি। দুবার অধিনায়কত্ব পেয়েছি। প্রথমবার শুরুতেই চোটে পড়ে গিয়েছিলাম। ওই দফায় কত ম্যাচ পরপর যে চোট পেয়েছিলাম হিসাব করা কঠিন।”

“বেশ আর্লি আমি চোট পেয়ে ছিটকে পড়েছিলাম। লম্বা সময় দলের বাইরে ছিলাম। পরের বার আবার একই পরিস্থিতিতে পড়ি। অধিনায়কত্ব আমার ভাবনায় ছিল না। আমার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেট খেলা।”

মাশরাফি প্রথম দফায় নেতৃত্ব পান ২০০৯ সালে। কিন্তু নেতৃত্বের প্রথম টেস্টেই চোট পেয়ে ছিটকে যান। সেই চোট কাটিয়ে ফিরে ওয়ানডেতে প্রথম নেতৃত্ব দেওয়ার স্বাদ পান ২০১০ সালের ইংল্যান্ড সফরে।

আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস মিলিয়ে সেবার ইউরোপ সফরে ৬টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেন মাশরাফি। ওই বছরের অক্টোবরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে প্রথমবার নেতৃত্ব দেন দেশের মাটিতে। কিন্তু সিরিজের প্রথম ম্যাচেই আরও একবার চোট পেয়ে চলে যান মাঠের বাইরে। 

২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে এবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে, এই সময়ে বাংলাদেশের ৬৫ ম্যাচের ৬২টিতেই টস করেছেন তিনি। কেবল বিশ্রাম ও দলের মন্থর ওভার রেটের নিষেধাজ্ঞা মিলিয়ে খেলতে পারেননি তিনটি ম্যাচে।

মাশরাফি জানান, দ্বিতীয় দফায় নেতৃত্ব পাওয়ার পর কেবল ‘ম্যাচ বাই ম্যাচ’ এগোনোর ভাবনাই ছিল তার। 

“২০০৯ সালে প্রথমবার নেতৃত্ব পাওয়ার সময় অনেক আশা ছিল। ২০০৮ সালে খুব ভালো ছন্দে ছিলাম। টেস্ট ক্রিকেট তখন ফুল রিদমে খেলছিলাম। তখন অনেক আশা ছিল।”

“২০১৪ সালে যখন আবার নেতৃত্ব পাই তখন নিজেকে নিয়ে কোনো লক্ষ্য স্থির করতাম না। চলতে থাকুক, যত দিন চলে চলতে থাকুক- এভাবেই চিন্তা করেছি। এভাবে করতে করতে চার বছর হয়ে গেল। এটা আমার এবং আমার পরিবারের জন্য খুব গর্বের। লম্বা সময় বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব করতে পেরেছি।”

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশের হয়ে দুইশ ওয়ানডে খেলার কীর্তি গড়ার হাতছানি মাশরাফির সামনে। ২০১ ওয়ানডের দুটি খেলেছিলেন এশিয়া একাদশের হয়ে। এক ম্যাচে দুই রেকর্ডের চেয়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলে যেতে পারাটাই বেশি আনন্দ দিচ্ছে অভিজ্ঞ এই পেসারকে।

“কাল যদি মাঠে নামতে পারি ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করার সুযোগ হবে। তো অবশ্যই দারুণ একটা অনুভূতি হচ্ছে। তবে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একজন সদস্য হয়ে থাকা। এই দলে ১১ জন পারফরমার আছে, তাদের একজন হয়ে থাকাও বিরাট গর্বের।”