তাহিরের স্পিন জাদুতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়

অভিষেকে ব্যাটিংয়ে দ্যুতি ছড়ালেন রাসি ফন ডার ডুসান। তার ঝলমলে ফিফটিতে লড়াইয়ের পুঁজি পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। দারুণ বোলিংয়ে জিম্বাবুয়েকে এলোমেলো করে দিলেন ইমরান তাহির। লড়াই করলেন পিটার মুর ও ব্রেন্ডন মাভুটা। তবে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পেরে ওঠেনি অতিথিরা।  

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2018, 07:46 PM
Updated : 9 Oct 2018, 07:46 PM

ইস্ট লন্ডনে ৩৪ রানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৬১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১২৬ রানে থেমে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ফাফ দু প্লেসির দল।  

বাফেলো পার্কে মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। ১১ রানের মধ্যে ফিরে যান দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও অভিষিক্ত জিহান ক্লোটি।

পাল্টা আক্রমণে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন ফাফ দু প্লেসি। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ২০ বলে ৩৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে অধিনায়ক ফিরে যান মাভুটার বলে ক্যাচ দিয়ে।

দু প্লেসির সঙ্গে ৪১ রানের জুটির পর ডেভিড মিলারের সঙ্গে ৮৭ রানের আরেকটি ভালো জুটি উপহার দেন ফন ডার ডুসেন। এমনিতে ওপেনার হলেও টি-টোয়েন্টিতে যে কোনো পজিশনে ব্যাট করতে পারেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম ইনিংসে দেখালেন সেই সামর্থ্য।

১০.৫ ওভার স্থায়ী জুটিতে শান্তই ছিলেন ‘কিলার’ মিলার। স্বভাব সুলভ বিস্ফোরক ব্যাটিং করেননি। সঙ্গ দিয়ে গেছেন ফন ডার ডুসেনকে। কাইল জার্ভিসের বলে ক্যাচ দিয়ে মিলারের বিদায়ে ভাঙে চতুর্থ উইকেট জুটি। ৩৪ বলে ৩৯ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

ডুসেন পেয়েছেন ফিফটি। ৪৪ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫৬ রানের ইনিংসে দলকে নিয়ে যান দেড়শ রানে।

৩৭ রানে ৩ উইকেট নেন জিম্বাবুয়ের পেসার জার্ভিস।

রান তাড়ায় তাহিরের ছোবলে শুরুটা ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ে। ওয়ানডে সিরিজে ভোগানো লেগ স্পিনার নিজের প্রথম দুই ওভারে তুলে নেন ৩ উইকেট।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাহির বোল্ড করে দেন চামু চিবাবাকে। পরের ওভারে মিলে আরও বড় শিকার। এলবিডব্লিউ হয়ে যান অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। পরের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরেন টারিসাই মুসাকান্দা।

তাহিরের হ্যাটট্রিক ঠেকানো শন উইলিয়ামস শুরু করেন কাভার দিয়ে চার হাঁকিয়ে। ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গে ২৯ রানের জুটিতে খানিকটা প্রতিরোধ গড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

ছবি: ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা

দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে আবার শিকার ধরেন তাহির। বোল্ড করে দেন উইলিয়ামসকে। পরের বলে এলবিডব্লিউ এল্টন চিগুম্বুরা। এবারও হ্যাটট্রিক করতে পারেননি স্বাগতিক লেগ স্পিনার। তার গুগলিতে পরাস্ত হলেও কোনোমতে বেঁচে যান টেন্ডাই চিশোরো।

তাহিরের স্পিন জাদুতে সমীকরণ খুব কঠিন হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ের জন্য। শেষ ৬ ওভারে দলটির প্রয়োজন ছিল ৮১ রান। তাবরাইজ শামসির ১ ওভারে টানা চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে অতিথিদের আশা বাঁচিয়ে রাখেন পিটার মুর। সেই ওভার থেকে আসে ২৫ রান।

জুনিয়র ডালার পরের ওভারে ফুল টস বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ১৮ রান তুলে নেন মাভুটা। ১৪ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ফিরেন ২৮ রান করে। মাত্র ৩.১ ওভারে মুরের সঙ্গে তিনি গড়েন ৫৩ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। মাভুটা আউটের আগের ৯ বল থেকে আসে ৪২ রান!

বিস্ফোরক এই জুটি ভাঙার পর বেশি দূর এগোয়নি জিম্বাবুয়ের ইনিংস। দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ২১ বলে ৫ ছক্কা ও এক চারে ৪৪ রান করেন মুর। ১৬ বল বাকি থাকতে থমকে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস।

ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২৩ রানে ৫ উইকেট নেন তাহির। টি-টোয়েন্টিতে এই লেগ স্পিনারের এটা দ্বিতীয় ৫ উইকেট। আগের সেরা ছিল গত বছর ফেব্রুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪ রানে ৫ উইকেট।

আগামী শুক্রবার পচেফস্ট্রুমে হবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬০/৬ (ডি কক ৫, ক্লোটি ২, দু প্লেসি ৩৪, ফন ডার ডুসেন ৫৬, মিলার ৩৯, জঙ্কার ৮, ফেলুকওয়ায়ো ৪*, জুনিয়র ডালা ০*; জার্ভিস ৩/৩৭, এমপোফু ২/২৪, চিশোরো ০/৩৭, মাভুটা ১/১৯, উইলিয়ামস ০/২৮, চিবাবা ০/১১)

জিম্বাবুয়ে: ১৭.২ ওভারে ১২৬ (চিবাবা ৩, মাসাকাদজা ১, টেইলর ১৯, মুসাকান্দা ০, উইলিয়ামস ২১, মুর ৪৪, চিগুম্বুরা ০, চিশোরো ২, মাভুটা ২৮, জার্ভিস ০, এমপোফু ০*; এনগিডি ১/৭, তাহির ৫/২৩, জুনিয়র ডালা ২/২৫, ফেলুকওয়ায়ো ২/২৫, শামসি ০/৪৩)

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৪ রানে জয়ী