বাংলাদেশের চতুর্থ সিরিজ জয়
ওয়েস্ট ইন্ডিজে কিভাবে বাংলাদেশ হেরেছিল এই সিরিজের আগে সতীর্থদের সেই কথা মনে রাখতে বলেছিলেন সাকিব আল হাসান। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই টেস্টেই তার দল হেরেছিল তিন দিনে। এর একটা ছিল ইনিংস ব্যবধানে। অধিনায়কের কথা মনে রেখে মাঠে নামা ক্রিকেটাররা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফিরিয়ে দিলেন সেই যন্ত্রণা। স্পিনারদের দাপটে বাংলাদেশ জিতল চতুর্থ টেস্ট সিরিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট হেরেছিল ইনিংস ও ২১৯ রানে। দ্বিতীয়টি ১৬৬ রানে।
দেশের মাটিতে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট ৬৪ রানে জেতে বাংলাদেশ। মিরপুর জিতল ইনিংস ও ১৮৪ রানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ করল টেস্ট সিরিজে। ২০০৯ সালে সফরে গিয়ে ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। তাদের অন্য দুটি সিরিজ জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দেশের মাটিতে।
বাংলাদেশের রেকর্ড জয়
শারমন লুইসকে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২১৩ রানে থামালেন তাইজুল ইসলাম। ইনিংস ও ১৮৪ রানে জিতল বাংলাদেশ।
প্রথমবারের মতো দুই ম্যাচের সিরিজে প্রতিপক্ষের ৪০ উইকেটই নিলেন স্পিনাররা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশেরই ৩৮ উইকেট ছিল আগের সেরা।
টেস্ট ইতিহাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই জয়ে দারুণ অবদান ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করা মেহেদী হাসান মিরাজের। ১১৭ রানে ১২ উইকেট নেন এই অফ স্পিনার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৯ রানে ১২ উইকেট তার আগের সেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫০৮
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: (আগের দিন শেষে ৭৫/৫) ৩৬.৪ ওভারে ১১১ (হেটমায়ার ৩৯, ডাওরিচ ৩৭, বিশু ১, রোচ ১, ওয়ারিক্যান ৫*, লুইস ০; সাকিব ১৫.৪-৪-২৭-৩, মিরাজ ১৬-১-৫৮-৭, নাঈম ৩-০-৯-০, তাইজুল ১-০-১০-০, মাহমুদউল্লাহ ১-১-০-০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (ফলো অন) ৫৯.২ ওভারে ২১৩ (ব্র্যাথওয়েট ১, পাওয়েল ৬, হোপ ২৫, আমব্রিস ৪, চেইস ৩, হেটমায়ার ৯৩, ডাওরিচ ৩, রোচ ৩৭*, ওয়ারিক্যান ০, লুইস ২০; সাকিব ১৪-৩-৬৫-১, মিরাজ ২০-২-৫৯-৫, তাইজুল ১০.২-১-৪০-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৬-০, নাঈম ১৪-২-৩৪-১)
ম্যাচে মিরাজের দ্বিতীয় পাঁচ
প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নেওয়া মেহেদী হাসান দ্বিতীয় ইনিংসে পেলেন তার পঞ্চম উইকেট। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো টেস্টে পেলেন ১২ উইকেট।
মিরাজের পঞ্চম শিকার জোমেল ওয়ারিক্যান। অফ স্টাম্পের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া বলে অফ স্পিনারকে সহজ ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন সফরকারীদের দশম ব্যাটসম্যান। ১৭১ রানে নবম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
হেটমায়ার ঝড় থামালেন মিরাজ
টেস্ট সিরিজে চারবারই মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হলেন শিমরন হেটমায়ার। পাল্টা আক্রমণে দ্রুত এগোনো বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ফিরলেন মাত্র ৭ রানের জন্য প্রথম সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে।
অফ স্পিনারকে আগের বলে লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন হেটমায়ার। পরের বলে লং অফ দিয়ে তুলে নিতে চেয়েছিলেন আরেকটি ছক্কা। এবার টাইমিং করতে পারেননি, ধরা পড়েন মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে।
৯২ বলে ৯ ছক্কা ও ১ চারে ৯৩ রানের ইনিংস খেলে ফিরেন হেটমায়ার। ম্যাচে তিনি মিরাজের একাদশতম শিকার।
