ব্যাটসম্যানদের চোখে তো ক্যামেরা নেই: রশিদ

উন্নত হচ্ছে প্রযুক্তি, বাড়ছে বিশ্লেষণের পরিধি। আঙুল আর কবজির অবস্থান, গ্রিপ আর হাত থেকে বল পড়ে ফেলার উপায় নিয়ে নিত্য চলছে গবেষণা। সময়ের সঙ্গে বাড়ছে চ্যালেঞ্জ। এরপরও যেন বাড়ছে রশিদ খানের বলের ধার! প্রযুক্তির কাছে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় একটুও নেই এই লেগ স্পিনারের। বরং অগাধ আস্থা তার নিজের স্কিলে।

ক্রীড়া প্রতিবেদক আবু ধাবি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2018, 03:23 AM
Updated : 21 Sept 2018, 03:23 AM

বছর তিনেক আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকেই নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন রশিদ। শুরুতে আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষেই দেখা গেছে তার বোলিং জাদু। পরে সুযোগ পেয়ে বড় দলগুলোর বিপক্ষেও দেখিয়েছেন বড় পারফরম্যান্স। হয়ে উঠেছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সময়ের সেরা স্পিনার।

ওয়ানডেতে দ্রুততম একশ উইকেটের রেকর্ড গড়েছেন রশিদ আগের রেকর্ডকে বেশ পেছনে ফেলে। টি-টোয়েন্টিতে পঞ্চাশ উইকেটে পৌঁছেছেন দ্বিতীয় দ্রুততম হিসেবে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে প্রতিটি দলই সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করে তাকে খেলার উপায় এবং সেটির প্রস্তুতিতে। তবু বেড়ে চলেছে রশিদের সাফল্যের হার। এবারের এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেও যথারীতি দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯ ওভারে ১৩ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।

এই ২ উইকেটে স্পর্শ করেছেন তিনি আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ওয়ানডে উইকেটের রেকর্ড। ১০৩ ম্যাচে ১১২ উইকেট মোহাম্মদ নবির, রশিদ ছুঁয়ে ফেললেন কেবল ৪৯ ম্যাচ খেলেই।

ক্রিকেট বিশ্ব জুড়ে প্রায় সবগুলো টি-টোয়েন্টি লিগেই রশিদের পদচারণা নিয়মিত। এত খেলার পরও তাকে খেলতে হিমশিম খাচ্ছে বড় বড় সব ব্যাটসম্যান। সাফল্যে রাঙিয়ে চলেছেন তিনি বিশ্বের সব প্রান্তের ২২ গজ।

প্রযুক্তির এই যুগে সব ক্রিকেটারের শক্তি-দুর্বলতা বের করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয় না। দারুণভাবে শুরু করলেও পরে অনেক ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার অকালে থমকে বা শেষ হয়ে গেছে প্রযুক্তি দিয়ে প্রতিপক্ষ বিশ্লেষণ করায়। কাঁটাছেড়া কম চলছে না রশিদের বোলিং নিয়ে। তবে খুব বেশি লাভের প্রমাণ মেলেনি।

সামনে হয়তো আরও প্রযুক্তির ব্যবহার হবে, আরও নিবিড় গবেষণা হবে রশিদকে নিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের পর এই লেগ স্পিনার বললেন, প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ তিনি উপভোগ করেন দারুণভাবে।

“আমি এটা উপভোগ করি। এই যে ভিডিওসহ আরও প্রযুক্তি আসছে, আমি এসব উপভোগ করি। দেখি এসবে কতটা কাজ হয় এবং কিভাবে ক্রিকেটাররা পরিকল্পনা করে। জুম করে ভিডিও দেখা হচ্ছে। কিন্তু মাঠে ব্যাটসম্যানের চোখে তো ক্যামেরা থাকে না। যতোই তাকে জুম করে দেখিয়ে দিন, মাঠে গিয়ে খালি চোখেই দেখতে হয়।”

নিজের সহজাত সামর্থ্যই তাকে আলাদা করে তুলেছে অন্যদের চেয়ে। তবে প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ জিততে শুধু সহজাত ক্ষমতা নিয়েই বসে নেই, নিত্য নতুন কাজ করছেন নতুন ডেলিভারি নিয়েও।

“আমি যে গতিতে বল করি, সেটা আমাকে বাড়তি সুবিধা দেয়। ‘কুইক আর্ম অ্যাকশন’ আমাকে অনেক সাহায্য করে। আমি ভিডিওকে খুব বেশি গুরুত্ব দেই না। ব্যাটসম্যানরা এসব দেখে, সেটি আমি উপভোগ করি। এসব থেকে আমি নিজেও শিখি। আর নেটে আমি সবসময়ই আলাদা কিছু অনুশীলন করেই চলেছি। ম্যাচে সেগুলো দেখাইনি অবশ্য, এখনও কাজ করে চলছি।”