শেষ বেলায় কাজ এগিয়ে রাখল বাংলাদেশ

ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করলেন মোহাম্মদ মিঠুন। সাড়ে আট বছর পর টেস্টে সেঞ্চুরি পেলেন মাহমুদউল্লাহ। জিম্বাবুয়েকে ফলো অন না করিয়ে নড়বড়ে শুরুর পর সফরকারীদের তাই প্রায় অসম্ভব লক্ষ্য দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। শুরুতে দুটি সুযোগ হাতছাড়া করা স্বাগতিকরা শেষ বেলায় দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে এগিয়ে রেখেছে কাজ।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2018, 03:37 AM
Updated : 14 Nov 2018, 10:56 AM

শেষ দিনে বাংলাদেশের চাই ৮ উইকেট

মিরপুর টেস্ট জিতে সমতায় সিরিজ শেষ করতে পঞ্চম ও শেষ দিনে বাংলাদেশের চাই জিম্বাবুয়ের শেষ ৮ উইকেট। টানা দ্বিতীয় জয় পেতে সফরকারীদের চাই আরও ৩৬৭ রান।

চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সফরকারীদের স্কোর ৭৬/২। ব্রেন্ডন টেইলর ৪ ও শন উইলিয়ামস ২ রানে ব্যাট করছেন।

উইকেটে ভাঙতে শুরু করেছে। চতুর্থ দিনে বাড়তি সহায়তা পেয়েছেন বোলাররা। উইকেট যেভাবে বোলারদের সাহায্য করতে শুরু করেছে তাতে শেষ দিনে ৩৬৭ রান করা হবে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। ৮ উইকেট নিয়ে পুরো একটি দিন কাটিয়ে দেওয়াও সহজ হবে না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫২২/৭ (ইনিংস ঘোষণা)

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩০৪

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৫৪ ওভারে ২২৪/৬ (ইনিংস ঘোষণা) (লিটন ৬, ইমরুল ৩, মুমিনুল ১, মিঠুন ৬৭, মুশফিক ৭, মাহমুদউল্লাহ ১০১*, আরিফুল ৫, মিরাজ ২৭*; জার্ভিস ১১-২-২৭-২, টিরিপানো ১১-১-৩১-২, উইলিয়ামস ১৬-২-৬৯-১, রাজা ৭-০-৩৯-১, মাভুটা ৯-০-৫২-০)।

জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৪৩) ৩০ ওভারে ৭৬/২ (মাসাকাদজা ২৫, চারি ৪৩, টেইলর ৪*, উইলিয়ামস ২*; মুস্তাফিজ ৩-১-২-০, তাইজুল ১৩-২-৩৪-১, খালেদ ৪-১-১৫-০, মিরাজ ৭-২-১৬-১, আরিফুল ৩-১-৭-০)

তাইজুলই ফেরালেন চারিকে

শূন্য রানে তাইজুল ইসলামের বলে জীবন পেয়েছিলেন ব্রায়ান চারি। ম্যাচে দ্বিতীয় ফিফটির আশা জাগানো ওপেনার ফিরলেন সেই বাঁহাতি স্পিনারের বলেই।

অনেকক্ষণ ধরে সুইপ করে যাচ্ছিলেন চারি। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে স্পিন করে একটু ভেতরে ঢোকা বলে সেই চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যাটে খেলতে পারেননি তিনি। এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদনে একটু দেরিতে সাড়া দেন আম্পায়ার।

একটু সময় নিয়ে রিভিউ নেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার। আল্ট্রাএজে মেলেনি বলে ব্যাট স্পর্শের প্রমাণ। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় বল লাগতো অফ-মিডল স্টাম্পে।

৪৩ রান করে ফিরেন চারি। ৭০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ক্রিজে প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গী সিলেট টেস্টের সেরা খেলোয়াড় শন উইলিয়মস।

শুরুর জুটির প্রতিরোধ ভাঙলেন মিরাজ

দুই ওপেনারকে জীবন দেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ অবশেষে ভাঙলেন জিম্বাবুয়ের শুরুর জুটি। অফ স্পিনারের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা।

পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। ঠিক মতো পারেননি। ব্যাটর কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে সহজ ক্যাচ যায় মুমিনুল হকের কাছে।

৬৮ বলে ২৫ রান করেন মাসাকাদজা। ৬৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ক্রিজে ব্রায়ান চারির সঙ্গী প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ব্রেন্ডন টেইলর। জয়ের জন্য তাদের চাই আরও ৩৭৫ রান।

মাসাকাদজা-চারির জুটিতে ফিফটি

একবার করে জীবন পাওয়া হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান চারি টানছেন জিম্বাবুয়েকে। শুরুর জুটিতে দুই জনে গড়েছেন পঞ্চাশ রানে জুটি।

আরিফুল হকের বলে চারির সিঙ্গেলে ১০২ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে সফরকারীদের উদ্বোধনী জুটির রান। ১৭ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৫০/২। মাসাকাদজা ২০ ও চারি ২৯ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য আরও ৩৯৩ রান চাই সফরকারীদের।

এবার মাসাকাদজাকে জীবন দিলেন মিরাজ

নয় ওভারের মধ্যে ফিরে যেতে পারতেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার। কিন্তু ব্রায়ান চারির পর হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকেও জীবন দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

নবম ওভারে অভিষিক্ত পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে গালিতে ক্যাচ দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি মিরাজ। সে সময় ৫ রানে ব্যাট করছিলেন মাসাকাদজা। এখনও কোনো উইকেট না পাওয়া পাওয়া খালেদের বলে প্রথম ইনিংসে হাতছাড়া হয়েছিল দুটি সুযোগ।

শূন্য রানে চারিকে জীবন দিলেন মিরাজ

শুরুতেই হাতছাড়া হল সুযোগ। দ্বিতীয় ওভারে তাইজুল ইসলামের বলে স্লিপে ব্রায়ান চারিকে জীবন দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। 

ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল ঝাঁপ দিয়ে নাগালে পেয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই ফিল্ডার। কিন্তু ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি মিরাজ। সে সময় শূন্য রানে ছিলেন প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা চারি।

জিম্বাবুয়ের সামনে ৪৪৩ রানের লক্ষ্য

মিরপুর টেস্টে জয়ের জন্য ৪৪৩ রানের কঠিন লক্ষ্য পেয়েছে জিম্বাবুয়ে।

সিলেট টেস্টে জিতে সিরিজে এগিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট বাঁচাতে কাটিয়ে দিতে হবে চার সেশন।  

ঢাকা টেস্ট জিততে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে হবে জিম্বাবুয়েকে। টেস্টে সর্বোচ্চ ৪১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের কৃতিত্ব ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিল তারা।

শের-ই-বাংলায় সর্বোচ্চ ২০৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ইংল্যান্ডের। ২০১০ সালে স্বাগতিকদের হারিয়ে এই রেকর্ড গড়েছিল তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫২২/৭ (ইনিংস ঘোষণা)

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩০৪

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৫৪ ওভারে ২২৪/৬ (ইনিংস ঘোষণা) (লিটন ৬, ইমরুল ৩, মুমিনুল ১, মিঠুন ৬৭, মুশফিক ৭, মাহমুদউল্লাহ ১০১*, আরিফুল ৫, মিরাজ ২৭*; জার্ভিস ১১-২-২৭-২, টিরিপানো ১১-১-৩১-২, উইলিয়ামস ১৬-২-৬৯-১, রাজা ৭-০-৩৯-১, মাভুটা ৯-০-৫২-০)।

সাড়ে ৮ বছর পর মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি

দলে নড়বড়ে হয়ে যাওয়া জায়গাটা সেঞ্চুরিতে দৃঢ় করে নিলেন মাহমুদউল্লাহ। সাড়ে আট বছরের বেশি সময় পর টেস্টে খেললেন তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংস।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্যামিল্টনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তারপর থেকে আশির ঘরে যেতে পারেন কেবল একবার। এই বছরের শুরুতে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংস খেলার পর টেস্টে সময় খুব বাজে কাটছিল এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের।

