‘চাপমুক্ত’ লিটন এখন আত্মবিশ্বাসী

তার প্রতিভা নিয়ে সংশয় ছিল না। কিন্তু পারফরম্যান্সে রূপ দিতে না পারলে প্রতিভার মূল্য তো সামান্যই। তাকে নিয়ে তাই বাড়ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের হতাশা। সংশয়ের মেঘ জমছিল তার নিজের মনেও। অবশেষে সেই মেঘ স্বস্তির বৃষ্টি হয়ে ঝরেছে এশিয়া কাপ ফাইনালে। ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেই সেঞ্চুরির পর লিটন দাস এখন একটু নির্ভার আর অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2018, 12:04 PM
Updated : 16 Oct 2018, 12:04 PM

আন্তর্জাতিক আঙিনায় নিজের ব্যাটিংয়ের নান্দিনকতা, ব্যাটসম্যানশিপের পরিধি সেভাবে দেখাতে পারছিলেন না লিটন। ব্যক্তিগত জীবনেও তার পরিচিতি বেশ অন্তর্মুখী হিসেবে। বরাবরই নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখেন বা থাকেন। নানা সময়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেও নিজেকে খোলাসা করেছেন সামান্য।

এশিয়া কাপ ফাইনালের সেঞ্চুরিটায় হয়তো কেটে গেছে অস্বস্তিটুকু। তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে একটা গেরো যেমন খুলেছে, সংবাদমাধ্যমের সামনেও এবার মনের দুয়ার খুললেন একটু। মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলনে ফাঁকে জানালেন, ফাইনালের সেঞ্চুরিতে কমে গেছে মনের ভার।

“আমি বলব না যে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেছি। তবে আগে থেকে একটু চাপমুক্ত অবস্থায় আছি, এটা বলতে পারেন। আর নিজের প্রতি একটু আত্মবিশ্বাস এসেছে। যখন কেউ ভালো কিছু করে, তখন নিজের ভেতর এই জিনিসটা আসে।”

ফাইনালের সেই সেঞ্চুরির পর লিটনের আরেকটি ইনিংস ঝড় তুলেছে দেশের ক্রিকেটে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ডে নিজেকেই ছাড়িয়েছেন জাতীয় লিগের এক ম্যাচে। নিজের ওপর তার বিশ্বাস আরও পোক্ত হওয়ার কথা ওই ইনিংসের পর।

তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবরই বানের জলের মতো রান এসেছে তার ব্যাটে। এশিয়া কাপের সেঞ্চুরিটিকেই তাই নিজের জন্য মানছেন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

“আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সেঞ্চুরিই বেশি গুরুত্ববহ। আপনারাও ভাল জানেন, আমি অনেক দিন ধরেই ব্যাকফুটে ছিলাম। পারফর্ম করাটা আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পাশাপাশি এটি আমার জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি, এটা আমার জন্য অনেক ব্যাপার।”

এই সেঞ্চুরি থেকে পাওয়া বিশ্বাস নিয়েই লিটন ছুটতে চান আরও অনেক বড় ইনিংসের পথে। একটা জায়গায় যেমন এখন তিনি চাপমুক্ত, আবার প্রত্যাশার চাপও এখন বাড়তে থাকবে আস্তে আস্তে। সেই বাস্তবতা লিটন জানেন। তাই ঘরোয়া ক্রিকেটের মতোই ধারাবাহিক হতে চান আন্তর্জাতিক আঙিনায়।

“কিছু পেতে হলে তো কিছু দিতেও হবে। আমিও জানি যে আমাকে রান করতে হবে। দলের সদস্যরাও চাইবে, যেহেতু আমি ভালো খেলেছি, সেটা যেন ধরে রাখি। এটা দুই দিক দিয়েই থাকবে।”

“আমার মূল লক্ষ্য এটাই (ধারাবাহিকতা)। আমার মনে হয়, আমি যখন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলি, তখন ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দিয়ে থাকি। ওই জিনিসেরই ঘাটতি ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। আমি চেষ্টা করছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে যাওয়ার।”