বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে গায়ানায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৬০ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
জাহানারা আলম, রুমানা আহমেদদের দারুণ বোলিংয়ে ক্যারিবিয়ানরা আটকে গিয়েছিল ১০৬ রানেই। কিন্তু রান তাড়ায় ডিয়েন্ড্রা ডটিনের পেসে উড়ে গেল বাংলাদেশের ব্যাটিং। গুটিয়ে গেল মাত্র ৪৬ রানেই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ছয় আসরে এই প্রথমবার পঞ্চাশের নিচে গুটিয়ে গেল কোনো দল। সর্বনিম্ন দলীয় রানের আগের রেকর্ডও ছিল বাংলাদেশের। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে বাংলাদেশ করেছিল ৫৮।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ডটিন নিয়েছেন ৫ রানে ৫ উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেটি সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে সব মিলিয়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
অথচ টস জয় থেকে শুরু করে ম্যাচের প্রথম ভাগে সবকিছুই ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। নতুন বলে জাহানারা আগ্রাসী বোলিংয়ের সামনে ভেঙে পড়ে ক্যারিবিয়ান টপ অর্ডার। ১৮ রানে হারায় তারা ৩ উইকেট।
পরে স্পিন আক্রমণেও সবাই চেপে ধরেন ক্যারিবিয়ানদের। লেগ স্পিনার রুমানা যথারীতি ছিলেন দারুণ, দুই অফ স্পিনার সালমা খাতুন ও খাদিজা তুল কুবরাও ছিলেন আঁটসাঁট। ৫০ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে কিছুটা টেনে নিয়ে যান দুই অভিজ্ঞ স্টেফানি টেইলর ও কাইসিয়া নাইট। তিনে নেমে অধিনায়ক টেইলর করেন ২৯ রান।
ক্যারিবিয়ানরা একশ পার হতে পারে নাইটের সৌজন্যে। সাতে নেমে এই কিপার ব্যাটার করেন ২৪ বলে ৩২।
লক্ষ্যটা তবু কঠিন ছিল না বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্য। কিন্তু প্রথম ওভার থেকে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে তারা করতে পারল না লড়াইটুকুও।
নতুন বলে শাকেরা সেলমানের জোড়া ধাক্কার পর বাকি কাজ সেরেছেন ডটিন। বাংলাদেশের একজন ব্যাটারও ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। জাহানারাকে তিনে নামানোর ফাটকা কাজে লাগেনি, ফিরেছেন ১৮ বলে ৩ করে। ফারজানা হকের ৮ রানই দলের সর্বোচ্চ। ১৫ ওভারের আগেই শেষ ইনিংস।
ব্যাটিং ভালো না করেও জিততে পারায় ম্যাচ শেষে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক টেইলরের কণ্ঠে ছিল স্বস্তি।
“মাঝ বিরতিতে সমর্থকদের অনেকেরই হয়তো হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মতো অবস্থা ছিল। ব্যাটিং পারফরম্যান্স ভালো হয়নি আমাদের। তবে ভালো ব্যাপার হলো ম্যাচের দ্বিতীয় ভাগে আমরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিততে পেরেছি।”
টেইলের যেখানে স্বস্তি, বাংলাদেশ অধিনায়ক সালমা খাতুনের আক্ষেপ ছিল সেখানেই।
“বোলিং আমাদের ভালো হয়েছে, কিন্তু ব্যাটিং ভালো হলো না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং ভালো, এরপরও ১০৭ রান তাড়া করা উচিত ছিল। পরের ম্যাচে আমাদের ব্যাটিংয়ে অনেক উন্নতি করতে হবে।”
মূল টুর্নামেন্টের আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচেও পাকিস্তানকে ঠিক ১০৬ রানে আটকেও বাংলাদেশ হেরেছিল ৮ রানে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১০৬/৮ (ম্যাথিউস ৬, ডটিন ৮, টেইলর ২৯, ক্যাম্পবেল ১, ম্যাকলিন ১১, কুপার ৮, নাইট ৩২, আনিসা ৪, ফ্লেচার ০*; জাহানারা ৪-০-২৩-৩, সালমা ৪-০-২১-১, কুবরা ৪-০-১৯-১, রুমানা ৪-০-১৬-২, ফাহিমা ৪-০-২৪-০)।
বাংলাদেশ: ১৪.৪ ওভারে ৪৬ (শামিমা ৫, আয়েশা ৬, জাহানারা ৩, ফারজানা ৮, নিগার ৩, রুমানা ২, সানজিদা ৪, লতা ০, ফাহিমা ৩*, সালমা ৫, কুবরা ১; সেলমান ২/১২, কনেল ০/৪, টেইলর ১/১০, ডটিন ৫/৫, ফ্লেচার ১/১২)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬০ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: ডিয়েন্ড্রা ডটিন