রান উৎসবের মাঠে এবার অন্য চিত্র?

পাঁচ দিনে তিন ইনিংসও শেষ হয়নি পুরোপুরি। মোট রান হয়েছিল দেড় হাজারের বেশি। ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি ছিল ছয়টি, ফিফটি আরও ছয়জনের। পাঁচ দিন জুড়েই ‘অতিরিক্ত ব্যাটিং বান্ধব’ ছিল বলে আইসিসি দিয়েছিল একটি ডিমেরিট পয়েন্ট। যে মাঠের সবশেষ টেস্টের তথ্য এসব, সেই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই এবার দেখা যেতে পারে উল্টো ছবি। টেস্টের আগের দিন উইকেট দেখে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানালেন, বড় রান এখানে নাও দেখা যেতে পারে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2018, 08:48 AM
Updated : 21 Nov 2018, 01:31 PM

টেস্ট ক্রিকেটে একযুগের পথচলায় এই মাঠের উইকেট বেশিরভাগ সময়ই কথা বলেছে ব্যাটসম্যানদের হয়ে। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই মাঠের টেস্ট অভিষেক থেকে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের মাটিতে পাঁচশ ছোঁয়া ১৯টি স্কোরের ৯টিই হয়েছে এই মাঠে। অনেক সময়ই দেখা গেছে, চতুর্থ দিন বা শেষ দিনে উইকেট ভাঙার বদলে আরও ভালো হয়ে গেছে ব্যাটিংয়ের জন্য।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রানের দুই টেস্টই এই মাঠের। সবশেষ টেস্টে গত ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ লড়াইয়ে মাত্র ২৪ উইকেটের পাশে রান উঠেছিল ১ হাজার ৫৩৩। তার আগে ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখানে ২৭ উইকেটে রান উঠেছিল ১ হাজার ৫৮৯। ওই টেস্টের পঞ্চম দিন শেষে তখনকার শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস বলেছিলেন, “চাইলে এই উইকেটেই আরেকটি টেস্ট খেলা যাবে।”

তবে গত কয়েক বছরে দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি বদলের প্রভাবও এই মাঠে পড়েছিল। ঘরের মাঠে টার্নিং উইকেট বানানোর যে পথে হেঁটেছিল বাংলাদেশ ২০১৬ সাল থেকে, সেটির শুরু ছিল এখানেই। সেবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট এবং গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে উইকেট ছিল দারুণ স্পিন সহায়ক।

টার্নিং উইকেট বানিয়েও অবশ্য ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে হেরেছিল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ান অফ স্পিনার নাথান লায়ন একাই নিয়েছিলেন ম্যাচে ১৩ উইকেট। সবশেষ টেস্টে তাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং উইকেটের কৌশলে ফিরে বাংলাদেশ পেরেছিল ড্র করতে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আবার স্পিন সহায়ক উইকেট বেছে নিচ্ছে বাংলাদেশ, টেস্টের আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবের কথায় তেমনটিই ইঙ্গিত।

“আমার মনে হয় কিউরেটররা ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করছেন (গত টেস্টের উইকেট থেকে)। আমার কাছে দেখে মনে হচ্ছে, উইকেটে বল ঘুরতে পারে। আসলে দেখে খুব একটা অনুমান করা যায় না। অনেক সময় যতদিন যায়, আস্তে আস্তে আরও ভালো হতে থাকে উইকেট। আশা করি এবার তেমন কিছু হবে না। ভালো একটা টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য যেমন উইকেট দরকার তেমন উইকেটই হবে।”

বুধবার উইকেট দেখে প্রায় একইরকম ভাবনার কথা জানালেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটও।

“উইকেট দেখেছি। যেমনটি প্রত্যাশা ছিল, তেমনই উইকেট। মনে হলো মন্থর, একটু শুষ্ক। প্রথম ঘণ্টায় একটু মুভমেন্ট থাকতে পারে। সব মিলিয়ে আমার মনে হয়, প্রথাগত বাংলাদেশ উইকেটই।”

শেষ পর্যন্ত উইকেট যেমনই হোক, সাকিবের মতে, প্রথম ইনিংসের রানই হয়ে উঠবে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক।

“হাইস্কোরিং ম্যাচ নাও হতে পারে (এবার)। মোটামুটি উইকেটও যদি হয়, তাহলে তিনশ প্লাস রান করতে পারলে খুবই ভালো। আর যদি আরও ভালো ব্যাটিং উইকেট হয়, ৪০০-৫০০ যদি করতে হবে, বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে। করতে পারলে তা আমাদের জন্য বাড়তি সুবিধা হবে প্রথম ইনিংসে। সবারই চেষ্টা করতে হবে ইনিংস বড় করার, সেটা ব্যক্তিগত দিক থেকে হোক আর দলীয় দিক থেকে।”