ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিনে মাহমুদউল্লাহ করেছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন ১৩৬ রানে। ক্যারিয়ারের প্রথম ৭৭ ইনিংসে করেছিলেন একটি সেঞ্চুরি। এবার পরপর দুই সিরিজে চার ইনিংসেই করলেন দুটি। এই শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামেই কিছুদিন আগে সেঞ্চুরি করেছিলেন জিম্বাবুয়ে সিরিজের শেষ ইনিংসে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরিটি যদি হয় স্বস্তির, এবারেরটি নিশ্চিত ভাবেই ভরসার। ওই সেঞ্চুরিতে শুধু আট বছরের টেস্ট সেঞ্চুরি খরাই ঘোচাননি, দলে জায়গাও বাঁচিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সেঞ্চুরির আগে টানা ১১ ইনিংসে ছিল না কোনো ফিফটিও। টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল আগেও। আবারও সেই শঙ্কা ঘিরে ধরেছিল। গত ১৪ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরিটি তাই এসেছিল রক্ষাকবচ হয়ে।
তবে যথেষ্ট ছিল না শুধু সেটুকুই। ওই সেঞ্চুরিতে টেস্ট ক্যারিয়ার নতুন দম পেয়েছিল বটে। কিন্তু জীর্ণ টেস্ট ক্যারিয়ারকে পুরোদমে ছোটাতে প্রয়োজন ছিল আরও দারুণ কিছু। ৬ ঘণ্টা ১৬ মিনিটের এই ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ ছুটলেন সেই গতিময়তায়।
ইনিংসটির ভিত গড়া হয়েছিল আগের দিন বিকেলেই। ৩১ রানে অপরাজিত থেকে শেষ করেছিলেন দিন। দ্বিতীয় দিন সকালে অবশ্য ব্যাটিংয়ে ছিল খানিকটা অস্থিরতা। প্রথম ঘণ্টায় ছিলেন বেশ নড়বড়ে। আরেকপাশ সাকিব আল হাসানকে একের পর এক শট খেলতে দেখেই কিনা, মাহমুদউল্লাহও ছিলেন ছটফটে। একবার স্লিপে ক্যাচ হননি অল্পের জন্য। কয়েকবারই ব্যাটের কানা নিয়েছে বল।
তবে সাকিব আউট হওয়ার পরপরই নিজেকে গুছিয়ে নেন মাহমুদউল্লাহ। আরেকপাশে লিটন দাসের দারুণ সব শট খেলাও তার ওপর কমিয়ে দেয় চাপ। আঁটসাঁট ডিফেন্স আর সাবধানী ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান। জোর করে শট খেলার প্রবণতা, কিংবা তাড়া দেখা যায়নি আর একবারও। এমনকি দল ৮ উইকেট হারালেও করেননি তাড়াহুড়ো। নব্বই ছোঁয়ার পর সেঞ্চুরি করতে বল খেলেন ৩০টি!
সেঞ্চুরির পর পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে তুলেছেন দ্রুত রান। দলকে পাঁচশ পার করানোর পর আউট হয়েছেন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে। ২৪২ বল খেলে ১০ চারে ১৩৬।
এই ইনিংসের পর হয়তো টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের ওপর বিশ্বাস পোক্ত হবে মাহমুদউল্লাহর। দলও এখন তার অভিজ্ঞতায় ভরসা পাবে পুরোপুরি।