১৬৬ রানে অষ্টম উইকেট হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে কেমার রোচের সঙ্গী জোমেল ওয়ারিক্যান।
মিরাজের দশম
শিমরন হেটমায়ারকে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন দেবেন্দ্র বিশু। তাকে ফিরিয়েই মিরাজ পূরণ করলেন ম্যাচে ১০ উইকেট।
অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে কাট করেছিলেন বিশু। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে তীব্র গতিতে আসা বলকে স্লিপে দারুণ রিফ্লেক্স ক্যাচে পরিণত করেন সৌম্য সরকার।
১২ রানে ফিরলেন বিশু। ভাঙল ৪৭ রানের সপ্তম উইকেট জুটি।
মিরাজ ম্যাচে ১০ উইকেটের দেখা পেলেন দ্বিতীয়বার। বাংলাদেশের হয়ে দুইবার ১০ উইকেটের কৃতিত্ব আছে কেবল আর সাকিব আল হাসানের।
ডাওরিচকে ফেরালেন নাঈম
স্পিন চতুষ্টয়ের চতুর্থ জন নাঈম হাসানও ধরলেন শিকার। শেন ডাওরিচকে ফিরিয়ে দলকে নিয়ে গেলেন জয়ের আরও কাছে।
অফ স্পিনারকে পা বাড়িয়ে সামলাতে চেয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিপার ব্যাটসম্যান। অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে প্রথম স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে।
১৮ বলে তিন রান করে ফিরে যান ডাওরিচ। ৯৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে শিমরন হেটমায়ারের সঙ্গী দেবেন্দ্র বিশু।
দাপুটে ব্যাটিংয়ে হেটমায়ারের ফিফটি
সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা ব্যাটসম্যান শিমরন হেটমায়ার দাপুটে ব্যাটিংয়ে তুলে নিলেন ফিফটি।
৫৮ বলে সিরিজে নিজের দ্বিতীয় ফিফটিতে পৌঁছান বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পাল্টা আক্রমণে দ্রুত এগোনো হেটমায়ার এই সময়ে হাঁকিয়েছেন চারটি ছক্কা।
হোপকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মিরাজ
শেই হোপকে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ ভাঙলেন পঞ্চম উইকেট জুটির প্রতিরোধ।
বাজে শটে ফিরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। শর্ট বলে চড়াও হতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে ধরা পড়েন সাকিব আল হাসানের হাতে।
৭৫ বলে ২৫ রান করে ফিরেন হোপ। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৬ রানের জুটি। ৮৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে শিমরন হেটমায়ারের সঙ্গী শেন ডাওরিচ।
হেটমায়ারকে জীবন দিলেন মুশফিক
তাইজুল ইসলামকে পরপর দুই বলে ছক্কা হাঁকানো শিমরন হেটমায়ারকে থামাতে নাঈম হাসানকে আক্রমণে এনেছিলেন অধিনায়ক। কাজে লেগে যাচ্ছি সাকিব আল হাসানের এই বোলিং পরিবর্তন। কিন্তু নাঈমের বলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে জীবন দিলেন মুশফিকুর রহিম।
অফ স্পিনারকে কাট করেছিলেন হেটমায়ার। মাঝ ব্যাটে খেলতে পারেননি, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ক্যাচ যায় মুশফিকের কাছে। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি কিপার। প্রথম স্লিপে ডাইভ দিয়ে মুঠোয় নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সৌম্য সরকার কিন্তু বল আগেই মাটিতে পড়ে যায়। সে সময় ৪০ রানে ছিলেন হেটমায়ার।
হোপ-হেটমায়ার জুটিতে ফিফটি
দ্রুত চার উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানছেন শেই হোপ ও শিমরন হেটমায়ার। পঞ্চম উইকেটে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি।
এক প্রান্তে সাবধানী ব্যাটিং করছেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হোপ। শুরু থেকেই সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছেন হেটমায়ার। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান এরই মধ্যে হাঁকিয়েছেন চারটি ছক্কা।
৬৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে জুটির রান। ম্যাচে এটি সফরকারীদের মাত্র দ্বিতীয় অর্ধশত রানের জুটি।