মিরপুর টেস্টের আগে সবশেষ নয় ইনিংসে পাননি কোনো ফিফটি। এই সময়ে তিনটি ডাকসহ পাঁচ ইনিংসে ফিরেন এক অঙ্কের ঘরে। 

শের-ই-বাংলায় প্রথম ইনিংসে থিতু হয়ে ফেরা মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয় ইনিংসে সুযোগ হাতছাড়া করেননি। দলের ভীষন প্রয়োজনের সময় করেছেন সেঞ্চুরি। ১২২ বলে খেলা তার অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস গড়া চারটি চার ও দুটি ছক্কায়।

মাহমুদউল্লাহ-মিরাজ জুটিতে দ্রুত ফিফটি
 
মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ। সপ্তম উইকেটে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুই জনে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি। 
 
লেগ স্পিনার ব্রেন্ডন মাভুটাকে পুল করে ছক্কা হাঁকিয়ে ৪৬ বলে জুটির রান পঞ্চাশে নিয়ে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২০৪/৬। মাহমুদউল্লাহ ৮৭ ও মিরাজ ২১ রানে ব্যাট করছেন। স্বাগতিকরা এগিয়ে গেছে ৪২২ রানে। 

পারলেন না আরিফুল
 
দ্রুত রান তোলার জন্য দল তাকিয়ে ছিল আরিফুল হকের ব্যাটে। কিন্তু তিনি আউট হয়ে গেলেন দ্রুতই। 
 
বাঁহাতি স্পিনার শন উইলিয়ামসের লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলে সুইপ খেলছিলেন আরিফুল। ব্যাটে-বলে হয়নি। পিচের ক্ষতে পড়ে আরিফুলের পায়ের পেছন দিয়ে টার্ন করে বল লেগেছে স্টাম্পে।
 
৫ রানে ফিরলেন আরিফুল। বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৫১। দুই ইনিংস মিলিয়ে এগিয়ে ৩৬৯ রানে।

রানের তাড়ায় ফিরলেন মিঠুন
 
দ্রুত রান বাড়ানোর চেষ্টায় বিদায় নিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। পানি পানের বিরতির পর প্রথম বলেই সিকান্দার রাজাকে বিশাল ছক্কা মেরেছিলেন মিঠুন। পরের বলে একই চেষ্টা করতে গিয়ে বল উঠল আকাশে। ক্যাচ নিলেন কিপার রেজিস চাকাভা।
 
অভিষেক টেস্টে প্রথম ইনিংসে শূন্য রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে দলের ভীষণ প্রয়োজনের সময় মিঠুন করলেন ৬৭ রান। ১১০ বলের ইনিংসে ৪টি চার, ছক্কা ১টি। 
 
মিঠুনের বিদায়ে ভাঙল ১১৮ রানের জুটি। বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ১৪৩। লিড ৩৬১ রানের। 

১০ ইনিংস পর মাহমুদউল্লাহর ফিফটি
 
প্রথম ইনিংস থিতু হয়েও হাতছাড়া করেছিলেন সুযোগ। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের বিপদে দাঁড়িয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তুলে নিলেন ফিফটি। টেস্টে ১০ ইনিংস পর খেললেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। 
 
প্রথম ঘণ্টার পানি বিরতির পর প্রথম বলে মুশফিকুর রহিম আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসা মাহমুদউল্লাহ খেলছেন আস্থার সঙ্গে। ৭০ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় পঞ্চাশে পৌঁছান অধিনায়ক। 
 
৩৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৩৪/৪। মাহমুদউল্লাহ ৫২ ও মোহাম্মদ মিঠুন ৫৯ রানে ব্যাট করছেন। বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে ৩৫২ রানে।

মিঠুন-মাহমুদউল্লাহর জুটিতে শত রান 
 
মোহাম্মদ মিঠুন ও মাহমুদউল্লাহর জুটিতে বাড়ছে বাংলাদেশের লিড। দুই ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান পঞ্চম উইকেটে গড়েছেন শত রানের জুটি।  
 
