১১১ রান নিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিলেন মুশফিক। দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে যখন ইনিংস ঘোষণা করল দল, তার নামের পাশে অপরাজিত ২১৯ রান।
টেস্টে কিপার ব্যাটসম্যানদের নবম ডাবল সেঞ্চুরি এটি। একমাত্র মুশফিকই করলেন দুটি। টেস্ট কিপারদের সবশেষ ডাবল সেঞ্চুরিটিও করেছিলেন তিনিই, ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে।
গলের সেই ডাবল সেঞ্চুরি ছিল টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম দ্বিশতক। তার রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০১৫ সালে তামিম ইকবাল পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন ২০৬। গত বছর নিউ জিল্যান্ড সফরে ওয়েলিংটন টেস্টে তামিমকে পেছনে ফেলে সাকিব আল হাসান করেছিলেন ২১৭ রান। এবার মুশফিক আবার নিজের করে নিলেন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড।
নিজ দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড দুইবার গড়ে মুশফিক ঢুকে গেছেন ছোট্ট এক তালিকায়। টেস্ট ইতিহাসে এই কীর্তি গড়তে পেরেছেন আগে কেবল পাঁচজন- অস্ট্রেলিয়ার ডন ব্র্যাডম্যান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জর্জ হেডলি ও ব্রায়ান লারা, ভারতের ভিনু মানকড় ও বিরেন্দর শেবাগ।
শুধু রানেই সবার ওপরে নয়, মিনিট আর বলের স্থায়িত্বেও মুশফিকের ইনিংসটি এখন বাংলাদেশের টেস্ট ইনিংসগুলোর চূড়ায়। সময়ের হিসেবে বাংলাদেশের দীর্ঘতম ইনিংসের রেকর্ডটির বয়স ছিল প্রায় টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বয়সের সমান। বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টেই ১৪৫ রানের সেই ইতিহাস গড়া ইনিংসটি আমিনুল ইসলাম খেলেছিলেন ৫৩৫ মিনিট উইকেটে থেকে। দেড় যুগ পর সেটিকে পেছনে ফেললেন মুশফিক।
রোববার টেস্টের প্রথম দিন সকালেই উইকেটে গিয়েছিলেন মুশফিক। সোমবার দুপুর ৩টা ৭ মিনিটে ইনিংস ঘোষণার সময়ও ছিলেন অপরাজিত। শের-ই-বাংলার ২২ গজে কাটিয়ে দিয়েছেন ৫৮৯ মিনিট!
বলের হিসেবে সবচেয়ে বড় ইনিংসের রেকর্ড খুব পুরোনো ছিল না। গলে যে ইনিংসে দ্বিশতক করেছিলেন মুশফিক, সেটিতেই ১৯০ রানের ইনিংসটিতে মোহাম্মদ আশরাফুল খেলেছিলেন ৪১৭ বল। এবার মুশফিক খেলেছেন ৪২১ বল।
ম্যাচের প্রথম দিনে মুমিনুল হককে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে জুটির রেকর্ড গড়েছিলেন মুশফিক। দ্বিতীয় দিনে জুটির রেকর্ড হলো আরও একটি। মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেট জুটিতে তুলেছেন ১৪৪ রান। বাংলাদেশের হয়ে অষ্টম জুটিতে আগের রেকর্ডেও ছিল মুশফিকের নাম। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রামে নাঈম ইসলামের সঙ্গে মিলে তুলেছিলেন ১১৩ রান।
হাতছানি ছিল আরও একটি দারুণ রেকর্ডের। টেস্টে কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের। ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে নাগপুরে অপরাজিত ছিলেন ২৩২ রানে। এবার দল ইনিংস ঘোষণা করে দেওয়ায় মুশফিককে থামতে হলো ১৩ রান দূরে।