মিরপুরের অননুমেয় উইকেট নিয়ে ভাবনায় মাশরাফি

এক যুগেও শের-ই-বাংলার উইকেট বুঝে উঠতে পারলেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে মিরপুরের অননুমেয় উইকেট নিয়ে খানিকটা চিন্তায় বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে নিজেদের প্রধান ভেন্যুতে প্রচুর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আশাও দেখাচ্ছে তাকে। মাশরাফির বিশ্বাস, উইকেটের চরিত্র অনুযায়ী দ্রুত সঠিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারবেন তারা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2018, 11:50 AM
Updated : 20 Oct 2018, 11:50 AM

ক্ষণে ক্ষণে রঙ পাল্টাতে পারে মিরপুরের উইকেট। সকালে ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো উইকেট বিকেলে হয়ে উঠতে পারে ব্যাটসম্যানদের জন্য বধ্যভূমি। হতে পারে উল্টোটাও। প্রথম ইনিংসের চেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সহজ হয়ে যেতে পারে ব্যাটিং।

শের-ই-বাংলায় রোববার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু হবে বেলা আড়াইটায়। তার আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি জানান, উইকেটের হঠাৎ চরিত্র বদলের স্বভাব মাথায় রাখছেন তারা।

“মিরপুরের উইকেট অনুমান করা খুবই কঠিন, আমরা সবাই জানি। মিরপুরের উইকেট ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ শুরু করে। আগে থেকে বলা খুবই কঠিন হবে। শুরুতেই যে স্লো হবে বা টার্ন করবে, এমন আশা অবশ্যই করছি না। ভালো উইকেটে খেলতে চেয়েছি, এখন ভালো উইকেট হলেই হয়। কিন্তু মিরপুরের উইকেট তো, আগে থেকে অনুমান করা একটু কঠিন।”

গত জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে মিরপুরের উইকেট ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফাইনালসহ দুটি ম্যাচে প্রত্যাশার বেশি টার্ন ছিল উইকেটে। দল চেয়েছিল উইকেটে ব্যাটসম্যানদের জন্য সহায়তা কিন্তু হয়েছিল উল্টো, প্রচুর সহায়তা পেয়েছিলেন বোলাররা। মাশরাফি জানান, এই ধরনের অভিজ্ঞতাগুলো শের-ই-বাংলার উইকেট সম্পর্কে আরও বেশি সজাগ করেছে তাদের।  

“মিরপুরের উইকেট কেন অননুমেয়? কারণ, হঠাৎ করেই আচরণ বদলে ফেলে। আপনারাও দেখেছেন হঠাৎ করে বল টার্ন করতে শুরু করে কিংবা বল নিচু হয়ে যায়। তখন কিন্তু যারা ব্যাটিং করে, ব্যাটিংয়ের অপেক্ষায় থাকে তাদের মাইন্ডসেট পরিবর্তন করতে হয়।”

“উইকেট অননুমেয় হলেও আমরা এখানে খেলে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কারণ, বেশিরভাগ সিনিয়র প্লেয়াররা গত ১০ বছর ধরে এই উইকেটে খেলছে। ঘরোয়া ক্রিকেটেও যারা খেলছে তারা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। উইকেট যখন আচরণ বদলাতে থাকে তখন অতিথি দলের জন্য একটু বেশি কঠিন হয়।”

চিরচেনা মাঠের উইকেটের অনিশ্চিত চরিত্র কোনো অজুহাত হতে পারে না মাশরাফির কাছে। অধিনায়ক চান, উইকেটের চরিত্র বুঝে সেই অনুযায়ী ক্রিকেট খেলুক তার দল। 

“আমার মনে হয় না, এখানে আমাদের মানিয়ে নিতে কোনো সমস্যা হবে। চট্টগ্রামে সাধারণত ব্যাটিং উইকেট হয়, যদি না আপনি স্লো বা টার্নিং উইকেট তৈরি করেন। মিরপুরের উইকেট তেমন না, অনেক সময়ই দ্বিতীয় ইনিংসে অন্যরকম আচরণ শুরু করে। তবে আমি মনে করি, এতদিন এখানে খেলার পরে এমন কোনো অজুহাত না দেয়াই উচিত। তবে এখানে আমরা ২৫০/২৬০ রান করতে পারলে ওদের জন্য কঠিন হবে।”

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ সব সময় স্পিন নির্ভর বোলিং আক্রমণের ওপর নির্ভর করে আসছে। উইকেট যেমনই হোক, এবার সেই কৌশল থেকে কিছুটা সরে আসার ইঙ্গিত দিলেন মাশরাফি। 

“আমরা প্রায় সব ক্ষেত্রে তিন জন পেসার নিয়ে খেলছি। যে কোনো অবস্থায় ও যে কোনো উইকেটে আমরা পেস বোলিংকে সবসময় প্রাধান্য দিয়েছি। ... আমরা অবশ্যই ওই জায়গায়াতেই আছি। আমরা যতদূর সম্ভব এটা ব্যাক আপ করেই যাব।”

“একই সাথে উপমহাদেশ ও মিরপুরের উইকেটে স্পিনের বড় ভূমিকা থাকে। আমরা স্পিন দিয়ে তাদেরকে এর আগে অনেক সময় অল আউট করেছি। এটা অবশ্যই আমাদের মাথায় আছে ও থাকবে। একই সাথে আমরা পেস বোলারদের ফ্ল্যাট উইকেট বলেন, সিমিং উইকেট বলেন, সব জায়গায় আমরা ব্যাক আপ দিয়েছি। সেটা দিয়ে যেতে চাই।”