প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ ৩১৫/৮
চা-বিরতির পর শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ছোবলে ১৩ রানে চার নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে এলোমেলো হয়ে পড়া বাংলাদেশের অলআউট হওয়াটা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। তবে লোয়ার অর্ডারের দৃঢ়তায় দিন কাটিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা।
প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩১৫/৮। জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা নাঈম ২৪ ও তাইজুল ৩২ রানে ব্যাট করছেন। অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেটে গড়েছেন ৫৬ রানের জুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৮৮ ওভারে ৩১৫/৮ (ইমরুল ৪৪, সৌম্য ০, মুমিনুল ১২০, মিঠুন ২০, সাকিব ৩৪, মুশফিক ৪, মাহমুদউল্লাহ ৩, মিরাজ ২২, নাঈম ২৪*, তাইজুল ৩২*; রোচ ১৫-২-৫৫-১, গ্যাব্রিয়েল ১৮-২-৬৯-৪, চেইস ১১-০-৪২-০, ওয়ারিক্যান ২১-৬-৬২-২, বিশু ১৫-০-৬০-১, ব্র্যাথওয়েট ৮-১-১৯-০)
নাঈম-তাইজুল জুটিতে পঞ্চাশ
লোয়ার অর্ডারে দারুণ দৃঢ়তা দেখালেন অভিষিক্ত নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম। নবম উইকেটে গড়লেন অর্ধশত রানের জুটি।
৮৬ বলে পঞ্চাশে যায় প্রতিরোধ গড়া জুটির রান। বাঁহাতি তাইজুল জুটিতে অগ্রণী। তাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন নিজের প্রথম অন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা নাঈম।
বাংলাদেশের তিনশ
১৩ রানের মধ্যে মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসানের বিদায়ের পর তিনশ রান মনে হচ্ছিল অনেক দূরের পথ। টেলএন্ডারদের দৃঢ়তায় সেই রান ছুঁয়ে ফেললো বাংলাদেশ।
২৩৫ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশ ৮ উইকেটে গেল তিনশ রানে।
৮৩তম ওভার শেষে স্বাগতিকদের স্কোর ৩০০/৮। অভিষিক্ত নাঈম হাসান ২১ ও তাইজুল ইসলাম ২২ রানে ব্যাট করছেন। নবম উইকেটে দুই জনে গড়েছেন ৪১ রানের জুটি।
আবারও রিভিউতে রক্ষা তাইজুলের
আবার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন তাইজুল ইসলাম। এবারও বোলার ছিলেন দেবেন্দ্র বিশু।
লেগ স্পিনারের বল পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন তাইজুল। ব্যাটে খেলতে পারেননি। স্পিন করে প্যাডে লাগলে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। নাঈম হাসানের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যেত বল। পাল্টায় সিদ্ধান্ত। টিকে যান ১৩ রানে ব্যাট করা তাইজুল।
রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন তাইজুল
আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন তাইজুল ইসলাম।
লেগ স্পিনার দেবেন্দ্র বিশুর বলে সুইপ করেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ব্যাটে লাগলেও আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়ে আউট দেন তাকে। সাথে সাথেই রিভিউ নেন তাইজুল। আল্ট্রাএজে ব্যাট স্পর্শের প্রমাণ মেলায় পাল্টায় সিদ্ধান্ত। সে সময় শূন্য রানে ছিলেন তাইজুল।
পারলেন না মিরাজ
গ্যাব্রিয়েল-রোচের পেস সামলে মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হলেন জোমেল ওয়ারিক্যানের বাঁহাতি স্পিনে।
লেগ স্টাম্পে পিচ করা বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু বলের পিচ পর্যন্ত যেতে পারেননি লাইন মিস করে। টার্ন করে বল আঘাত করে স্টাম্পে।
মিরাজের সম্ভাবনাময় ইনিংস থামল ২২ রানে। নাঈম হাসানের সঙ্গে জুটি ছিল ২৪ রানের। বাংলাদেশের রান ৮ উইকেটে ২৫৯।
গ্যাব্রিয়েলের দারুণ স্পেল
