বড় মঞ্চে নিজেদের প্রমাণে উন্মুখ সালমারা

এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে জয়ী সালমা খাতুনের দল নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে। এগিয়ে চলার ছাপ রাখতে হবে আরও বড় মঞ্চে। সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে হবে মহিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। অধিনায়কের বিশ্বাস, সবার চেষ্টায় সেই চ্যালেঞ্জে জিতে আরও এগিয়ে যাবেন তারা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2018, 05:06 PM
Updated : 22 Oct 2018, 05:06 PM

আগামী ৯ নভেম্বর টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ‘এ’ গ্রুপে তাদের অন্য তিন প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা।

ওই টুর্নামেন্টে খেলতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশ ছাড়বে সালমার দল। তার আগে সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার আগে নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক।

“যাওয়ার আগে আমরা তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে যাচ্ছি, ছেলেদের সঙ্গে। দুটো হয়ে গেছে, আজকে তৃতীয় ম্যাচ। দুটো ম্যাচেই আমরা হেরেছি কিন্তু মেয়েরা ভালো করেছে দুই ম্যাচেই।”

“কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমরা ১০-১২ দিন আগে যাচ্ছি। ওদের কন্ডিশন, আবহাওয়া আর উইকেট সবই আমাদের অজানা। আমরা যেহেতু আগে যাচ্ছি, তাই আশা করছি সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আমরা ভালো করব।”

৪ নভেম্বর আয়ারল্যান্ড ও ৬ নভেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। তার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজে স্থানীয় কয়েকটি দলের সঙ্গে নিজেদের উদ্যোগে বাড়তি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা আছে তাদের।

দলের কোনো সদস্য কখনও ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলেননি। তাই সেখানে ঠিক কি প্রত্যাশা করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না অধিনায়ক। তবে একটা ব্যাপারে সালমা নিশ্চিত, কন্ডিশন যেমনই হোক তারা মাঠে নামবেন নিজেদের শক্তির ওপর আস্থা রেখে।

“আমাদের স্পিন আক্রমণ অনেক শক্তিশালী, এটা বলতেই হবে। এখন পেস বোলাররাও ভালো করছে। সেখানে যাওয়ার পর বুঝতে পারব ওই উইকেটে স্পিনাররা কতটা কার্যকর হতে পারে। আশা করি, স্পিনারদের দিয়ে কাজটা করাতে পারব।”

অধিনায়ক জানেন এশিয়া কাপ জয় কোনো অঘটন নয় প্রমাণ করতে আরও বড় মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরতে হবে। সেই চ্যালেঞ্জ নিতে উন্মুখ বাংলাদেশ।

“প্রতিটি ধাপই আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে আমরা ভালবাসি, তাই এই চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি আমরা। আশা করি, ‘ম্যাচ বাই ম্যাচ’ খেলে এগোতে পারব। সেখানে গিয়ে আমরা দেখব, কি করা যায়।” 

কদিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে উড়ে যাওয়া বাংলাদেশ সহজেই জিতে একমাত্র ওয়ানডেতে। সালমা জানান, সেই জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে নামবেন তারা। প্রায় একই সুর ভারতীয় কো আঞ্জু জৈনের কণ্ঠে।

“সবাই এই মুহূর্তে দারুণ আত্মবিশ্বাসী। আশা করি, এই বিশ্বকাপ আমাদের জন্য দারুণ হতে যাচ্ছে।” 

“দলে কার কি ভূমিকা জানাটা মেয়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এটাই আমি বলছি। আমরা সামনের কিছু ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রস্তুতি বেশ ভালো। আশি করি, মেয়েরা ভালো করবে।”

দলের স্পিনারদের ওপর অগাধ আস্থা ম্যানেজার নাজমুল আবেদীনের। তিনি মনে করেন, উইকেটে খুব একটা সহায়তা না থাকলেও দলকে সাহায্য করার একটা উপায় বের করে ফেলবেন স্পিনাররা।

“দক্ষিণ আফ্রিকা, আয়ারল্যান্ডে আমরা স্পিনারদের ভূমিকা দেখেছি। সেখানে স্পিনারদের জন্য কোনো সাহায্য ছিল না। মেয়েদের তা ওয়েস্ট ইন্ডিজেও ভালো করতে না পারার কোনো কারণ দেখি না।”

“আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি, আমাদের কয়েকজন উইকেটটেকার স্পিনার আছে। এশিয়া কাপে ভারত, পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ওরা নিজেদের সামর্থ্য দেখিয়েছে। স্পিনাররা এখন আরও পরিণত।”

খাদিজা তুল কুবরা, রুমানা আহমেদ, নাহিদ আক্তার, ফাহিমা খাতুনের সঙ্গে সালমার উপস্থিতিতে বৈচিত্র্যপূর্ণ বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ। নাজমুলের বিশ্বাস, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডকে পরীক্ষায় ফেলা যাবে স্পিন দিয়ে।

“আমরা এশিয়া কাপ জিতেছি, সেটা দিয়ে আমাদের মান যাচাই করা ঠিক হবে না। বিশ্বকাপে প্রতিটি ম্যাচে যদি আমরা প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতে পারি সেটাই হবে সবচেয়ে বড় পাওয়া। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া যে, আমরা এই পর্যায়ের ক্রিকেট খেলতে পারি।”