সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সেভাবে নিজের বোলিং সামর্থ্যের প্রমাণ দেওয়ার সুযোগ পাননি আরিফুল। গত ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেকের পর এই সংস্করণে খেলা ছয় ম্যাচের মাত্র একটিতে বোলিংয়ের সুযোগ মেলে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের একমাত্র ওভারে ১৩ রানে নেন ১ উইকেট।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত শুক্রবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হয় ওয়ানডে অভিষেক। ৩ ওভারে ১৭ রান দেওয়ার পর আর বোলিং পাননি আরিফুল। ৭ উইকেটে জেতা এই ম্যাচে মেলেনি ব্যাটিংয়ের সুযোগ। তাই নিজেকে প্রমাণ করতে না পারার আক্ষেপে ম্লান অনেক অপেক্ষার অভিষেক।
“আমি একজন অলরাউন্ডার হিসেবে দলে আছি। একজন অলরাউন্ডারের কাজ হল, ভালো ব্যাটিং করা বা বোলিংয়ে ভালো কিছু করা। আমি সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারিনি। তাই আমার আক্ষেপ এখনও আছে, নিজেকে প্রমাণ করা ক্ষুধা এখনও আছে।”
বেশি কিছু দিন ধরে দলের সঙ্গে আছেন আরিফুল। মনের মতো না হলেও হয়ে গেছে ওয়ানডে অভিষেক। দলে থাকতে, জায়গা পাকা করতে কি করতে হবে প্রথম ম্যাচেই বুঝে গেছেন ২৫ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার।
“আমি নিজেই অনুভব করি, আমার বোলিংয়ে আরও উন্নতি করা উচিত। বোলিং নিয়ে আমি মনোযোগ দিচ্ছিও। উন্নতি করার চেষ্টা করছি। জায়গায় বোলিং করা বা ওয়ানডেতে ১০ ওভার বোলিং করার সক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা করছি।”
“খেলতে না পারলেও জাতীয় দলের পরিবেশে থাকলে নিজের উন্নতি করা সহজ হয়। যদি জাতীয় দলের বাইরে থাকেন এত ভালো কোচ পাবেন না। তখন নিজেরই করতে হবে সবকিছু। এখানে নিজের উন্নতির খুব ভালো সুযোগ থাকে। ওয়ানডেতে অনেকদিন ধরে আছি এটা আমার জন্য ভালো হচ্ছে। অনেক খেলোয়াড় দেখছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরিবেশ বুঝতে পারছি, নিজের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হচ্ছে।”
ওয়ানডে দলে প্রতিটি জায়গার জন্য এখন তীব্র প্রতিযোগিতা। তার নিজের খেলা, শক্তি-সামর্থ্য আরও বেশি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন আরিফুল।
“নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সেভাবেই আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছি।”
টি-টোয়েন্টিতে খেলা ছয় ম্যাচেই ব্যাটিং করেন আরিফুল। তার চারটিতে ছিলেন অপরাজিত। ২০ ওভারের ক্রিকেটে ৬/৭ নম্বরে নেমে করতে পারেননি নজর কাড়া কিছু। এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটিং-বোলিংয়ে নিজের সত্যিকারের সামর্থ্যটা দেখাতে না পারার আক্ষেপ টেস্টে কাটাতে চান আরিফুল।
“হ্যাঁ, টেস্ট ক্রিকেটে আপনি সুযোগ পাবেনই। একজন অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করার এটাই সেরা জায়গা। আমি এভাবেই চিন্তা করছি। আর তা করতে আমাকে যা যা করতে হবে তা নিয়ে ভাবছি।”
ঘরোয়া ক্রিকেটে আরিফুল সবচেয়ে সফল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেট তাকে যোগায় বাড়তি আত্মবিশ্বাস। কদিন আগে এনসিএলে খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ২৩১ রানের ইনিংস। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭৬ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ অলরাউন্ডার টেস্টে ভালো করতে আত্মবিশ্বাসী।
“টেস্টে যত লম্বা সময় ধরে ব্যাটিং করতে পারেন তত ভালো। ইনিংস যত বড় করতে পারেন, যত বড় রান করতে পারেন আত্মবিশ্বাস তত ভালো থাকে।”
“আমার সুবিধা হল, আমি দুই ধরনের পরিস্থিতিতেই ব্যাট করতে পারি। যদি দ্রুত রান তোলার মতো পরস্থিতি হয় তো আমি প্রস্তুত। তবে যে কোনো পরিস্থিতিতেই বড় রান করার চেষ্টা থাকবে। যদি একজন বোলারকে নিয়ে ব্যাটিং করতে হয় তাহলে নিজে বেশি বল খেলার চেষ্টা থাকবে।”
আরিফুলের আশা, টেস্টে ব্যাটে-বলে নিজেকে মেলে ধরতে পারলে টিকে যাবেন ওয়ানডে স্কোয়াডে।
“টেস্টে যদি ভালো করি তাহলে হয়ত ওয়ানডেতে নিয়মিত হওয়ার সুযোগ পাব। স্বপ্ন ছিল দেশের হয়ে টেস্ট খেলার। সেই স্বপ্ন যদি সত্যি হয় তাহলে লক্ষ্য থাকবে পারফরম করার।”
টেস্ট অভিষেক হবে কি না সেটা সময়েই বলে দিবে। আপাতত নিজের দাবি জানিয়ে রাখার একটা সুযোগ পাচ্ছেন আরিফুল। জিম্বাবুয়ের তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রতিপক্ষ বিসিবি একাদশে আছেন তিনি।