ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়ে হারল হংকং

ভারতের মতো ব্যাটিংয়ে শেষটায় তালগোল পাকালো হংকংও। শুরুর জুটির দারুণ ব্যাটিংয়ে ভারত বধের আশা জাগানো দলটি পারল না শেষ পর্যন্ত। শিখর ধাওয়ানের সেঞ্চুরিতে লড়াইয়ের পুঁজি পাওয়া ভারত এশিয়া কাপ শুরু করল জয় দিয়ে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2018, 07:58 PM
Updated : 18 Sept 2018, 08:01 PM

‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ২৬ রানে জিতেছে ভারত। ২৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় হংকং থমকে যায় ২৫৯ রানে। রোহিত শর্মাদের এই জয়ে সুপার ফোরে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের সঙ্গী হল ভারত ও পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল হংকং।

জয়ের জন্য শেষ ১৬ ওভারে ১১২ রান প্রয়োজন ছিল হংকংয়ের, হাতে ছিল ১০ উইকেট। কিন্তু সে সময়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে স্বস্তির জয় তুলে নেয় রবি শাস্ত্রির শিষ্যরা।

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা ভালো করে ভারত। দ্বিতীয় উইকেটে অম্বাতি রাইডুর সঙ্গে ১১৬ রানের জুটিতে দলকে দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করান ধাওয়ান। ৭০ বলে দুই ছক্কা আর তিন চারে ৬০ রান করে ফিরে যান রাইডু।

ছবি: আইসিসি

দিনেশ কার্তিকের সঙ্গে ৭৯ রানের আরেকটি দারুণ জুটিতে ভারতকে শেষের ঝড় তোলার মঞ্চ তৈরি করে দেন ধাওয়ান। ২ উইকেটে ২৩৭ রান নিয়ে ডেথ ওভারে যায় ভারত।

কিন্তু হাতে ৮ উইকেট আর ক্রিজে দুই থিতু ব্যাটসম্যান থাকার পরও প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেনি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এক সময়ে তিনশর বেশি রানে নজর রাখা দলটি শেষ ১০ ওভারে মাত্র ৪৮ যোগ করে থামে ২৮৫ রানে।

১২০ বলে ১৫ চার আর দুই ছক্কায় ১২৭ রান করে ফিরেন ধাওয়ান। ওয়ানডেতে এটি বাঁহাতি এই ওপেনারের চতুর্দশ সেঞ্চুরি। 

মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া হংকংয়ের অনিয়মিত অফ স্পিনার কিনচিত সাহ ৩৯ রানে নেন ৩ উইকেট। তার শেষের দারুণ বোলিংয়ে তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য দিতে পারেনি ভারত।

অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর কুমার, অভিষিক্ত মোহাম্মদ খলিল কিংবা শার্দুল ঠাকুর- ভারতের তিন পেসারের কেউ নতুন বলে উইকেট এনে দিতে পারেননি। শুরু থেকে শট খেলতে শুরু করেন নিজাকাত খান। একটু সময় নিয়ে থিতু হয়ে আনশুমান রাথও মনোযোগ দেন রানের গতি বাড়ানোর দিকে। তাদের ব্যাটে হংকং পায় প্রথম শতরানের উদ্বোধনী জুটি।

দুই ওপেনারের ব্যাটে তরতর করে এগিয়ে যায় হংকং। দুই তুরুপের তাস যুজবেন্দ্র চেহেল ও কুলদীপ যাদবও পরীক্ষায় ফেলতে পারছিলেন না নিজাকাত-আনশুমানকে। দুই জনের ব্যাটে হংকং পেয়ে যায় নিজেদের ইতিহাসের সেরা জুটি।

ছবি: আইসিসি

২০১৬ সালে দেশের মাটিতে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে ১৭০ রান করেছিলেন আনশুমান-নিজাকাত। সেটা ছাড়িয়ে দুই জনে যোগ করেন ১৭৪ রান। ৩৪.১ ওভার স্থায়ী এই জুটি ভাঙেন কুলদীপ। রিস্ট স্পিনারের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে এক্সট্রা কাভারে ধরা পড়েন হংকং অধিনায়ক। ৯৭ বলে খেলা আনশুমানের ৭৩ বলের ইনিংসে ৪টি চারের পাশে ছক্কা একটি।

২০১৬ সালে ৯৪ রানে ফিরেছিলেন নিজাকাত। গত বছর করেছিলেন ৯৩। এবার আউট হলেন ৯২ রানে। সেঞ্চুরি অধরাই থেকে গেল এই ওপেনারের। ১১৫ বলের ইনিংসে ১২ চার ও ১ ছক্কা হাঁকানো নিজাকাতকে কট বিহাইন্ড করে নিজের প্রথম উইকেট নেন খলিল।

১ রানের ভেতরে দুই ওপেনারকে হারানো হংকং আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। শেষের দিকে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে দলটি কোনোমতে আড়াইশ ছাড়ায়।   

লেগ স্পিনার চেহেল ও বাঁহাতি পেসার খলিল নেন তিনটি করে উইকেট। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদীপ দুটি।

নিজেদের গ্রুপের শেষ ম্যাচে বুধবার পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৫০ ওভারে ২৮৫/৭ (রোহিত ২৩, ধাওয়ান ১২৭, রাইডু ৬০, কার্তিক ৩৩, ধোনি ০, কেদার ২৮*, ভুবনেশ্বর ৯, ঠাকুর ০, কুলদীপ ০*; আফজাল ০/৩৪, নওয়াজ ১/৫০, এজাজ ১/৪১, এহসান ২/৬৫, নাদিম ০/৩৯, নিজাকাত ০/১৫, কিনচিত ৩/৩৯)

হংকং: ৫০ ওভারে ২৫৯/৮ (নিজাকাত ৯২, আনশুমান ৭৩, বাবর ১৮, কার্টার ৩, শাহ ১৭, এহসান ২২, এজাজ ০, স্কট ৭, আফজাল ১২*, নওয়াজ ২*; ভুবনেশ্বর ০/৫০, খলিল ৩/৪৮, ঠাকুর ০/৪১, চেহেল ৩/৪৬, কুলদীপ ২/৪২, কেদার ০/২৮)

ফল: ভারত ২৬ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শিখর ধাওয়ান