দারুণ এক স্পেলে গতি আর সুইংয়ে বাংলাদেশেকে কাঁপিয়ে দিলেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। ৬ ওভারে ২৬ রানে তুলে নিলেন চার উইকেট।
এক সময়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২২২/৩। তিন ওভারের মধ্যে গ্যাব্রিয়েল ফেরান সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক ও মিডল তিন ভরসা মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসানকে। ২৩৫ রানে স্বাগতিকরা হারায় ৭ উইকেট।
এক সময়ে চারশ রানে চোখ রাখা বাংলাদেশের জন্য তিনশ রানই এখন দূরের পথ।
গ্যাব্রিয়েলের চতুর্থ শিকার সাকিব
টিকলেন না মাহমুদউল্লাহ
রিভিউ নিয়ে মুশফিককে ফেরাল উইন্ডিজ
মুমিনুলকে থামালেন গ্যাব্রিয়েল
সেঞ্চুরিতে পৌঁছানোর পর উইকেট ছুড়ে এলেন মুমিনুল হক। বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে কট বিহাইন্ড করে ম্যাচে নিজের প্রথম উইকেট নিলেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।
অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে তাড়া করতে গিয়ে ঠিক মতো খেলতে পারেননি মুমিনুল। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে সহজ ক্যাচ যায় কিপার শেন ডাওরিচের কাছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া মুমিনুল ১৬৭ বলে ১০ চার ও এক ছক্কায় ফিরেন ১২০ রান করে। ২২২ রানে চতুর্থ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী গত টেস্টেই ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকুর রহিম।
মুমিনুলের ব্যাটে আরেকটি ভালো সেশন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের সিরিজে চার ইনিংসে মুমিনুল করেছিলেন ১, ০, ০ ও ১৫ রান। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান নিজের আঙিনায় ভোগাচ্ছেন সফরকারীদের, তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। দিনের চতুর্থ বলে ক্রিজে আসা মুমিনুলের দাপুটে ব্যাটিংয়ে টানা দুই সেশনে একশর বেশি রান তুলেছে বাংলাদেশ।
চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ২১৬/৩। আত্মঘাতী মোহাম্মদ মিঠুনের উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় সেশনে ১১১ যোগ করেছে স্বাগতিকরা।
মুমিনুল ১১৬ ও সাকিব আল হাসান ২৭ রানে ব্যাট করছেন। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে এরই মধ্যে গড়েছেন ৬৩ রানের জুটি।
মুমিনুল-সাকিবের জুটিতে পঞ্চাশ
মুমিনুল হক ও সাকিব আল হাসান চতুর্থ উইকেটে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি। দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের দাপুটে ব্যাটিংয়ে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
৫৮ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে জুটির রান। জুটিতে অগ্রণী এরই মাঝে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মুমিনুল। তাকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন দলে ফেরা সাকিব।
দারুণ সেঞ্চুরিতে তামিমের পাশে মুমিনুল
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পঞ্চাশ ছুঁতে পারলে সেঞ্চুরি করার অভ্যাস ধরে রাখলেন মুমিনুল হক। ষষ্ঠবারের মতো চট্টগ্রামের এই মাঠে ফিফটিকে নিয়ে গেলেন তিন অঙ্কে। ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরিতে বসলেন বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি শতকের রেকর্ডধারী তামিম ইকবালের পাশে।
দেবেন্দ্র বিশুকে ছক্কায় উড়িয়ে ৯৮ রানে পৌঁছান মুমিনুল। রোস্টন চেইসের পরের ওভারে স্ট্রাইক পেয়ে পয়েন্ট নিয়ে চার হাঁকিয়ে ১৩৫ বলে পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে।
