ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই ব্যাটিংয়ের সময় চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন তামিম। পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ধরা পড়ে কবজিতে চিড়। মাঠের বাইরে থাকতে হবে অন্তত ছয় সপ্তাহ। এই ম্যাচ তো বটেই, তার জন্য শেষ টুর্নামেন্টও। কিন্তু কে জানত, আসলে তখনও শেষ নয়!
হাসপাতাল থেকে মাঠে ফিরে স্লিংয়ে হাত ঝুলিয়ে ড্রেসিং রুমে ছিলেন তামিম। শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারাল দল। এক পাশে মুশফিক, তাকে সঙ্গ দেওয়ার নেই কেউ। দলও নেই পুরোপুরি স্বস্তির অবস্থানে। দলকে জয়ের মতো অবস্থানে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আবার উইকেটে গেলেন তামিম। গোটা মাঠে, টিভি পর্দার সামনে তখন বিস্ময়ের ঢেউ। বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ধারাভাষ্যকাররাও।
যার বল খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন হাতে, আবার উইকেটে গিয়ে এক হাতে ব্যাট করে সেই সুরাঙ্গা লাকমলের বলই সামলালেন তামিম। দিয়ে গেলেন সঙ্গ। বাকিটা করেছেন মুশফিক। তুলেছেন ঝড়। ওই সময়ে ২.৩ ওভারে আসে ৩২ রান। বাংলাদেশের স্কোরকে যা করে সমৃদ্ধ। গড়ে দেয় জয়ের পথ। যে পথ ধরে এগিয়ে বোলাররা দলকে এনে দেন ১৩৭ রানের জয়।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তামিমের সাহসিকতা ও নিবেদনের প্রসঙ্গ তুললেন ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা। মুগ্ধতা জাগানিয়া কণ্ঠে মাশরাফি গর্ব ভরে বললেন, “আমি শুধু ওকে নিয়ে একটা কথাই বলতে পারি, লোকের উচিত ওকে মনে রাখা।”
তবে ইনিংসের মেরুদণ্ড ছিল যে জুটি, সেটির কথাও ভোলেননি মাশরাফি। প্রথম ওভারেই দুই উইকেট হারিয়েছিল দল। দ্বিতীয় ওভারে বাইরে চলে চান তামিম। সেই বিপর্যয়ে দাঁড়িয়ে ১৪২ বলে ১৩১ রানে অসাধারণ জুটি গড়েন মুশফিক ও মোহাম্মদ মিঠুন। ওয়ানডেতে ১০ রানের মধ্যে প্রথম ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশের প্রথম শতরানের জুটি এটিই।
৬৩ রানে ফেরেন দলে ফেরা মিঠুন। মুশফিক শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে খেলেছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংস, ১৫০ বলে ১৪৪। জয়ের পর অধিনায়কের আলাদা প্রশংসা পেল মুশফিক-মিঠুনের সেই জুটি।
“মুশফিক ও মিঠুনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই হবে। চাপের মধ্যে ওরা সত্যিই খুব ভালো ব্যাট করেছে। প্রথম ওভারে দুই উইকেট হারালে সবসময়ই চাপ থাকে। তামিমও ব্যাট করতে পারেনি। তার পরও মুশফিক ও মিঠুন যেভাবে ব্যাট করেছে, সেটা ছিল দারুণ।