প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করে টেস্ট দলে সাদমান

বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ছিল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। কিন্তু সেটি ফেলে কোচ স্টিভ রোডস সোমবার সকাল থেকেই এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে। উদ্দেশ্য, প্রস্তুতি ম্যাচে সাদমান ইসলামের ব্যাটিং দেখা। দেখতে এসে আটকে গেলেন কোচ, সাদমান যে ব্যাট করলেন প্রায় দুই সেশন! ব্যাটিং দেখে কোচ দিলেন সবুজ সঙ্কেত। নির্বাচকরাও সন্তুষ্ট। সন্ধ্যায় এলো ঘোষণা, টেস্ট দলে যোগ করা হয়েছে সাদমানকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2018, 12:04 PM
Updated : 19 Nov 2018, 02:29 PM

প্রাথমিক দলে আগে জায়গা পেলেও প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পেলেন সাদমান। তরুণ বাঁহাতি ওপেনারকে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের বাংলাদেশ স্কোয়াড হলো ১৪ জনের। প্রস্তুতি ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে বিসিবি একাদশের হয়ে সাদমান খেলেছেন ৭৩ রানের ইনিংস।

তবে শুধু এই ম্যাচের পারফরম্যান্সই নয়, গত কিছুদিনে মোটামুটি সব পর্যায়ে পারফর্ম করেছেন সাদমান। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় লিগে সর্বোচ্চ রান স্কোরার তিনি, ৬৪.৮০ গড়ে করেছেন ৬৪৮ রান। দুইয়ে থাকা তুষার ইমরানের চেয়ে করেছেন ১৩০ রান বেশি। লিগে এবার ১ হাজার ১১৫ বল খেলেছেন, ১ হাজার বলও খেলতে পারেনি আর কেউ।

এবার লিগের প্রথম ম্যাচে স্বাদ পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম দেড়শ রানের। সেই ১৫৭ রান ছাড়িয়ে পরের ম্যাচেই করেছিলেন ১৮৯। 

বয়সভিত্তিক বিভিন্ন পর্যায় পার হয়ে জাতীয় দলে এলেন সাদমান। ২০১৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ১০১.৫০ গড়ে ৪০৬ রান করে হয়েছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী। সেই টুর্নামেন্টে রানের তালিকায় দুই ও তিনে থাকা ইমাম-উল-হক ও এইডেন মারক্রাম এখন পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা দলের নিয়মিত মুখ।

বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকেই বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের জন্য বেশি মানানসই মনে করা হয়েছে তার ব্যাটিং। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪২ ম্যাচ খেলে ৭ সেঞ্চুরিতে ৩ হাজার ২৩ রান করেছেন ৪৬.৫০ গড়ে।

ঘরোয়া ক্রিকেট ছাড়াও গত কিছুদিনে বাংলাদেশ ‘এ’ দল ও হাই পারফরম্যান্স স্কোয়াডে তিনি ছিলেন নিয়মিত মুখ। গত বছরের অক্টোবরে আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিলেটে কঠিন পরিস্থিতিতে করেছিলেন সেঞ্চুরি।

সব মিলিয়ে তার দিকে নির্বাচকদের নজর ছিলই। গতিময় বোলারদের বিপক্ষে সামর্থ্যটা নিয়ে অবশ্য একটু সংশয় ছিল। তাই প্রস্তুতি ম্যাচে এই ২৩ বছর বয়সীকে পরখ করতে চেয়েছিলেন তারা। আগ্রহ ছিল টিম ম্যানেজমেন্টেরও।

সোমবার কেমার রোচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, শারমন লুইসদের সামলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৭৩ করেন সাদমান। বাউন্সার যা এসেছে, সামলে নিয়েছেন সাবলীলতায়। উইকেট যদিও ছিল মন্থর। সাদমানের কাছে যা চাওয়ার ছিল, তা পূরণ করতে পেরেছেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন এই ম্যাচে মাঠে থাকা নির্বাচক হাবিবুল বাশার।

“আগেই আমরা বলেছিলাম, প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে দু-একজনের জায়গা হতে পারে টেস্ট দলে। সাদমান অনেক দিন থেকেই আমাদের নজরে আছে। সব পর্যায়েই পারফর্ম করেছে। তার পরও প্রস্তুতি ম্যাচে আমরা দেখতে চেয়েছিলাম যে রোচ-গ্যাব্রিয়েলদের কেমন খেলে। কোচও ওর খেলা দেখতেই আজকে এই মাঠে ছিলেন। যেভাবে খেলেছে সে, সেটা আমাদের মনে ধরেছে।”

“আমাদের মনে হয়েছে, এখন মোটামুটি তৈরি সে। আসলেই কতটা তৈরি সেটা তো বোঝা যাবে খেলার সুযোগ পেলে। তবে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে যেভাবে এসেছে, ওকে নিয়ে আমরা আশাবাদী।”

প্রথম ঘোষিত ১৩ জনের দলে ওপেনার ছিলেন কেবল দুইজন, ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। সবশেষ ২০ ইনিংসে ফিফটি না থাকলেও ইমরুলকে রাখা হয়েছে অভিজ্ঞতার বিবেচনায়, যেহেতু আরেক অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল চোটের কারণে বাইরে। টেস্ট দলে ফেরার পর সৌম্য প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেছে ৭৮ রানের ইনিংস। এবার সাদমানও যোগ হলেন। চট্টগ্রাম টেস্টের সম্ভাব্য দুই ওপেনারকে নিয়ে তাই থাকবে কৌতুহল।