আবেগতাড়িত হয়ে অতিরিক্ত স্ট্রোক, ধারণা অধিনায়কের

শট খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছেন একজন। পরের ব্যাটসম্যানও উইকেটে গিয়ে বেছে নিচ্ছেন একই পথ। অন্যের ভুল দেখে শিক্ষা নেয়নি কেউ। শোধরায়নি নিজের ভুলও। প্রথম ইনিংসের মতোই উইকেট বিলিয়ে আসার মিছিল দ্বিতীয় ইনিংসে। সিলেট টেস্টে এটিই ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের চিত্র। ভারপ্রাপ্ত টেস্ট অধিনায়ক মাহমুদউল্লার ধারণা, ‘ইমোশনাল’ হয়ে অতিরিক্ত শট খেলতে পারেন ব্যাটসম্যানরা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2018, 11:52 AM
Updated : 6 Nov 2018, 03:36 PM

১৪৩ ও ১৬৯, সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের দুই ইনিংসের স্কোর বলবে, উইকেট ছিল প্রাণবন্ত কিংবা প্রতিপক্ষের বোলিং ছিল ভয়ঙ্কর। কিন্তু বাস্তবতা ছিল উল্টো। সিলেটের উইকেটে বোলারদের জন্য ছিল না খুব সহায়তা। জিম্বাবুয়ের বোলিংয়ে ছিল না ব্যবধান গড়ার মতো কেউ। ম্যাচে খুব ভালো বোলিংও তারা করেনি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা একের পর এক বাজে শটে হারিয়েছেন উইকেট।

এক ইনিংসের ব্যর্থতা তো বোধগম্য, ক্রিকেটে বাজে দিন আসেই। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেও ভুলের পুনরাবৃত্তির পর ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ নিজেই। ভাবনার গভীরে গিয়ে দেখতে পাচ্ছেন, দলের ব্যাটিংয়ে শৃঙ্খলার অভাব।

“এমন ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা দেয়া আসলে খুবই কঠিন। একটা জিনিস বলতে পারি, টেস্ট ক্রিকেট খেলতে যে ধরনের ডিসিপ্লিন থাকা উচিত, আমার মনে হয় না আমরা সেই ডিসিপ্লিন দেখাতে পেরেছি। উইকেট বেশ ভালো ছিল, এমনকি আজকেও উইকেট ভালো ছিল। ডিসিপ্লিনের ইস্যুটা আমাদের আরেকটু ভালো করে দেখতে হবে। নিজেদের ওপর বিশ্বাসটা আরেকটু বাড়াতে হবে। বেশ কয়েকটি টেস্ট আমাদের ব্যাটিং খুব বাজে হচ্ছে। এইসব নিয়ে ভাবতে হবে, একটা উপায় বের করতে হবে।”

দুই ইনিংসে বাংলাদেশের স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানদের একজনও খুব ভালো কোনো বলে আউট হননি। দারুণ কোনো ডেলিভারিতে উইকেট শিকার করতে হয়নি জিম্বাবুয়ের বোলারদের। ম্যাচ শেষে কোনো অজুহাত দাঁড় করালেন না ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কও।

“আমরা অনেকগুলো বলে খুব লেইম আউট হয়েছি, খুব বাজে আউট হয়েছি। আউটগুলো হয়তো দৃষ্টিকটু। টেস্ট ক্রিকেটে ডিসিপ্লিন, মনোযোগের ইস্যু আছে। আমাদের প্রতিটা ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলতে হবে, আমরা কি চিন্তা করছিলাম, এসব ভাবতে হবে।”

“কোনোরকম অজুহাত দেয়া উচিত হবে না এবং দেয়া ঠিকও না। আমরাই বাজে ব্যাটিং করেছি। আমরা মোটেও ডিসিপ্লিনড ছিলাম না। এ কারণেই আমাদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। তবে আমরা বিশ্বাস করি আমরা নিজেরা যদি চিন্তা করি, গ্রুপ হিসেবে আমরা অবশ্যই ভালোভাবে ফিরতে পারব। এই বিশ্বাস আমাদের সবার মধ্যেই আছে।” 

এ নিয়ে টানা আট ইনিংসে দুইশর নিচে থমকে গেল বাংলাদেশ, এর মধ্যে দেড়শ ছুঁতে পেরেছে কেবল দুইবার। মাহমুদউল্লাহর মতে, শট নির্বাচনের দুর্বলতাই এই ব্যর্থতার মূল কারণ।

“আমার মনে হয় আমাদের স্ট্রোক মেকিং বেশি হচ্ছে আমাদের। জিনিসটা আমরা হয়তো ইমোশনালি করছি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে আমাদের। আরেকটু সাবধানী হতে হবে শট নির্বাচনে। কোন বোলারকে কখন, কিভাবে খেলতে পারি, এটা দেখতে হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, ছোট ছোট জুটিও আমরা গড়তে পারছি না। শুরু থেকে শেষ, সবাই ব্যর্থ হচ্ছি। এটা ঠিক করতে পারলে ঢাকা টেস্টে ভিন্ন বাংলাদেশ দেখতে পাবেন।”