চলতি বছরে এটি বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের চতুর্থ সেঞ্চুরি। তিন অঙ্ক ছুঁয়ে চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির তালিকার শীর্ষে বসলেন বিরাট কোহলির পাশে।
আত্মঘাতী মিঠুন
পানি পানের বিরতির পর প্রথম ওভার। জুটির রান পঞ্চাশ ছোঁয়ার অপেক্ষায়। হুট করেই নিজেকে হারিয়ে ফেললেন মিঠুন। এমন এক শট খেলে আউট হলেন, টেস্ট ক্রিকেটে যেটি যে কোনো পরিস্থিতিতে অপরাধের সামিল।
লেগ স্টাম্পে পিচ করে টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া দেবেন্দ্র বিশুর বলে স্পিনের বিপক্ষে স্লগ করলেন মিঠুন। যেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটের স্লগ ওভারের খেলা চলছে! বল থাকল সেখানেই, উঠল আকাশে। কিপার শেন ডাওরিচ নিলেন ক্যাচ।
২০ রানে ফিরলেন মিঠুন। ভাঙল ৪৮ রানের জুটি। বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৫৩।
জীবন পেলেন মুমিনুল
দেবেন্দ্র বিশু দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই পেতে পারতেন উইকেট। লেগ স্পিনারের বলে মুমিনুল হককে জীবন দিয়েছেন কিপার শেন ডাওরিচ।
অফ স্টাম্পের বাইরের বল পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মুমিনুল। ঠিক মতো খেলতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়ার পথে তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ক্যাচ যায় ডাওরিচের কাছে। কিন্তু গ্লাভসে জমাতে পারেননি এই কিপার। সে সময় ৬৭ রানে ব্যাট করছিলেন মুমিনুল।
প্রথম সেশনে দুই ওপেনারের বিদায়
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম সকালে দুই ওপেনারকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা স্বাগতিকদের এগিয়ে নিচ্ছেন মুমিনুল হক।
লাঞ্চে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ১০৫/২। দাপুটে ব্যাটিংয়ে মুমিনুল ৫৩ রানে অপরাজিত।
এক বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ সৌম্য সরকার। কেমার রোচের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে। ৩ রানে জীবন পাওয়া আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস ১৬ রানে বেঁচে যান ‘নো’ বলের কল্যাণ। শেষ পর্যন্ত লাঞ্চের আগে আউট হন জোমেল ওয়ারিক্যানের সাদামাটা এক বলে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিন-পেস কিছুও ভোগাতে পারেনি মুমিনুলকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গত জুলাইয়ে চার ইনিংসে মাত্র ১৬ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান প্রথম সেশনে তুলে নিয়েছেন ফিফটি।
আউট হতে হতে কয়েকবার বেঁচে যাওয়া ইমরুল শেষ পর্যন্ত আউট হলেন আপাত নিরীহ এক বলে, লাঞ্চের ঠিক আগে।
বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানের বলটি ছিল একটু খাটো লেংথের। খানিকটা নিচু হয়ে স্পিন করে বেরিয়ে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের দিকে। ইমরুল পুশ করলেন শক্ত হাতে, শর্ট লেগ ফিল্ডারের জন্য হলো ক্যাচিং প্র্যাকটিস। সুনিল আমব্রিসের হাতে লেগে বল জমল মুঠোয়।
ইমরুলের আউট দিয়েই এল লাঞ্চের ঘোষণা। ৪৪ রানে ফিরলেন নড়বড়ে ইমরুল। ভাঙল ১০৪ রানের জুটি। বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১০৫।
মুমিনুল-ইমরুলের জুটিতে একশ
১ রানে শুরুর জুটি ভাঙার পর দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুল হক ও ইমরুল কায়েস গড়েছেন শতরানের জুটি।
দ্বিতীয় উইকেট জুটির পঞ্চাশ এসেছিল ৭৯ বলে। রান তিন অঙ্কে গেছে ১৫৭ বলে। জুটিতে অগ্রণী এরই মধ্যে ফিফটি পেয়ে যাওয়া মুমিনুল।
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হক চট্টগ্রাম টেস্টে দাঁড়িয়ে গেছেন। সাবলীল ব্যাটিংয়ে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ ফিফটি।