এক ছন্দে এগিয়ে যাচ্ছেন মিঠুন-মাহমুদউল্লাহ। ৭১ বলে জুটির রান ছুঁয়েছিল পঞ্চাশ, তিন অঙ্কে যেতে লেগেছে ১৪০ বল। জুটিতে দুই জনের অবদানই সমান- ৪৭ করে।

অভিষেকে মিঠুনের ফিফটি
 
প্রথম ইনিংসে দৃষ্টিকটু শটে শূন্য রানে আউট হওয়া মোহাম্মদ মিঠুন দ্বিতীয় ইনিংসে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তুলে নিলেন ফিফটি। 
 
ডানহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান যখন ক্রিজে অসেন তখন দুই ওপেনারকে হারিয়ে ধুঁকছে বাংলাদেশ। ক্রিজে যাওয়ার পর দেখেন প্রথম ইনিংসের দুই নায়ক মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমের বিদায়। এবার আক্রমণাত্মক শট খেলে চাপ সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেননি মিঠুন। সময়ের দাবি মিটিয়ে সতর্ক ব্যাটিংয়ে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়েন অর্ধশত রানের জুটি।
 
৯১ বলে চারটি চারে ফিফটি স্পর্শ করেন মিঠুন। ৩৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১০৯/৪। মিঠুন ৫২ ও মাহমুদউল্লাহ ৩৪ রানে ব্যাট করছেন। বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ৩২৭ রানে।

প্রথম সেশনে বাংলাদেশের ৪ উইকেট
 
জিম্বাবুয়েকে ফলো অন না করানো বাংলাদেশ প্রথম সেশনে ভুগেছে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে ফিরে গেছেন ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম।  
 
লাঞ্চে যাওয়ার সময় স্বাগতিকদের স্কোর ৭৮/৪। মোহাম্মদ মিঠুন ৩৪ ও মাহমুদউল্লাহ ২৪ রানে ব্যাট করছেন। প্রথম ইনিংসে ২১৮ রানের লিড নেওয়া বাংলাদেশ এগিয়ে ২৯৬ রানে। 
 
প্রথম সেশনের দুই ঘণ্টায় বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল দুই রকম। প্রথম ঘণ্টায় ১২ ওভারে ২৫ রান যোগ করতে হারায় টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে। দ্বিতীয় ঘণ্টার প্রথম বলে মুশফিকুর রহিমকে হারানো দলটি ১৩ ওভারে যোগ করে ৫৩ রান।  
 
লিটন শুধু ভালো একটি বলে আউট হয়েছেন। বাকি তিন ব্যাটসম্যানই ছিলেন আত্মঘাতী। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়া অভিষিক্ত মিঠুন ও টেস্ট দলে জায়গা নড়বড়ে হয়ে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ খেলছেন দায়িত্ব নিয়ে। পেসারদের খেলছেন সতর্কতায়, রানের গতিতে দম দিতে লক্ষ্য করেছেন স্পিনারদের। 
 
জিম্বাবুয়ে ছড়িয়ে দিয়েছে ফিল্ডিং। শেষ দিকে সব সময় ৫/৬ জন ফিল্ডার ছিলেন সীমানায়। এক প্রান্তে পেসার রেখেছেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। দুই পেসার কাইল জার্ভিস ও ডোনাল্ড টিরিপানো নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।

মিঠুন-মাহমুদউল্লাহর জুটিতে ফিফটি
 
দ্রুত চার উইকেট হারানো বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়েছে মোহাম্মদ মিঠুন ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। পঞ্চম উইকেটে দুই ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি। 
 
কাইল জার্ভিসকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৭৩ বলে জুটির রান পঞ্চাশে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। জুটি পঞ্চাশ ছোঁয়ার সময় বাংলাদেশ এগিয়ে ২৯৩ রানে।

মুশফিকও আত্মঘাতী
 
দলের বিপর্যয় আরও বাড়িয়ে বিদায় নিলেন মুশফিকুর রহিমও। প্রথম ইনিংসের নায়ক এবার বাজে শটে বিদায় নিলেন ৭ রানেই।
 
