অধিনায়ক সাকিবের রোমাঞ্চ, বোলার সাকিবের চ্যালেঞ্জ

টার্নিং উইকেট, প্রতিপক্ষ দুর্বল স্পিনে। নিজেদের অস্ত্র ভাণ্ডারে চারজন স্পিনার। যে কোনো অধিনায়কের জন্যই রোমাঞ্চকর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে সেই রোমাঞ্চের দোলা অনুভব করেছেন সাকিব আল হাসান। পাশাপাশি পেয়েছেন চ্যালেঞ্জের আঁচও। সঙ্গী যখন আরও তিন উইকেট শিকারি স্পিনার, বোলার সাকিবের জন্য চ্যালেঞ্জটাও তো আরও কঠিন!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2018, 01:34 PM
Updated : 29 Nov 2018, 03:33 PM

চার স্পিনারের প্রসঙ্গে যে কোনো আলোচনাতেই অবশ্য সবার আগে উঠে আসে ভারতের কথা। বিষেন সিং বেদি, ভগবত চন্দ্রশেখর, এরাপল্লি প্রসন্ন ও শ্রীনিবাস ভেঙ্কটরাঘবন-ভারতের স্পিন চতুষ্টয় অমর হয়ে আছে টেস্ট ইতিহাসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেমন একসময় ‘পেস কোয়ার্টেট’ দিয়ে রাজত্ব করেছে ক্রিকেট বিশ্বে, ভারতও ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষকে নাকাল করেছে ‘স্পিন কোয়ার্টেট’ দিয়ে।

কিংবদন্তির সেই চার স্পিনারের সঙ্গে তুলনা চলে না অবশ্যই। তবে বাংলাদেশও নিজেদের মতো করে গড়ে তুলতে চাইছে ‘স্পিন কোয়ার্টেট’। চট্টগ্রাম টেস্টে ক্যারিবিয়ানদের ২০ উইকেটই নিয়েছেন বাংলাদেশের চার স্পিনার।

ভারতের স্পিন চতুষ্টয়কে দারুণভাবে সামলে ও কাজে লাগিয়ে কিংবদন্তি হয়ে আছেন সেই দলের অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদি। একজন অধিনায়কের জন্য ব্যাপারটি কেমন, চট্টগ্রামে সেই স্বাদ পেয়েছেন সাকিব। মিরপুর টেস্ট শুরুর আগের দিন শোনালেন নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা।

“অবশ্যই এটি রোমাঞ্চকর, বিশেষ করে যেভাবে জুটিতে বোলিং করতে পেরেছি। একই সঙ্গে আমার কাছে মনে হয় একটু চ্যালেঞ্জিংও। কারণ স্পিনাররাও সব সময় চায় লম্বা স্পেল করতে, যা তাইজুল ছাড়া আর কাউকে দিয়ে করাতে পারিনি। কিন্তু এক দিক থেকে চ্যালেঞ্জিং হলেও আরেক দিক থেকে অনেক রোমাঞ্চকর, কারণ সবাই চেষ্টা করছে দলের প্রয়োজনে সবাই একটা উইকেট নিতে বা ভালো বোলিং করতে। আমার কাছে ভালো লেগেছে যে সব সময় দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণ করতে পেরেছি।”

“আমাদের চেষ্টা থাকবে এই টেস্টেও যেন দুই দিক থেকে আক্রমণ করতে পারি। যেন জুটিতে ভালো বল করতে পারি। এটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। সাধারণত যে উইকেট হয়ে আসছে এখানে, ওরকম যদি হয়, তাহলে জুটি গড়ে বল করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে।”

অধিনায়ক সাকিবের বাস্তবতা পতৌদির চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন। সাকিব নিজেই যে এই চতুষ্টয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ! নেতৃত্বের পাশাপাশি নিজের বোলিং, নিজের ভূমিকা নিয়ে ভাবতে হয়। সাফল্যের পথ বের করতে হয়। বোলার সাকিবের অভিজ্ঞতা তাই অধিনায়ক সাকিবের চেয়ে আলাদা। এখানে তিনি চ্যালেঞ্জটাই দেখছেন বেশি।

“আমার কাছে মনে হয়, এখানে রোমাঞ্চের চেয়ে চ্যালেঞ্জ বেশি। কারণ সবাই পারফর্ম করার চেষ্টা করবে আরও বেশি। সবার ভেতরে দলের জন্য অবদান রাখার তাড়না থাকবে আরও বেশি। যখন দেখবে আরেকজন উইকেট পাচ্ছে, অন্য বোলার চাইবে সে যেন তার চেয়ে আরও ভালো করতে পারে।”

“আমার মনে হয় এটা খুব ভালো একটা প্রতিযোগিতা তৈরি করবে দলের ভেতরে, আমাদের চার স্পিনারের ভেতরে। আমাদের দুই জন বাঁহাতি স্পিনার আর দুই জন অফ স্পিনার, আমাদের নিজেদের ভেতর একটা লড়াই থাকবে। যেটা খুবই ভালো হবে ম্যাচটা ভালো করার জন্য।”