২৫ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৮০/৪। হোপ ২৫ ও হেটমায়ার ৩৭ রানে ব্যাট করছেন। বাংলাদেশকে আবার ব্যাটিংয়ে নামাতে তাদের চাই আরও ৩১৭ রান।
বাংলাদেশের দারুণ সেশন
দারুণ বোলিংয়ে তিন দিনেই ঢাকা টেস্ট জয়ের আশা জাগিয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ইনিংস মিলিয়ে তুলে নিয়েছে ৯ উইকেট।
৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা সফরকারীরা প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় মাত্র ১১১ রানে। ফলো অনে পড়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসেও স্বস্তিতে নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
লাঞ্চে যাওয়ার সময় সফরকারীদের স্কোর ৪৬/৪। শেই হোপ ১৮ ও শিমরন হেটমায়ার ১৩ রানে ব্যাট করছেন।
দিনের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রায় একাই গুঁড়িয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৭ উইকেট নেওয়া তরুণ এই অফ স্পিনার এদিন নেন চার উইকেট। অন্য উইকেটটি নেন সাকিব আল হাসান। দুই স্পিনারই প্রথম ইনিংসে ভাগ করে নেন সফরকারীদের ১০ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রথম ওভারে আঘাত হানেন সাকিব। পরে শিকার ধরেন মিরাজও। পরপর দুই ওভারে তাইজুল ইসলাম বিদায় করেন দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে।
স্বাগতিকদের আবার ব্যাটিংয়ে নামাতে আরও ৩৫১ রান চাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের। প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষকে ফলো অন করানোর স্বাদ পাওয়া বাংলাদেশের সামনে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের হাতছানি।
তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার চেইস
টানা দুই ওভারে উইকেট পেলেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনার ফিরিয়ে দিলেন রোস্টন চেইসকে।
অতটা ফুল লেংথের বল না হলেও ড্রাইভ করেছিলেন ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ঠিক মতো শট খেলতে পারেননি, এক্সট্রা কাভারে নিচু ক্যাচ মুঠোয় নেন মুমিনুল হক।
৯ বলে ৩ রান করে ফিরেন চেইস। ২৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে শেই হোপের সঙ্গী শিমরন হেটমায়ার।
এসেই তাইজুলের আঘাত
প্রথম ইনিংসে নিজের প্রথম ওভারে ১০ রান দেওয়ার পর আর বোলিংই পাননি তাইজুল ইসলাম। দ্বিতীয় ইনিংসে একাদশ ওভারে আক্রমণে এসেই আঘাত হানলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। দ্বিতীয় বলে ফিরিয়ে দিলেন সুনিল আমব্রিসকে।
অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। করতে পারেননি বলে-ব্যাটে, আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নেন ব্যাটসম্যান। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় মিডল স্টাম্পে লাগত বল। একটি রিভিউ নষ্ট করে ফিরে যান ২০ বলে চার রান করা আমব্রিস।
২৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে শেই হোপের সঙ্গী রোস্টন চেইস। বাংলাদেশকে আবার ব্যাটিংয়ে নামাতে আরও ৩৭৪ রান চাই তাদের।
পাওয়েলকে ফেরালেন মিরাজ
নিজের দ্বিতীয় ওভারে আঘাত হানলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নেওয়া তরুণ এই অফ স্পিনার ফিরিয়ে দিলেন কাইরন পাওয়েলকে।
বেরিয়ে এসে মিরাজকে খেলতে চেয়েছিলেন পাওয়েল। ব্যাটে-বলে করতে পারেননি এই ওপেনার। অনেক এগিয়ে যাওয়ায় সময় মতো ফিরতেও পারেননি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেলস ফেলে দেন কিপার মুশফিকুর রহিম।
১০ বলে ৬ রান করে ফিরেন পাওয়েল। ১৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে শেই হোপের সঙ্গী সুনিল আমব্রিস।
আবারও প্রথম আঘাত সাকিবের
দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রথম ওভারে আঘাত হানলেন সাকিব আল হাসান। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে বিদায় করলেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে।
