ফজলে রাব্বির আরেকটি সুযোগ প্রাপ্য: মাশরাফি

তেন্ডাই চাতারার আচমকা লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারি। ফজলে মাহমুদ রাব্বির ব্যাটেই শুধু নয়, ছোবল লাগল যেন তার বহু লালিত স্বপ্নেও। বহু বছরের অপেক্ষার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাওয়া প্রথম সুযোগে আউট শূন্য রানেই। পরে বল হাতেও সুবিধে করতে পারেননি। তবে অভিষেক বিবর্ণ হলেও এখনই ফজলে রাব্বির ভবিষ্যত অন্ধকার দেখছেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। অন্তত আরেকটি সুযোগ তার প্রাপ্য, বলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2018, 10:13 AM
Updated : 23 Oct 2018, 10:13 AM

ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকতা ও ‘এ’ দলের হয়ে সাম্প্রতিক সাফল্য, পাশাপাশি সাকিব আল হাসানের না থাকা, সব মিলিয়ে এবারের জিম্বাবুয়ে সিরিজের দলে ডাক পান ফজলে রাব্বি। প্রথম ওয়ানডেতে অভিষেকও হয়ে যায় ৩০ বছর ২৯৫ দিন বয়সে। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডের পর এত বেশি বয়সে ওয়ানডে অভিষেক হয়নি বাংলাদেশের আর কারও।

প্রথম সুযোগে তিনে ব্যাট করে চার বলে শূন্য করে ফিরেছেন ফজলে রাব্বি দারুণ এক ডেলিভারিতে। বোলিংয়ে ৩ ওভারে ১৬ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। ফিল্ডিংয়ে অবশ্য ছিলেন বেশ প্রাণবন্ত ও চনমনে।

প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তকে বাইরে রেখে ফজলে রাব্বিকে শুরুতেই সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ থাকছে বটে। সেটি অস্বীকারও করছেন না মাশরাফি। তবে কাউকে সুযোগ দেওয়ার পর মাত্র এক ম্যাচ দেখেই বাদ দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি নন।

গত কিছুদিনে এনামুল হক, লিটন দাসরা পর্যাপ্ত সুযোগ পেয়েছেন। ততটা না হলেও অন্তত আরেকটা সুযোগ ফজলে রাব্বির প্রাপ্য, চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের দিন বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

“ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, অবশ্যই আরেকটি সুযোগ ওর পাওয়া উচিত। একটি ম্যাচ দিয়ে কাউকে বিচার করা কঠিন। বলতে পারেন, তাকে নেওয়া হলো কেন (প্রথম ম্যাচে), তাহলে সেদিক থেকে বলতে পারেন এটা ভুল। কিন্তু নেওয়ার পর অবশ্যই তাকে আরও সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ একটি ম্যাচ দিয়ে তাকে বিচার করা উচিত নয়। আর যে বলে আউট হয়েছে সেটাতেও দোষ দেওয়ার কিছু নেই। ক্রিকেট খেলায় এমনিতেও দোষের জিনিস কিছু নেই।”

“রাব্বি আরেকটি সুযোগ ডিজার্ভ করে। আমি যদি রাব্বির জায়গায় থাকতাম তাহলে প্রত্যাশা করতাম যে আমি সামনের ম্যাচে খেলব। বাকিটা তো নির্বাচক, টিম ম্যানেজম্যান্টের ব্যাপার। আমি রাব্বি হিসেবে বলছি, আমার কাছ থেকে অবশ্যই মনে হয় যে একটা সুযোগ প্রাপ্য।”

সাম্প্রতিক সময়ে এনামুল হক, লিটন দাসকে টানা সুযোগ দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু ব্যর্থতার পরও। অধিনায়কের নিজেরও বড় ভূমিকা ছিল সেসব সিদ্ধান্তে। তবে তবে অধিনায়কের কথা বা চাওয়াই যে শেষ কথা নয়, সেটি বারবার মনে করিয়ে দিলেন মাশরাফি।

“সবার মতই গুরুত্বপূর্ণ। একা দায়িত্ব নিয়ে খেলানোর সিদ্ধান্ত তো আর সবসময় নেওয়া যায় না। নিকট অতীতে সব খেলোয়াড়কে সমর্থন দিয়েছি। যতটুকু সম্ভব হয়, করেছি। কাউকে অনেক সুযোগ দিয়ে খুব বিলাসিতা করার অবস্থায়ও আমরা নেই, সেটাও মাথায় রাখতে হবে। যেহেতু ব্যাকআপ করেছি, এখনও করছি। তাকে পূর্ণ সমর্থন দিতেই হবে। চেষ্টা করব যতদূর সম্ভব তাকে সহযোগিতা করার।”

একাদশের বাইরে আরও বেশ কজন সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার মুখিয়ে আছেন খেলতে। এই জিম্বাবুয়ে সিরিজ উপযুক্ত সুযোগ তাদের খেলানোর জন্যও। বিশেষ করে, এশিয়া কাপে ব্যর্থ শান্তকে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ ও চেনা কন্ডিশনে খেলিয়ে আত্মবিশ্বাস দিতে চান কোচ স্টিভ রোডস। রাব্বিকে আরেকটি সুযোগ দেওয়া নিয়ে সংশয়ের জায়গাটি সেখানেই।

মাশরাফি বুঝিয়ে বললেন দল নির্বাচনের সব বাস্তবতাই।

“আমাদের আরও কিছু জায়গা আছে। যেমন শান্ত বসে আছে। ওর ক্রিকেট খেলাটাও জরুরি। আরিফুল এশিয়া কাপ থেকে ধারাবাহিক টিমের সাথে রয়েছে। সুযোগ পায়নি। পুরোদমে অনুশীলন করে যাচ্ছে। ও কিন্তু একটা সুযোগ ডিজার্ভ করে। পরে আরও কঠিন সিরিজ আসলে ওকে কিভাবে দেখব। আবু হায়দার প্রথম ম্যাচ খেলে ভালো করেছে (এশিয়া কাপে)। ও সাইড বেঞ্চে আছে।!”

“আমাদের তাই আরেকটু ক্লিনিকাল হতে হবে (একাদশ নির্বাচনে), ম্যাচ না হেরে কিভাবে একজন-দুজন করে সুযোগ দিতে পারি। ওরা যেহেতু দলের সাথে আছে, ওই পরিবেশটা কিন্তু আছে। ওরা যেন এসেই খুব দ্রুত পারফর্ম করতে পারে, যেন তিন-চার ম্যাচ না নেয় পারফর্ম করতে, সেই মানসিক প্রস্তুতি এবং শারীরিক প্রস্তুতিও নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।”