উইকেটের ক্ষুধা নিয়ে ছুটছেন আবু জায়েদ

পরীক্ষা স্কিলের; বলের কারুকাজ আর আগ্রাসনের। পরীক্ষাটা টেম্পারামেন্টের। ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা বের করে, পরিকল্পনা করে তাকে ফাঁদে ফেলা, আউট হতে বাধ্য করা। টেস্ট ক্রিকেটের সেই কঠিন পরীক্ষায় চরম অনীহা সময়ের অনেক পেসারদের। বাংলাদেশেরও অনেক পেসারের রুচি নেই টেস্টে। ব্যতিক্রম আবু জায়েদ চৌধুরী। টেস্টের প্রতি ভালোবাসা তার তীব্র, উইকেটের ক্ষুধা প্রবল। স্বপ্নের বেশিরভাগ জুড়েই টেস্ট।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2018, 12:37 PM
Updated : 31 Oct 2018, 12:37 PM

গত ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব আবু জায়েদের। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তার সাফল্যের বেশিরভাগ ছিল বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে। লাল বলের দক্ষতার জন্য বেশি পরিচিত ছিলেন বরাবরই।

আন্তর্জাতিক আঙিনাতেও সেই স্কিল দেখানোর সুযোগ মিলে যায় গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। দুই টেস্ট খেলেছেন, ছিলেন সিরিজের দলের উজ্জ্বলতম পারফরমার। ২ টেস্টে উইকেট নিয়েছিলেন ৭টি, ভাগ্য একটু পক্ষে থাকলে নিতে পারতেন আরও বেশি। নজর কেড়েছিলেন সুইং বোলিংয়ের স্কিল দিয়ে।

এবার আবু জায়েদ অপেক্ষায় দেশের মাটিতে খেলার। সিলেটের সন্তান দেশে প্রথম টেস্ট খেলবেন সিলেটের মাঠেই। এখানেই তার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি অভিষেক। তবে টেস্ট বলেই তার রোমাঞ্চ বেশি। বুধবার সিলেটে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন, কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো উপভোগ করাই টেস্ট ক্রিকেটে তার জ্বালানি।

“আমি সবসময় বলছি, টেস্ট ক্রিকেট সবচেয়ে বেশি উপভোগ করি। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিও আমার পছন্দ, তবে টেস্ট সবচেয়ে উপভোগ করি। ছোটবেলা থেকেই টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করতাম।”

“ফার্স্ট ক্লাস খেলতে খেলতে টেস্টের প্রতি প্যাশন থেকেই এ রকম হয়েছে। যেমন, টেস্টে উইকেট নিতে হলে অনেক সময় ধরে বোলিং করতে হবে। উইকেটের ক্ষুধাটা খুব বেশি ছিল আমার। এটা থেকেই আমার প্যাশন হয়ে গেছে লম্বা লম্বা স্পেলে বোলিং করার।”

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পেস বোলারদের পারফরম্যান্সের দৈন্য বরাবরের। প্রায় প্রতি সিরিজেই নতুন কারও না কারও দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় দলকে। নির্ভর করার মতো কেউ নেই বলেই দুই টেস্ট খেলে আলো ছড়ানোর আবু জায়েদের ওপর বেশি ভরসা করছে দল। তবে এটিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিচ্ছেন এই পেসার।

“চাপ বলব না, কারণ আমার প্রতি যদি দলের আশা যদি থাকে, তাহলে আমারও করার চেষ্টা থাকবে। আমারও আগ্রহ থাকবে। দল যখন চাইছে, আমার মনে হয় না এটা চাপ।”

ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলা হয়েছে ডিউক বলে, যে বলে সহজাত সুইং এমনিতেই বেশি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ খেলবে এসজি টেস্ট বলে। তবে এই বলেও নিজের স্কিলের ওপর ভরসা আছে আবু জায়েদের।

“ডিউক বল বেশি সুইং করে, এটা ঠিক। এসজি দিয়ে আমাদের ম্যাচ, এসজি অনেকটা ডিউক ধরনের বলই। আমার মনে হয় এই জায়গায় যদি উইকেটে ঘাস থাকে, তাহলে সুইং করবে।”

“আর প্রথমে সুইং না হলেও রিভার্স করবে। কারণ এসজি বল কিন্তু মুভমেন্ট একবার না একবার করেই। আমার মনে হয়, যদি ফ্ল্যাট উইকেটও হয়, তবু রিভার্স হওয়ার সুযোগ আছে।”

ওয়েস্ট ইন্ডিজে যেমন প্রাণবন্ত ও পেস সহায়ক উইকেট টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, দেশের মাটিতে উইকেট থাকবে তার উল্টো। পেসারদের কাজ এখানে খুব কঠিন। নতুন বলে তবু একটু কারুকাজ দেখানো যায়, পুরোনো বলে ভালো স্কিল না থাকলে উতরে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে এসব উইকেটে খেলতে খেলতে আবু জায়েদও জানেন, তার কি করতে হবে।

“এ রকম উইকেটেই আমরা ফার্স্ট ক্লাস খেলে আসছি। সেখানেও এরকম হয়ে গেছে যে পুরোনো বলে অনেক সময় বেশি বোলিং করতে হয়। গত জাতীয় লিগে আমরা পুরোনো বলে ভাল বোলিং করেছি। টেস্টেও শুধু নতুন বল না, পুরোনো বল হাতেও দুই-একটা ব্রেক থ্রু দিতে হবে। যে কারণে নতুন বল ও পুরোনো বল-দুটি নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”