‘মুমিনুলের দুর্ভাগ্য, তবে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়নি’

সাড়ে তিন বছর পর ওয়ানডেতে সুযোগ। কিন্তু দুটি ম্যাচ খেলিয়েই বাদ। সুযোগটা কি পর্যাপ্ত ছিল? ওয়ানডে দল থেকে মুমিনুল হকের বাদ পড়া নিয়ে এই প্রশ্নের সঙ্গে একমত হাবিবুল বাশার। জাতীয় দলের অন্যতম এই নির্বাচক ব্যাখ্যা করলেন বাস্তবতা, মুমিনুলের প্রতি জানালেন সহানুভূতি।

গত তিন বছরে দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যুগুলোর একটি, ওয়ানডে দলে মুমিনুলের না থাকা। সেই অপেক্ষার অবসান হয়েছে এবারের এশিয়া কাপ দিয়ে। প্রথম ঘোষিত স্কোয়াডে না থাকলেও পরে ডাক পান মুমিনুল। এশিয়া কাপে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগও পান। তবে কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। নিজের প্রিয় তিন ও চার নম্বরে ব্যাট করেও দুই ম্যাচে করেন ৯ ও ৫ রান। জায়গা হয়নি তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে।

রান না পাওয়ায় তার বাদ পড়া নিয়ে আঙুল তোলা কঠিন বটে। তবে এতদিন পর সুযোগ দিয়ে দুটি ম্যাচ দেখেই বাদ দেওয়া, সেই দুটি ম্যাচও টানা নয়, দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের মতো তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলিয়ে আত্মবিশ্বাস ফেরানো যেত কিনা, এই প্রশ্নগুলো উঠছে।

হাবিবুলের খুব একটা দ্বিমত নেই এসব নিয়ে। তবে শনিবার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই নির্বাচক দেখালেন অন্য বাস্তবতা।

“মমিনুলের একটু দুর্ভাগ্য বলব, ওর জন্য আমার সহানুভূতি আছে। আমি মনে করি ওর ওয়ানডে ক্যারিয়ার কখনই শেষ হয়ে যায়নি। ওয়ানডেতে ওর দেওয়ার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু এটা আমাদের সুযোগ কিছু ক্রিকেটারকে দেখে নেওয়ার। এটির পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ, নিউ জিল্যান্ড সফরের পর বিশ্বকাপ। তো এই জিম্বাবুয়ে সিরিজটা সুযোগ কিছু ক্রিকেটারকে দেখে নেওয়ার।”

“যদি সাকিব-তামিম থাকত এই সিরিজে, তাহলে আমরা আরও খেলোয়াড় দেখতে পারতাম। কিন্তু এখানে আমাদের খুব একটা সুযোগ ছিল না। সেরা কম্বিনেশন ও অভিজ্ঞতার দিকে নজর নিয়ে দল সাজাতে হয়েছে। মমিনুল এশিয়া কাপে দুটি ম্যাচ খেলল, আমি বলব দুটি ইনিংস একজন ব্যাটসম্যানের জন্য যথেষ্ট নয়। তবে যদি ওই দুই ইনিংসে রান করত, তাহলে ওর জন্য ভালো হতো। যেহেতু রান করতে পারেনি আর আমাদের নতুন দুই-একজন ক্রিকেটারকে দেখতে হচ্ছে, তাই দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাদ পড়েছে।”

এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড সফরে আনঅফিসিয়াল ওয়ানডেতে ১৮২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন মুমিনুল। সেই সফরে থাকা হাবিবুল বেশ কাছ থেকে দেখেছেন মুমিনুলের ব্যাটিং। মুমিনুলের ব্যাটিংয়ের পরিবর্তন নিয়ে বেশ কৌতুহল জাগানিয়া একটি পর্যবেক্ষণ আছে এই নির্বাচকের।

“আমি সম্প্রতি ওর ব্যাটিং দেখেছি ওয়ানডেতে। ও এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন একজন ব্যাটসম্যান। আমি নিশ্চিত নই, ওয়ানডে ব্যাটিংয়ের ভাবনা ওর টেস্টের ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলছে কিনা। টেস্ট ম্যাচে কিন্তু সম্প্রতি ওর কাছ থেকে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স আমরা পাইনি।”

“টেস্টে সে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই, টেস্টে ওর ব্যাটিংটা আমাদের খুব দরকার। ওয়ানডে কিন্তু আমরা চালিয়ে নিতে পারছি, আমাদের বিকল্প আছে। কিন্তু টেস্ট মমিনুলের বিকল্প খুব কম। ঠিক জানি না, ওয়ানডের ভাবনা ওর টেস্টের পারফরম্যান্সের ক্ষতি করছে কিনা, যেটা আমরা একদমই চাই না।”

গত জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির পর ৩ টেস্ট খেলে ৬ ইনিংসে একটিও ফিফটি করতে পারেননি মুমিনুল, তিনবার আউট হয়েছেন শূন্য রানে। হাবিবুলের ভাবনা হয়ত মুমিনুলের জন্যও জোগাতে পারে নতুন ভাবনার খোরাক।