প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক টিকেছিলেন ছয় বল। এবার ফিরলেন চার বল খেলে। বাঁহাতি স্পিনারের স্টাম্পের বল লেগে ঘোরাতে চেয়েছিলেন ব্র্যাথওয়েট। ব্যাটে-বলে করতে পারেননি, আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে রিভিউ না নিয়ে ফিরে যান ব্যাটসম্যান।
দ্বিতীয় ইনিংসে ২ রানে প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে কাইরন পাওয়েলের সঙ্গী শেই হোপ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫০৮
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: (আগের দিন শেষে ৭৫/৫) ৩৬.৪ ওভারে ১১১ (হেটমায়ার ৩৯, ডাওরিচ ৩৭, বিশু ১, রোচ ১, ওয়ারিক্যান ৫*, লুইস ০; সাকিব ১৫.৪-৪-২৭-৩, মিরাজ ১৬-১-৫৮-৭, নাঈম ৩-০-৯-০, তাইজুল ১-০-১০-০, মাহমুদউল্লাহ ১-১-০-০)।
ফলো অন করানোর স্বাদ পেল বাংলাদেশ
নিজের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো দলকে ফলো অন করানোর স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের স্পিন ভেল্কিতে প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১১১ রানে থামিয়ে স্বাগতিকরা নেয় ৩৯৭ রানের লিড। অধিনায়ক সাকিব আবার ব্যাটিংয়ে ডাকেন সফরকারীদের।
ক্যারিয়ারে সেরা বোলিংয়ে অফ স্পিনার মিরাজ ৭ উইকেট নেন ৫৮ রানে। বাঁহাতি স্পিনার সাকিব ৩ উইকেট নেন ২৭ রানে।
সাকিবের তিনে থামল উইন্ডিজ
তৃতীয় দিন মাত্র ৫১ মিনিট টিকল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। শারমন লুইসকে ফিরিয়ে সফরকারীদের ১১১ রানে থামালেন সাকিব আল হাসান।
আগের বলে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশের এলবিডব্লিউর রিভিউ। পরের বলেই মিলল উইকেট। বাঁহাতি স্পিনারের স্টাম্প সোজা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান লুইস।
মিরাজের সপ্তম ডাওরিচ
শেন ডাওরিচকে জীবন দেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজই ভাঙলেন এই কিপার ব্যাটসম্যানের প্রতিরোধ। আগে তিনবার ছয় উইকেট পাওয়া অফ স্পিনার ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পেলেন সাত উইকেট।
অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে স্পিন করে ভেতরে ঢোকা বল ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন ডাওরিচ। ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি, আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে রিভিউ নেন ব্যাটসম্যান। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় লেগ স্টাম্পের মাথায় লাগতো বল।
৭৫ বলে তিন চারে ৩৭ রান করে ফিরে যান ডাওরিচ। ১১০ রানে নবম উইকেট হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
রোচকে ফিরিয়ে মিরাজের ছয়
টানা তিন ওভারে উইকেট নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অফ স্পিনারকে উড়ানোর চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন কেমার রোচ।
মিরাজকে স্লগ করে লং অন দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান। টাইমিং করতে পারেননি তিনি। অনেক সময় পাওয়া লিটন দাস মুঠোয় নেন সহজ ক্যাচ। ক্যারিয়ারের চতুর্থবারের মতো ছয় উইকেট পেলেন মিরাজ।
৫ বলে ১ রান করে ফিরেন রোচ। ৯২ রানে অষ্টম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে শেন ডাওরিচের সঙ্গী জোমেল ওয়ারিক্যান।
জীবন পেলেন রোচ
আবার সাকিব আল হাসানের বলে হাতছাড়া হল সুযোগ। এবার বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার নিজেই ছাড়লেন ক্যাচ।
কেমার রোচের স্ট্রেইট ড্রাইভে খুব একটা জোর ছিল না। তবুও মুঠোয় জমাতে পারেননি সাকিব। সে সময় শূন্য রানে ব্যাট করছিলেন রোচ।
মিরাজের পঞ্চম
নিজের পরপর দুই ওভারে মিরাজের উইকেট। হেটমায়ারের পর বিদায় দেবেন্দ্র বিশুর। এই উইেকটের সমান কৃতিত্ব দাবিদার অবশ্য ফিল্ডার সাদমান ইসলাম!