পানি পানের বিরতির পর সেটি ছিল প্রথম বল। অফ স্টাম্পের বাইরে খানিকটা শর্ট বল করেছিলেন ডোনাল্ড টিরিপানো। মুশফিক খেললেন পুল শট, বল মাটিতে রাখার চেষ্টাই করলেন না। স্কয়ার লেগে ক্যাচ নিলেন ব্র্যান্ডন মাভুটা।
 
৪ উইকেটে বাংলাদেশের রান ২৫। বাংলাদেশ এগিয়ে ২৪৩ রানে।

দ্রুত ফিরলেন মুমিনুলও
 
বেশিক্ষণ টিকলেন না মুমিনুল হক। দুই ওপেনারের মতো দুই অঙ্কে যেতে পারেননি প্রথম ইনিংসের এই সেঞ্চুরিয়ানও। 
 
ডোনাল্ড টিরিপানোর অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে আরও বেরিয়ে যাওয়া বল খেলার কোনো দরকার ছিল না। শরীরের অনেক দূরের বল তাড়া করতে গিয়ে ঠিকমতো খেলতে পারেননি মুমিনুল। ফিরে যান কিপার রেজিস চাকাভাকে সহজ ক্যাচ দিয়ে। 
 
৫ বলে ১ রান করেন মুমিনুল। ১১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ক্রিজে অভিষিক্ত মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গী প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকুর রহিম। 

দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড লিটন
 
তিন বলের মধ্যে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিলেন কাইল জার্ভিস। ইমরুল কায়েসকে বিদায় করার পর বোল্ড করে দিলেন লিটন দাসকে। 
 
ডান হাতি এই ওপেনার মিডল স্টাম্পের বল ব্যাটে খেলতে পারেননি। একটু সুইং করে তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বেল ফেলে দেয়। ১৪ বলে ৬ রান করে ফিরেন লিটন। ১০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

শুরুতেই ফিরলেন ইমরুল
 
ওয়ানডে সিরিজের সেরা খেলোয়াড় ইমরুল কায়েস ব্যর্থ টেস্ট সিরিজে। চার ইনিংসে তৃতীয়বার ফিরলেন এক অঙ্কের ঘরে।
 
কাইল জার্ভিসের অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বল পয়েন্ট দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। টাইমিং করতে পারেননি তিনি, ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ যায় ব্রেন্ডন মাভুটার হাতে। ১২ বলে ৩ রান করে ফিরেন ইমরুল। 
 
৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ক্রিজে লিটন দাসের সঙ্গী প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক।

ফলো অন করায়নি বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়েকে ফলো অন করায়নি প্রথম ইনিংসে ২১৮ রানের বড় লিড পাওয়া বাংলাদেশ। বড় লক্ষ্য দেওয়ার আশায় দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে মাহমুদউল্লাহর দল।  

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু হয় সকাল সাড়ে নয়টায়। তার কিছুক্ষণ আগে স্বাগতিকরা ফলো অন না করানোর সিদ্ধান্ত জানায়।

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে আসা তাইজুল ইসলাম ফলো অনের প্রশ্নে ছিলেন কৌশলী। তিনি বলেছিলেন, ব্যাটিং-বোলিং যাই করতে হোক, জিততে হলে ভালো করতে হবে।

জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেইলর বলেছিলেন, তিনি ফলো অনে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতেন। তবে এই পথে হাঁটেননি মাহমুদউল্লাহ।

তৃতীয় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫২২/৭ ডিক্লে.

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: (দ্বিতীয় দিন শেষে ২৫/১) ১০৫.৩ ওভারে ৩০৪ (চারি ৫৩, টিরিপানো ৮, টেইলর ১১০, উইলিয়ামস ১১, রাজা ০, মুর ৮৩, চাকাভা ১০, মাভুটা ০, জার্ভিস ৮*, চাটারা আহত অনুপস্থিত; মুস্তাফিজ ২১-৮-৫৮-০, খালেদ ১৮-৭-৪৮-০, তাইজুল ৪০.৩-১০-১০৭-৫, মিরাজ ২০-৩-৬১-৩, মাহমুদউল্লাহ ২-০-১৪-০, আরিফুল ৪-২-