বোথামের জন্মদিনে বোথামকে ছাড়িয়ে সাকিব

হাতছানি ছিল ইতিহাসের। সাকিব আল হাসান আলিঙ্গন করলেন দু হাতে। টেস্ট শুরু হয়েছিল ৪ উইকেটের অপেক্ষায়; দ্বিতীয় ইনিংসে প্রয়োজন ছিল ১ উইকেটের। খুব দীর্ঘায়িত হলো না সেই অপেক্ষা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই পেয়ে গেলেন কাঙ্ক্ষিত সেই উইকেট। পূর্ণ হলো ২০০ টেস্ট উইকেট আর তিন হাজার রানের ডাবল। ইংলিশ কিংবদন্তি ইয়ান বোথামের জন্মদিনেই ছাড়িয়ে গেলেন তার রেকর্ড।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2018, 05:52 AM
Updated : 24 Nov 2018, 09:47 AM

বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে দুইশ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করলেন সাকিব। একটি রেকর্ডে ছাড়িয়ে গেলেন ক্রিকেট ইতিহাসের সবাইকে। ৩ হাজার রানের ক্লাবের সদস্য সাকিব হয়েছিলেন বেশ আগেই। ২০০ উইকেট তাকে জায়গা করে দিল অভিজাত ক্লাবে, যে ক্লাবের সদস্য সাকিবকে নিয়ে হলো ১৪ জন। তবে সবচেয়ে কম টেস্ট খেলে সেখানে পৌঁছালেন সাকিব। পেছনে ফেললেন শনিবারই ৬৩ বছর পূর্ণ করা বোথামকে।

২০০ উইকেট থেকে ৪ উইকেট দূরে দাঁড়িয়ে শুরু করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট। প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে শনিবার শুরু করলেন নতুন বল হাতে। তার দ্বিতীয় ওভারে স্টাম্পড কাইরান পাওয়েল।

৫৪ টেস্টে পূর্ণ হলো সাকিবের ৩ হাজার রান ও ২০০ উইকেটের ডাবল। বোথামের লেগেছিল ৫৫ টেস্ট।

বাংলাদেশের হয়ে ১০০ টেস্ট উইকেট আছে সাকিব ছাড়া আর কেবল মোহাম্মদ রফিকের। দেশের হয়ে সবার আগে ২০০ ছুঁলেন যিনি, প্রথম টেস্ট উইকেটের জন্য তার অপেক্ষা করতে হয়েছে চতুর্থ টেস্ট পর্যন্ত। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ওয়েলিংটন টেস্টে ক্রেইগ কামিংকে ফিরিয়ে শুরু করেন উইকেট শিকার অভিযান। প্রথম ৬ টেস্ট শেষেও কেবল উইকেট ছিল ৩টি।

তখনও পর্যন্ত একটু বোলিং আর একটু ব্যাটিং দিয়েই ছিলেন টেস্ট দলে। ২০০৮ সালেই অক্টোবরে দেশের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের আগে সেই সময়ের কোচ জেমি সিডন্স হুট করেই ঘোষণা করলেন দলের সেরা স্পিনার সাকিব। তার বোলিং ভাগ্যও যেন বদলে গেল রাতারাতি। সেই ম্যাচেই প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়লেন ৩৬ রানে ৭ উইকেট নিয়ে।

এরপর আর থামাথামি নেই। ১০ বছর আগে যে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বোলার হিসেবে তার নবযাত্রা শুরু হয়েছিল ৭ উইকেট নিয়ে, সেই মাঠেই এবার রচনা হলো নতুন অর্জনের গল্প।

সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ারের ৫০তম উইকেটও ছিল এই মাঠে। ভারতের ভিভিএস লক্ষনকে আউট করে ৫০ ছুঁয়েছিলেন ১৫তম টেস্টে। উইকেটের সেঞ্চুরি হয় ২৮তম টেস্টে, খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্যারেন স্যামিকে ফিরিয়ে।

২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে সাকিব দেখা পান ১৫০ উইকেটের। ক্যারিয়ারে সেটি তার ৪৩তম টেস্ট, জো রুট ছিলেন দেড়শতম শিকার।

দেড়শ থেকে দুইশ আসতে লাগল মাত্র ১১ টেস্ট। ৫৪ টেস্টে ছুঁলেন দুইশ।

সাকিবের চেয়ে কম ম্যাচ খেলে দুইশ উইকেট ছুঁয়েছেন টেস্ট ইতিহাসের ৪৫ জন বোলার। তবে বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে তার চেয়ে দ্রুততম কেবল দুই জন। ৪৭ টেস্টে দুইশ ছুঁয়েছিলেন রঙ্গনা হেরাথ, ৫১ টেস্টে বিষেন সিং বেদি।

২০০ উইকেট ও ৩ হাজার রানের ডাবলে দ্রুততম:

ক্রিকেটার

টেস্ট

সাকিব আল হাসান

৫৪

ইয়ান বোথাম

৫৫

ক্রিস কেয়ার্নস

৫৮

অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ

৬৯

কপিল দেব

৭৩

ইমরান খান

৭৫

গ্যারি সোবার্স

৮০

রিচার্ড হ্যাডলি

৮৩

শন পোলক

৮৭

ড্যানিয়েল ভেটোরি

৮৯

জ্যাক ক্যালিস

১০২

চামিন্দা ভাস

১০৮

স্টুয়ার্ট ব্রড

১২১

শেন ওয়ার্ন

১৪২