ইমরুল-সৌম্যর চ্যালেঞ্জই লিটনের প্রেরণা

কেমার রোচ, কিমো পল? ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন বলের বোলারই শুধু নয়, আপাতত লিটন দাসের ভাবনায় আছেন দুই সতীর্থও! ক্যারিবিয়ানদের মুখোমুখি হওয়ার আগে তো একাদশে জায়গা পাওয়ার লড়াইয়ে জিততে হবে ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারের সঙ্গে। তবে চ্যালেঞ্জে ভড়কে যাচ্ছেন না লিটন, বরং ত্রিমুখী এই লড়াইকেই করে নিচ্ছেন নিজের অনুপ্রেরণা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2018, 02:04 PM
Updated : 6 Dec 2018, 02:04 PM

বাংলাদেশের সবশেষ ওয়ানডেতে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন লিটন। তবে আগের ম্যাচেই করেছিলেন ৭৭ বলে ৮৩। তার এক ম্যাচ আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১১৭ বলে ১২১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস।

ওপেনিং নিয়ে কিছু দিন আগে পর্যন্তও যে দুর্ভাবনা ছিল বাংলাদেশের, তাতে সবশেষ চার ম্যাচে এমন দুটি ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানের জায়গা নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকার কথা। কিন্তু সবশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজ পাল্টে দিয়েছে চিত্র।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে রেকর্ড রান করেছেন ইমরুল। তিন ম্যাচে করেছেন দুটি সেঞ্চুরি, একটিতে আউট হয়েছেন ৯০ রানে। তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে অনেক সময়ই ছিল প্রশ্ন। এই সিরিজে দুটি সেঞ্চুরিই করেছেন একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে।

ওই সিরিজের শেষ ওয়ানডের আগে আচমকা ডাক পান সৌম্য। ফেরার ম্যাচটি রাঙিয়ে রাখেন ৯২ বলে ১১৭ রান করে। বৃহস্পতিবার বিসিবি একাদশের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান করেছেন ঝড়ো সেঞ্চুরি। এই দুই ম্যাচে তিনে খেললেও সৌম্য মূলত ওপেনারই।

গত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে তিনে খেলছেন সাকিব আল হাসান। তিনি যদি সেই ধারা ধরে রাখেন, তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসছে ওয়ানডে সিরিজে ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের সম্ভাব্য সঙ্গীর লড়াইয়ে থাকবেন তিনজন।

সেই লড়াইয়ের আঁচ টের পাচ্ছেন লিটন। তবে চ্যালেঞ্জটাকে নিচ্ছেন প্রেরণা হিসেবে।

“এখন যেহেতু দলে টপ অর্ডার নিয়ে লড়াই চলছে, আমাদের জন্য এটি অবশ্যই ভালো। চ্যালেঞ্জিংও বলতে পারেন। দলে এখন তিন-চারজন ওপেনার, তারা নিয়মিত পারফর্ম করছে। দেখতেও ভালো লাগে। নিজের ভেতর চ্যালেঞ্জ থাকে যে ভালো করতে হবে।”

“এখন যে বেঞ্চে থাকে, সেও জানে যে সুযোগ পেলে ভালো করতে পারে। যারা খেলে, তাদের চাপ থাকে যে ভালো কিছু করতে হবে। নইলে বাদ পড়তে হতে পারে। এটা ভালো ব্যাপার। আমি খেলব নাকি খেলব না, এটি পুরোপুরি টিম ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার। আমার যেটি কাজ, শতভাগ দেওয়া, সেটি চেষ্টা করব।”

শেষ পর্যন্ত ওপেনিংয়ে জায়গা না মিললে, দলের প্রয়োজনে অন্য পজিশনে খেলার ডাকও আসতে পারে। সৌম্য যেমন খেলেছেন তিনে। এশিয়া কাপে ইমরুল খেলেছেন মিডল অর্ডারে। লিটনে চাওয়া ওপেনিংয়েই জায়গা পাকা করা। তবে দল চাইলে অন্য পজিশনের দাবি মেটাতেও থাকছেন প্রস্তুত হয়ে।

“এটা টিম ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার (পজিশন)। নিজের পছন্দ বললে, আমি যেহেতু সবসময় ওপেন করি ও পারফর্ম করেছি, সেখানে খেলতেই বেশি কমফরটেবল। তবে তেমন কোনো চাপ নেই। ক্রিকেট খেলি তো সবসময় পারফর্ম করার জন্যই। যে কোনো অবস্থায় পারফর্ম করার চেষ্টা করব।”

ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি সেরা পারফরমারদের একজন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঝেমধ্যে কিছু ঝলক দেখালেও ধারাবাহিকভাবে আলো ছড়াতে পারেননি। নিজের ঘাটতির জায়গাগুলো লিটন উপলব্ধি করতে পেরেছেন। জানালেন, কাজ করছেন ব্যাটিং কোচের সঙ্গে।

“শট সিলেকশন ভালো করতে হবে আমার। আর মনোযোগী হতে হবে আরও। সত্যি বলতে, কিছু কিছু ক্রিকেটার আছেন, শুরু ভালো পায়, বড় করতে পারে না। তারা হয়তো অনেক কিছু চিন্তা করে। আমার যেগুলো আউট দেখবেন, আমি শুরুই পাচ্ছি না। শুরুটা নিয়েই তাই ভাবছি বেশি। ব্যাটিং কোচের সঙ্গে কথা হচ্ছে, কাজ করছি।”