ফরহাদ রেজার বিধ্বংসী বোলিং

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রায় ১৪ বছরের ক্যারিয়ার। ঘরোয়া ক্রিকেটের বহু যুদ্ধের অভিজ্ঞ সেনানী। ফরহাদ রেজার পারফরম্যান্সে তবু ভাটার টান নেই। প্রতি মৌসুমেই দারুণ ধারাবাহিক। ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসেও যেমন ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৭ উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিলেন প্রতিপক্ষের ব্যাটিং।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2018, 12:52 PM
Updated : 5 Dec 2018, 12:52 PM

বিসিএলের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম দিনে বগুড়ায় ৩২ রানে ৭ উইকেট নিয়েছেন ফরহাদ। মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ১১৮ রানেই। বুধবার দিনের খেলা শেষে পূর্বাঞ্চলের রান ছিল ১ উইকেটে ৩৭।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা মধ্যাঞ্চলের শুরুটা খারাপ ছিল না। দুই ওপেনার রাকিন আহমেদ ও পিনাক ঘোষ নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন ১৫ ওভার। পূর্বাঞ্চলকে প্রথম ব্রেক থ্রু দেন আবু জায়েদ চৌধুরী। ২১ রান করা পিনাককে ফিরিয়ে ভাঙেন ৩৮ রানের জুটি। তখন কে জানত, সেটিই হয়ে থাকবে ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি!

ফরহাদ বোলিংয়ে আসেন চতুর্থ বোলার হিসেবে। প্রথম ৫ ওভারে ছিলেন উইকেটশূন্য। মধ্যাঞ্চলের আরেক ওপেনার রাকিন আহমেদকে ফিরিয়ে শুরু করেন শিকার। এরপর ফিরিয়ে দেন মার্শাল আইয়ুব ও শুভাগত হোমকেও।

ফরহাদের বিধ্বংসী চেহারা তখনও ফুটে উঠেনি ততটা। লাঞ্চের আগে ও পরে মিলিয়ে প্রথম স্পেলে করেছেন টানা ১৩ ওভার। ২২ রান দিয়ে উইকেট ছিল তিনটি।

মাঝে আব্দুল মজিদকে ফেরান ইরফান হোসেন, আবু জায়েদের দ্বিতীয় শিকার হন তাইবুর পারভেজ।

দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে প্রথম দুই বলেই শরিফউল্লাহর ব্যাটে দুটি চার হজম করেন ফরহাদ। এরপরই ঘুরে দাঁড়িয়ে গুঁড়িয়ে দেন মধ্যাঞ্চলের ইনিংসের বাকিটা।

দুই চার মারা শরিফউল্লাহকে আউট করে দেন পরের বলেই। খানিক পর চার বলের মধ্যেই তিন উইকেট নিয়ে শেষ করে দেন ইনিংস। শহিদুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেনকে পরপর দুই বলে ফিরিয়ে জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। সেই বল উতরে যান সালাউদ্দিন সাকিল। কিন্তু পরের বলেই তাকে ফিরিয়ে ফরহাদ স্বাদ পান ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৭ উইকেটের।

এই ম্যাচের আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১২০ ম্যাচ খেলে তার সেরা বোলিং ছিল ৫৪ রানে ৬ উইকেট। বিসিএলের আগে এবার জাতীয় লিগে ২২ উইকেট নিয়ে ফরহাদ ছিলেন পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।

উইকেটের পেছনে দারুণ সফল ছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ক্যারিয়ারে আগের ৭ ইনিংসে ৮ ক্যাচ নেওয়া তরুণ কিপার এই ইনিংসেই ক্যাচ নিয়েছেন ৬টি।

বিকেলে পূর্বাঞ্চল ব্যাটিংয়ে নেমে রনি তালুকদারকে হারায় ১৮ রানে। আলোকস্বল্পতায় দিনের খেলা শেষ হয় ১৯ ওভার আগে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মধ্যাঞ্চল: ৫৫ ওভারে ১১৮ (রাকিন ১৪, পিনাক ২১, মজিদ ৭, মার্শাল ০, শুভাগত ৯, তাইবুর ১৪, জাকের ২০*, শরিফউল্লাহ ২৩, শহিদুল ৭, শাহাদাত ০, শাকিল ০; আবু জায়েদ ২/৩৩, ইরফান ১/২৬, হাসান ০/২৪, ফরহাদ রেজা ৭/৩২)।

পূর্বাঞ্চল: ১৪ ওভারে ৩৭/১ (রনি ১৮, শামসুর ৯*, মাহমুদুল ৯*; শাহাদাত ১/২৫, শহিদুল ০/১১, সাকিল ০/০)।