বিপিএল অভিজ্ঞতার কারণেই শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬ রান। মাশরাফি বিন মুর্তজার হাতে বিকল্প ছিল তিনটি। মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়কের মাথায় ছিল বিপিএলে শেষ ওভারে স্নায়ুর চাপ সামলে মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত বোলিং। শুরুতে সৌম্যকে ডাকলেও শেষ পর্যন্ত তাই মাহমুদউল্লাহর হাতেই বল তুলে দিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।

ক্রীড়া প্রতিবেদক দুবাই থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2018, 06:19 AM
Updated : 29 Sept 2018, 06:19 AM

শেষ ওভারের এই দ্বন্দ্বে পড়তে হয়েছিল মূলত মিরাজ বিবর্ণ থাকায়। টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত বোলিং করলেও ফাইনালে সুবিধে করতে পারেননি এই অফ স্পিনার। তাই মাহমুদউল্লাহকে দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হয় তার ওভারগুলো।

কিন্তু মিডল অর্ডারে বাংলাদেশের ব্যর্থতায় ভারতের লক্ষ্য ছোট ছিল। শেষ ৫ ওভারে ৫ উইকেট হাতে ভারতের প্রয়োজন ছিল মাত্র ২৬, শেষ ৩ ওভারে কেবল ১৩। রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমানের অসাধারণ বোলিংয়ে এই ম্যাচও শেষ ওভারে টেনে নেয় বাংলাদেশ।

শেষ ওভারে শুরুতে সৌম্যর হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন মাশরাফি। রান আপ নেওয়াও শুরু করেছিলেন আগের ম্যাচে দারুণ বোলিং করা মিডিয়াম পেসার। তবে তাকে সরিয়ে আবার মাহমুদউল্লাহকে ডাকেন মাশরাফি। ম্যাচ শেষে সেই ভাবনার প্রেক্ষাপট জানালেন অধিনায়ক।

“আমিই বদলেছি সিদ্ধান্ত। কারণ সে বিপিএলে শেষ ওভারে বোলিং করেছে, দুইবার শেষ ওভারে দলকে জেতানো অভিজ্ঞতা আছে। এটাই আমার মাথায় কাজ করেছে। আমি শুধু ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আত্মবিশ্বাস কতটা আছে। সে সাহস দেখানোর পর ওকেই দিয়েছি। তাছাড়া সৌম্যর পেস কাজে লাগিয়ে হয়ত রান হয়ে যেত সহজেই। ভাবনা ছিল মাহমুদউল্লাহকে যদি মারতেও যায়, তবু আউট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।”

৬ বলে ৬ রান আটকানো কঠিন। তার পরও মাহমুদউল্লাহর দারুণ বোলিংয়ে শেষ বল পর্যন্ত যেতে পেরেছে দল। চেষ্টার কোনো কমতি রাখেননি এই অফ স্পিনার। প্রথম দুই বলে হয়েছিল দুটি সিঙ্গেল। তৃতীয় বলে উড়িয়ে মেরে দুটি রান নেন কুলদীপ যাদব, একটু এদিক-সেদিক হলে যেটি ক্যাচ হতে পারত মিড উইকেটে।

চতুর্থ বলটি দারুণ দক্ষতায় লো-আর্ম ডেলিভারিতে রান দেননি মাহমুদউল্লাহ। পঞ্চম বলটি বৈচিত্র আনতে ক্রিজের অনেকটা পেছন থেকে করেন বোলার। হয় এক রান। শেষ বলটি ইয়র্কার করার পরিকল্পনা ছিল। হয়েছিলও অনেকটা, কিন্তু লাইনটা হয়ে যায় লেগ স্টাম্পে। তাতেই একটি লেগ বাই নেওয়ার সুযোগ পায় ব্যাটসম্যান। জিতে যায় ভারত।

মাহমুদউল্লাহ শেষ ওভারে স্নায়ু ধরে রাখতে পারবেন ধরে নিয়েই আস্থা রেখেছিলেন অধিনায়ক। ম্যাচ টাই হলে সুপার ওভার হতো, সেটিও ছিল মাশরাফির মাথায়।

“মাহমুদউল্লাহকে বলেছিলাম যে ওরা মারতে যাক। মারলে উইকেট পড়ার চান্স আছে। বিশেষ করে কুলদীপের ক্ষেত্রে চাচ্ছিলাম যেন মারতে গিয়ে মিস হিট করে। কেদার যাদব মোটামুটি স্বীকৃত ব্যাটসম্যান, ওর ক্যালকুলেশন হয়ত আরও ভালো হবে। ৫ নম্বর বলটা যদি কানায় না লেগে উইকেটে থাকত, তাহলে অন্যরকম হতে পারত। আসলে এসব সময়ে ভাগ্যের সহায়তা দরকার হয়।”

“ফাইনালে সুপার ওভারের নিয়ম ছিল। শেষ বলে ডট বা আউট হলেই হতো। রিয়াদ চেষ্টা করেছে। ইয়র্কারই করেছে। প্যাডে লেগে এক রান হয়ে গেছে। রিয়াদ দারুণ বল করেছে। ওই সময়েও যেভাবে বল করেছে তা অসাধারণ। ৬ রান করতে ওদের ৬ বলই লেগেছে, দারুণ বোলিং বলতেই হবে।”