ফোকসের সেঞ্চুরির পর মইনের স্পিন ঝলক

দিনের শুরুতে ব্যাটিংয়ে ছিল ইংল্যান্ড। দিনের শেষেও তারা। সকালে বেন ফোকসের সেঞ্চুরির রেশ নিয়ে শেষ হয়েছে প্রথম ইনিংস। বিকেলে দুই ইংলিশ ওপেনার দেখিয়েছেন দৃঢ়তা। মাঝে ইংলিশদের স্পিনে নাকাল হয়েছে শ্রীলঙ্কা। তিন ইংলিশ স্পিনারই দারুণ বোলিং করেছেন, তবে উজ্জ্বলতম ছিলেন মইন আলি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2018, 02:37 PM
Updated : 7 Nov 2018, 02:37 PM

গল টেস্টে দ্বিতীয় দেখেছে তিন ইনিংসের চেহারা। অভিষেকে ফোকসের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড করেছেন ৩৪২। লঙ্কানরা প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ২০৩ রানেই। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮ রান তুলেছে কোনো উইকেট না হারিয়ে। বুধবার দ্বিতীয় দিন শেষে ইংলিশরা এগিয়ে ১৭৭ রানে।

৮ উইকেটে ৩২১ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংলিশরা সকালে ৬ ওভার খেলে যোগ করতে পেরেছে আর ২১ রান। ২০ রানই এসেছে ফোকসের ব্যাট থেকে। অভিষিক্ত কিপার ব্যাটসম্যান পেয়ে গেছেন তার কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি। নাম লিখিয়েছেন রেকর্ড বইয়ে।

শ্রীলঙ্কায় সেঞ্চুরি করা ইংল্যান্ডের প্রথম কিপার ব্যাটসম্যান ফোকস। ২০০৭ সালে ম্যাট প্রায়রের ৭৯ ছিল আগের সর্বোচ্চ।

প্রায়রের সঙ্গে আরেকটি রেকর্ডে জুড়ে গেছে ফোকসের নাম। অভিষেকে ইংল্যান্ডের হয়ে সেঞ্চুরি করা কিপার ব্যাটসম্যান শুধু এই দুইজনই। প্রায়র করেছিলেন ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সব দেশ মিলিয়ে অভিষেকে সেঞ্চুরি করা টেস্ট ইতিহাসের মাত্র পঞ্চম উইকেটকিপার ফোকস।

জ্যাক লিচকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে সপ্তমবার ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন অফ স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরা। ২০২ বলে ১০৭ রান করা ফোকসকে ফিরিয়ে ইনিংসের ইতি টানেন সুরাঙ্গা লাকমল।

উইকেটের সামনে স্মরণীয় সাফল্যের পর উইকেটের পেছনে সাফল্য পেতেও খুব অপেক্ষা করতে হয়নি ফোকসকে। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের প্রথম বলে জেমস অ্যান্ডারসনকে বাউন্ডারি মারেন দিমুথ করুনারত্নে। দ্বিতীয় বলেই করুনারত্নে ক্যাচ দেন ফোকসকে।

নতুন বলে আরেক প্রান্তেও উইকেট এনে দেন স্যাম কারান। বাঁহাতি পেসারের ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ এক বছর পর টেস্ট খেলতে নামা ওপেনার কৌশল সিলভা।

১০ রানে ২ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কাকে আরও বেকায়দায় ফেলেন ইংলিশ স্পিনাররা। মইনকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। বাঁহাতি স্পিনার লিচের শিকার কুসল মেন্ডিস। ৪০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন কাঁপছে শ্রীলঙ্কা।

সেখান থেকে শ্রীলঙ্কাকে কিছুটা উদ্ধার করেন নেতৃত্ব হারানো অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে গড়েন ৭৫ রানের জুটি।

এই জুটি থামানোয়ও বড় ভূমিকা ছিল ফোকসের। আদিল রশিদের লেগ স্পিনে ফোকসের দারুণ স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ৩৩ রানে ফেরেন চান্দিমাল।

ম্যাথিউস ৫২ রান নিয়ে গিয়েছিলেন চা বিরতিতে। বিরতির পর প্রথম বলেই তাকে ফেরান মইন।

ত্রিমুখী স্পিন আক্রমণে শেষ পর্যন্ত খুব বেশি দূর যাওয়া হয়নি শ্রীলঙ্কার। শেষ উইকেটে রঙ্গনা হেরাথ ও সুরাঙ্গা লাকমলের ২৮ রানের জুটিতে কোনোরকমে দুইশ পেরোয় তারা। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ব্যাটিংয়ে নামার সময় হেরাথকে গার্ড অব অনার দেয় ইংলিশরা। হেরাথ অপরাজিত থাকেন ১৪ রানে।

৬৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার মইন। দুটি করে নিয়েছেন অন্য দুই স্পিনার লিচ ও রশিদ।

প্রথম ইনিংসে ১৩৯ রানের লিড দিন শেষে আরও বাড়িয়েছেন ররি বার্নস ও কিটন জেনিংস। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে তাই পুরোপুরি ইংল্যান্ড।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৯৭ ওভারে ৩৪২ (আগের দিন ৩২১/৮)(ফোকস ১০৭, লিচ ১৫, অ্যান্ডারসন ০*; লাকমল ৩/৭৩, দিলরুয়ান ৫/৭৫, দনাঞ্জয়া ১/৯৬, হেরাথ ১/৭৮, ধনাঞ্জয়া ০/১৮)।

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৬৮ ওভারে ২০৩ (করুনারত্নে ৪, কৌশল ১, ধনাঞ্জয়া ১৪, কুসল মেন্ডিস ১৯, ম্যাথিউস ৫২, চান্দিমাল ৩৩, ডিকভেলা ২৮, দিলরুয়ান ২১, দনাঞ্জয়া ০, লাকমল ১৫, হেরাথ ১৪*; অ্যান্ডারসন ১/২৬, কারান ১/১৬, লিচ ২/৪১, মইন ৪/৬৬, রশিদ ২/৩০, স্টোকস ০/২২)।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১২ ওভারে ৩৮/০ (বার্নস ১১*, জেনিংস ২৬*; দিলরুয়ান ০/১২, লাকমল ০/১৪, হেরাথ ০/১০, দনাঞ্জয়া ০/১)।