মিরাজের বলে কাট করেছিলেন বিশু। বলে গতি ছিল যথেষ্ট। কিন্তু বল গিয়ে লাগে সোজা সিলি পয়েন্টে সাদমানের বুকে। সেখান থেকে জমে যায় হাতে। অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে মাঠ ছাড়েন বিশু।
১ রানে আউট হলেন বিশু। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ৮৮।
মিরাজ নিলেন পঞ্চম উইকেটে। ১৮ টেস্টে ৫ উইকেট হলা ৬ বার।
মিরাজের বলে তৃতীয়বার হেটমায়ার
সিরিজে তৃতীয়বারের মতো বিপজ্জনক শিমরন হেটমায়ারকে ফেরালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অফ স্পিনারের চতুর্থ উইকেটে ভাঙল ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিরোধ গড়া ষষ্ঠ উইকেট জুটি।
বাংলাদেশ রিভিউ নিলে এক বল আগেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যেতে পারতেন হেটমায়ার। সেই রিভিউ না নেওয়ার জন্য কোনো মাশুল দিতে হয়নি স্বাগতিকদের। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে পরের বলেই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেন মিরাজ।
৫৩ বলে বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৯ রান করে ফিরেন হেটমায়ার। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৭ রানের জুটি।
৮৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিজে শেন ডাওরিচের সঙ্গী দেবেন্দ্র বিশু।
ডাওরিচকে জীবন দিলেন মিরাজ
দিনের তৃতীয় ওভারে বাংলাদেশ পায় জুটি ভাঙার প্রথম সুযোগ। তবে সাকিব আল হাসানের বলে শেন ডাওরিচের ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাঁহাতি স্পিনারের ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ডাওরিচ ঠিক মতো ড্রাইভ করতে পারেননি। পয়েন্টে যাওয়া ক্যাচ ঝাঁপিয়েও হাতে জমাতে পারেননি মিরাজ। সে সময় ১৭ রানে ব্যাট করছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিপার ব্যাটসম্যান
হেটমায়ার-ডাওরিচ জুটিতে পঞ্চাশ
দ্রুত প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানছেন শিমরন হেটমায়ার ও শেন ডাওরিচ। ষষ্ঠ উইকেটে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি।
সাকিব আল হাসানের করা দিনের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন হেটমায়ার। বাকি পাঁচ বল ডট খেলেন ডাওরিচ। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে ছক্কায় স্বাগত জানান হেটমায়ার সঙ্গে ৭৯ বলে জুটির রান নিয়ে যান পঞ্চাশে।
২৬ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৮২/৫। হেটমায়ার ৩৯ ও ডাওরিচ ১৭ রানে ব্যাট করছেন।
বড় লিডের লক্ষ্য বাংলাদেশের
নিজেদের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কোনো দলকে ফলো অন করানোর স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। ঢাকা টেস্ট দিয়ে সেই যাত্রা শুরুর আশা জাগিয়েছে স্বাগতিকরা। তবে মাহমুদউল্লাহ জানান, এখনই ফলো অন নিয়ে ভাবছেন না তারা। তৃতীয় দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্রুত গুটিয়ে দিয়ে প্রথম ইনিংসে বড় লিড নেওয়া বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হবে সকাল সাড়ে নয়টায়।
বাংলাদেশের ৫০৮ রানের জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বিপদে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৫ উইকেটে ৭৫ রান করে তারা। বাংলাদেশকে আরেকবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে এখনও ২৩৪ রান চাই সফরকারীদের। ব্যাটিংয়ে বাজে শুরুর পর সেটা এখন অনেক দূরের পথ।
মেহেদী হাসান ও সাকিব আল হাসান ২৯ রানের মধ্যে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন। চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ইনিংসে প্রতিরোধ গড়া শিমরন হেটমায়ার ও শেন ডাওরিচ এবারও দাঁড়িয়ে গেছেন। তাদের সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন সংগ্রাম। হেটমায়ার ৩২ ও ডাওরিচ ১৭ রানে ব্যাট করছেন।
দ্বিতীয় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন শেষে ২৫৯/৫) ১৫৪ ওভারে ৫০৮ (সাকিব ৮০, মাহমুদউল্লাহ ১৩৬, লিটন ৫৪, মিরাজ ১৮, তাইজুল ২৬, নাঈম ১২*; রোচ ২৫-৪-৬১-২, লুইস ২০-২-৬৯-১, চেইস ২৮-০-১১১-১, ওয়ারিক্যান ৩৮-৫-৯১-২, বিশু ২৮-১-১০৯-২, ব্র্যাথওয়েট ১৫-০-৫৭-২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৪ ওভারে ৭৫/৫ (ব্র্যাথওয়েট ০, পাওয়েল ৪, হোপ ১০, আমব্রিস ৭, চেইস ০, হেটমায়ার ৩২*, ডাওরিচ ১৭*; সাকিব ৯-৩-১৫-২, মিরাজ ১০-১-৩৬-৩, নাঈম ৩-০-৯-০, তাইজুল ১-০-১০-০, মাহমুদউল্লাহ ১-১-০-০)