৬৯ বলে ৭ চারে পঞ্চাশে পৌঁছান মুমিনুল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এটি তার ষষ্ঠ পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। আগের পাঁচবারই ছুঁয়েছিলেন তিন অঙ্ক।
উইকেটের চারপাশে শট খেলেছেন মুমিনুল। সফরকারীদের পেস কিংবা স্পিন কিছুই ভাবাতে পারেনি তাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভুগেছিলেন শর্ট বলে। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও কেমার রোচের গতিময় বাউন্স এবার সামলেছেন দারুণ দক্ষতায়।
‘নো’ বলে রক্ষা নড়বড়ে ইমরুলের
সবশেষ ২০ ইনিংস নেই ফিফটি, সবশেষ ৩০ ইনিংসে নেই সেঞ্চুরি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে নিজের দাবি জোরেশোরে জানিয়ে বাইরে বসে আছেন সাদমান ইসলাম। পরের টেস্টে জায়গা হারানোর শঙ্কায় থাকা ইমরুল কায়েসের ব্যাটে তবু নেই দায়িত্বশীলতার ছাপ। একবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া বাঁহাতি এই ওপেনার রক্ষা পেলেন ‘নো’ বলের কল্যাণে।
প্রথম ঘণ্টার পর দুই প্রান্তেই বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। দুই পেসারের জায়গায় বোলিংয়ে আসেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার রোস্টন চেইস ও বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যান।
কঠিন সময় পার করে দেওয়া ইমরুল ওয়ারিক্যানের দ্বিতীয় বল উড়াতে চেয়েছিলেন দৃষ্টিকটু স্লগ সুইপে। অফ স্টাম্পের বলে ঠিক মতো টাইমিং করতে পারেননি ইমরুল। ডিপ স্কয়ারে ক্যাচ মুঠোয় নেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। বাঁহাতি স্পিনার ‘নো’ বল করায় বেঁচে যান তিনি। সে সময় ব্যাট করছিলেন ১৬ রানে।
প্রথম ঘণ্টায় বাংলাদেশের ৪৪
গত জুলাইয়ে দুই দলের সবশেষ টেস্ট সিরিজে প্রথম সকালে মাত্র ৪৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার প্রথম ঘণ্টায় সেই রান ছাড়িয়ে গেল সাকিব আল হাসানের দল।
প্রথম পানি বিরতিতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৪৪/১। ইমরুর কায়েস ১৫ ও মুমিনুল হক ২৬ রানে ব্যাট করছেন।
প্রথম ওভারে সৌম্য সরকারের বিদায়ের পর দুই বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান টানছেন দলকে। ইমরুল, মুমিনুলের ব্যাটে যেন ফুটে উঠেছে দুই জনের সাম্প্রতিক ফর্মের ছাপ। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়া মুমিনুল খেলছেন সাবলীল। অন্য দিকে ভীষণ নড়বড়ে সবশেষ ২০ ইনিংসে কোনো ফিফটি না পাওয়া ইমরুল।
জীবন পেলেন ইমরুল
টেস্ট দলে জায়গা নড়বড়ে হয়ে যাওয়া ইমরুল কায়েস জীবন পেলেন। দ্বিতীয় স্লিপে বাঁহাতি এই ওপেনারের ক্যাচ ছাড়লেন রোস্টন চেইস।
কেমার রোচের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা বল পুশ করতে চেয়েছিলেন ইমরুল। ব্যাটের কানায় লেগে আসা সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি চেইস। সে সময় ৩ রানে ব্যাট করছিলেন ইমরুল।
এক বছর পর টেস্টে খেলতে নেমে সৌম্য সরকার টিকলেন মাত্র দুই বল। প্রথম ওভারে স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেন কেমার রোচ।
রাউন্ড দা উইকেট বোলিং করা ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন সৌম্য। সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বল বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপার শেন ডাওরিচের গ্লাভসে।
শূন্য রানে ফিরেন সৌম্য। ১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ক্রিজে ইমরুল কায়েসের সঙ্গী মুমিনুল হক।
দুই পেসার, দুই স্পিনার নিয়ে উইন্ডিজ
বাংলাদেশ খেলছে চার স্পিনার ও এক পেসার নিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ সাজিয়েছে দুই জন করে পেসার ও স্পিনার দিয়ে।
