মুশফিকের উদযাপন স্ত্রীর জন্য

সেঞ্চুরির উদযাপন ছিল একটু খ্যাপাটে। ডাবল সেঞ্চুরির উদযাপনে বাঁধভাঙা উল্লাসের সঙ্গে মিশে থাকল রোমান্টিকতার ছোঁয়া। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে দুই দিনে দেখা গেল মুশফিকুর রহিমের দুই রকম উদযাপন। জানা গেল পেছনের গল্পও। প্রথম উদযাপনে ছিল অধরা কিছুকে পাওয়ার উচ্ছ্বাস। পরের উদযাপন আগে থেকেই ঠিক করে রাখা, তার স্ত্রীর জন্য।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2018, 01:26 PM
Updated : 12 Nov 2018, 04:03 PM

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সবচেয়ে বেশি, ১৭ টেস্ট খেলেছেন মুশফিকই। কিন্তু বাংলাদেশের ‘হোম অব ক্রিকেটে’ ছিল না তার কোনো সেঞ্চুরি। সেই অপ্রাপ্তি ঘুচিয়ে ফেললেন এবার। এই টেস্টের প্রথম দিন বিকেলেই দেখা পান সেঞ্চুরির।

সেঞ্চুরির পর দেখা গেছে মুশফিকের বুনো উল্লাস। যেটি অবাক করেছিল অনেককেই। আরও শক্ত প্রতিপক্ষের সঙ্গে, আরও কঠিন কন্ডিশনে ও ধারাল বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে সেঞ্চুরি আছে মুশফিকের। দেশের বাইরেই টেস্ট সেঞ্চুরি আছে চারটি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর কেন অমন উদযাপন!

মুশফিক কারণ জানালেন দ্বিতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে। উঠে এলো অনেক অপেক্ষার পর একটি প্রাপ্তির গল্প।

“মিরপুরের প্রথম সেঞ্চুরি, এটা ব্যাক অব দা মাইন্ড ছিল। যখন ৭০-৮০ করে ফেললাম, তখন সেঞ্চুরির ভাবনা এল। বেশিরভাগ খেলোয়াড়ের ঘরের মাঠে ভালো রেকর্ড থাকে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমার মিরপুরে একশ নাই। আমি খুব করে চাচ্ছিলাম যেন একশ হয়। আর আমরা এই সিরিজে পিছিয়ে আছি। সবকিছু মিলে এটার বহিঃপ্রকাশ (সেঞ্চুরির উদযাপন)।”

সেঞ্চুরির উদযাপনের পর মাঠের বড় পর্দায় তাকিয়ে সেটি আবার দেখছিলেন মুশফিক। অনেকের অনুসন্ধানী চোখে ধরা পড়েছে সেটিও। মুশফিক আবার জানালেন, সেঞ্চুরিটি তার কাছে বিশেষ কিছু।

“যে কোনো অর্জন ভালো লাগার। মিরপুরের মাঠে এটা ছিল আমার প্রথম সেঞ্চুরি। আমার মনে হয় না, বাংলাদেশে এমন কোনো ক্রিকেটার আছে যে বলবে মিরপুরে তার প্রথম সেঞ্চুরি স্পেশাল না। এখানে সেঞ্চুরি করে আমি গর্বিত, এই ইনিংস আমার কাছে স্পেশাল। সেই জন্যই দেখছিলাম যে, কেমন লাগছে, সব ঠিকঠাক আছে কি না।”

এই মাঠে প্রথম সেঞ্চুরিকে মুশফিক পরে রূপ দিয়েছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিতে। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান, টেস্ট ইতিহাসের প্রথম কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে করেছেন একাধিক দ্বিশতক।

এবারও উদযাপনে প্রথাগত উল্লাস ছিল, সঙ্গে গ্যালারির দিকে তাকিয়ে দুই হাত উঁচিয়ে আঙুলে ‘লাভ’ চিহ্ন বানিয়ে এঁকে দেন চুম্বন। লাজুক হাসিতে মুশফিক জানালেন, স্ত্রীর জন্যই তার বিশেষ এই উদযাপন।

“সেলিব্রেশন যদি বলেন, ইনিংসটি আমি আমার স্ত্রীকে উৎসর্গ করেছি। ইনিংসটা অনেক স্পেশাল ছিল এবং ও আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করেছে। কালকেও আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছে। আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল ওই জায়গায় যেতে পারলে আমার সহধর্মিনীকে উৎসর্গ করব।”

“ওর অবদান আসলে অনেক বড়। আপনারা জানেন, আমি অনেক সময় মন খারাপ করে থাকতাম বা চুপচাপ থাকতাম। কিন্তু বিয়ের পর এটায় আমার অনেক বেশি উন্নতি হয়েছে। বাচ্চা হওয়ার পর তো আরও বেশি। আমার ফোনের ওয়ালপেপারে ছেলের ছবি থাকে, একটু হাসি দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।”