উপেক্ষা নয়, পরিস্থিতির কারণে নেই তুষার: প্রধান নির্বাচক

দলে নতুন মুখ চার-চারটি। আছে আলোচনার আরও বেশি কিছু জায়গা। তবে সব ছাপিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন একজনের না থাকা। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের জোয়ারে রেকর্ড বই ওলট-পালট করে দিলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দলে জায়গা পাননি তুষার ইমরান। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানালেন, ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দলে রাখা যায়নি তুষারকে।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2018, 01:46 PM
Updated : 25 Oct 2018, 01:46 PM

গত কয়েক মৌসুম থেকেই ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির দুটি টুর্নামেন্টে তুষারের ব্যাটে ছুটেছে রানের স্রোত। বাংলাদেশের হয়ে ১০ হাজার, ১১ হাজার রান করা প্রথম ও একমাত্র ব্যাটসম্যান তিনি। তার ৩১ সেঞ্চুরি দেশের সর্বোচ্চ।

শুধু ক্যারিয়ারই সামগ্রিকভাবে সমৃদ্ধ নয়, সাম্প্রতিক ফর্ম অসাধারণ। এবারের জাতীয় লিগের প্রথম রাউন্ডে করেছেন জোড়া সেঞ্চুরি, তৃতীয় রাউন্ডে সেঞ্চুরি আরেকটি। সব মিলিয়ে এই বছর ১২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে তুষারের রান ৭৬.১৮ গড়ে ১ হাজার ২৫১। সেঞ্চুরি করেছেন সাতটি, গোটা ক্রিকেট বিশ্ব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

ধারাবাহিকভাবে রান করে গেলেও টেস্ট দলে সুযোগ পাচ্ছিলেন না তুষার। ক্যারিয়ারের ৫ টেস্টের সবশেষটি খেলেছেন সেই ২০০৭ সালে। এবার প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, খেলা ঘরের মাটিতে। সবচেয়ে বড় কথা, চোটের কারণে দলে নেই দুই অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। অভিজ্ঞতার ঘাটতি পূরণে হলেও এবার সুযোগ মিলতে পারে, এই আশায় ছিলেন তুষার।

কিন্তু আশাভঙ্গ হয়েছে আবারও। ব্যাটিং দিয়ে প্রথমবার দলে সুযোগ পেয়েছেন আরিফুল হক ও মোহাম্মদ মিঠুন। জায়গা হয়নি তুষারের। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে প্রধান নির্বাচক জানালেন, সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্তের প্রতিফলনই পড়েছে দল নির্বাচনে।

“তুষারকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে আমাদের। এরপর নির্বাচক, কোচ, অধিনায়ক, টিম ম্যানেজমেন্ট সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিওয়া হয়েছে। তুষার যেখানে ব্যাট করে, সেখানে জায়গা পাওয়া কঠিন। চারে তো মুশফিক খেলবে। পাঁচে মাহমুদউল্লাহ। চোট কাটিয়ে ফিরলে সাকিব খেলবে পাঁচে। তুষারকে দলে নিয়ে তো একাদশের বাইরে বসিয়ে রেখে লাভ নেই। কিন্তু একাদশে জায়গা কোথায়?”

মিনহাজুল জানালেন, পজিশন নিয়ে ভাবনার পাশাপাশি ৩৫ ছুঁইছুঁই তুষারের ভবিষ্যৎও ছিল তাদের ভাবনায়।

“টিম ম্যানেজমেন্ট, কোচ, আমরা সবাই ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েছি। এসব সিদ্ধান্ত তো এক-দুই ম্যাচের বিবেচনা করে নেওয়া যায় না। অনেক বছর না হোক, অন্তত দুই-তিন বছর সার্ভিস দিতে পারবে কিনা, সেটা ভাবতে হয়েছে আমাদের।”

“আমরা মোটেও ওকে উপেক্ষা বা অবহেলা করিনি। বিবেচনায় ছিল বলেই এত আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি ও সিস্টেম মিলিয়েই ওকে রাখা যায়নি দলে।”

যদিও বাংলাদেশের বাস্তবতায় শেষ কথা বলে কিছু নেই। তবু প্রধান নির্বাচকের ব্যখ্যার পর তুষারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে শেষ বলেই ধরে নেওয়া যায়। টেস্ট দলে ফেরার স্বপ্ন হয়তো তার অপূর্ণই থেকে যাবে।