স্পিন আক্রমণে লেগ স্পিনার দেবেন্দ্র বিশুর সঙ্গী বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যান। দলের দুই পেসার হলেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও কেমার রোচ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট, কাইরন পাওয়েল, শেই হোপ, সুনিল আমব্রিস, রোস্টন চেইস, শিমরন হেটমায়ার, শেন ডাওরিচ, দেবেন্দ্র বিশু, জোমেল ওয়ারিক্যান, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, কেমার রোচ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ টেস্টে খেলা বাংলাদেশ দলে তিনটি পরিবর্তন। অভিষেক হচ্ছে নাঈম হাসানের। দলে ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও ওপেনার সৌম্য সরকার।
সেই টেস্টে খেলা লিটন দাস নেই স্কোয়াডেই। একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও অলরাউন্ডার আরিফুল হক।
চার স্পিনার, এক পেসার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। একমাত্র পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
অফ স্পিনার নাঈম ও বাঁহাতি স্পিনার সাকিবের সঙ্গে স্পিন আক্রমণে আছেন তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান।
দ্বিতীয় মেয়াদে অধিনায়ক হওয়ার পর দেশের মাটিতে নিজের প্রথম টেস্টে টস জিতলেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিলেন ব্যাটিং।
উইন্ডিজকে যন্ত্রণা ফিরিয়ে দেওয়ার সিরিজ
৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার স্বাদ কাঁটা হয়ে বিদ্ধ করে এখনও। গতি আর বাউন্সে নাকাল হওয়ার স্মৃতি বেশ তরতাজা। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যে দুঃসহ অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেই হিসাব চুকানোর সুযোগ দ্রুতই পেয়েছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের চাওয়া, নিজেদের কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে তার দল ক্যারিবিয়ানদের ফিরিয়ে দিবে একই রকম যন্ত্রণা।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি চট্টগ্রামে শুরু বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায়।
আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের তলানির দিকে দুই দলের অবস্থান পিঠাপিঠি। শক্তি-সামর্থ্যের ব্যবধানও খুব একটা নেই। কিন্তু সবশেষ মুখোমুখি লড়াইয়ে স্রেফ উড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছিল কন্ডিশন। নিজেদের শক্তির জায়গা পেস বোলিংকে কাজে লাগাতে গতিময় ও বাউন্সি উইকেট বানিয়ে ক্যারিবিয়ানরা গুঁড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। দুটি টেস্টই শেষ হয়েছিল তিন দিনে।
এবার বাস্তবতা ঠিক উল্টো। কন্ডিশন চ্যালেঞ্জ জানাবে ক্যারিবিয়ানদের। টেস্ট শুরুর আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব ইঙ্গিত দিয়েছেন, উইকেটে যথেষ্টই ঘুরবে বল। এই স্পিন মঞ্চে ক্যারিবিয়ানদের কুপোকাত করবে বাংলাদেশ, আশা অধিনায়কের।
স্পিনের জবাব পেস দিয়ে দেবে উইন্ডিজ
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট নিশ্চিত, চট্টগ্রাম টেস্টে খেলা হবে মন্থর, টার্নিং উইকেটে। বাংলাদেশ তাদের চেপে ধরার চেষ্টা করবে স্পিন দিয়ে। এর জবাব ঠিক করে রেখেছে সফরকারীরা। মন্থর উইকেটেও তাদের বাজি হবে শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, কেমার রোচদের পেস।
গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই দলের সবশেষ টেস্ট সিরিজে দাপট দেখিয়েছিল স্বাগতিক পেসাররা। সহায়ক পিচে সিরিজে ৩৮ উইকেট নিয়েছিল পেসাররা। অফ স্পিনার রোস্টন চেইস নিয়েছিলেন অন্য দুটি উইকেট।