ছয়-সাতের দাবি মেটানোর চ্যালেঞ্জে মিঠুন

সমস্যা পুরোনো। দাওয়াই নতুন। ব্যাটিং অর্ডারে ছয়-সাত নম্বর পজিশনে কার্যকর একজন ব্যাটসম্যান পেতে নতুন বাজি মোহাম্মদ মিঠুন। চ্যালেঞ্জটা সহজ নয়, জানেন দলে ফেরা ব্যাটসম্যান। তবে এটিকেই করে নিতে চান সুযোগ। কঠিন চ্যালেঞ্জ জিততে চান সহজাত ব্যাটিংয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2018, 12:01 PM
Updated : 2 Sept 2018, 12:01 PM

বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং অর্ডারে কয়েকটি পজিশন নিয়ে যেমন দুশ্চিন্তার ব্যাপার নেই, তেমনি কয়েকটি পজিশন নিয়ে দুর্ভাবনাও দীর্ঘদিনের। তিন নম্বর পজিশন যেমন ছিল একটি। সম্প্রতি তিনে নেমে সাকিব আল হাসানের পারফরম্যান্স ইঙ্গিত দিচ্ছে সেই সমস্যা সমাধানের। কিন্তু ছয়-সাতের সমাধান মিলছে না এখনও।

২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেনরা পারেননি এই জায়গা নিজের করে নিতে। ছয়ে নেমে মাহমুদউল্লাহর পারফরম্যান্স এই সময়টায় দুর্দান্ত। তবে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান গত কিছুদিনে খেলছেন মূলত পাঁচে।

নিষিদ্ধ না হলে এশিয়া কাপেও সুযোগ পেতেন সাব্বির, টিম ম্যানেজমেন্টের বিভিন্ন সূত্র থকে জানা গেছে এমনটিই। তবে তার নিষেধাজ্ঞা খুলে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। যে দুয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে মিঠুন।

দলে নেওয়ার পর অধিনায়ক, নির্বাচকেরা মিঠুনকে খানিকটা ইঙ্গিত দিয়েছেন তার সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে। মিঠুনও চ্যালেঞ্জটাকে লুফে নিচ্ছেন সাদরে। রোববার মিরপুর অনুশীলরে ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন, এই পজিশনের দাবি মেটানোর বিশ্বাস তার আছে।

“আমার ক্যারিয়ারের প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত আমি যা খেলেছি, ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করেছি সবসময়। এমনিতেই আমি উইকেটে নেমে খুব বেশি সময় নেই না সেট হতে। প্রথম থেকেই চেষ্টা করি রানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে, স্ট্রাইক রোটেট করতে। সুতরাং ছয় কিংবা সাত নম্বরে কিন্তু সেটাই গুরুত্বপূর্ণ যে নেমেই স্ট্রাইক রোটেট করতে হবে।”

“এটি আমার ধরনেই আছে, তাই খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। ছোটবেলা থেকে এভাবেই খেলে অভ্যস্ত। হয়তো আগে নতুন বলে খেলতাম বা ওপরে অনেক সময় নিয়ে খেলতাম, এখন সময় কম পাব। তবে ছয় কিংবা সাতে খেললে ১১০-১১৫ বা ১২০-১৩০ স্ট্রাইক রেটে খেলতে হবে। একেক সময় পরিস্থিতি একেকরকম দাবি করবে। এই ধরনের স্ট্রাইক রেটে খেললে আমার মনে হয় যথেষ্ট ভালো হবে।”

এই পজিশনে আগে যাদেরকে নিয়ে চেষ্টা করেছে দল, দারুণ প্রতিভাবান ছিলেন তারাও। আশা ছিল অনেক। সময়ে ফুটো হয়ে গেছে সেই আশার বেলুন। মিঠুনকে নিয়েও তাই নতুন করে স্বপ্ন দেখার চেয়ে শঙ্কাই যেন ভর করছে বেশি। তিনি নিজে অবশ্য পেছন ফিরে না তাকিয়ে উদ্ভাসিত হতে চান আপন আলোয়।

“দেখুন, কাউকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারটিতে আমি বিশ্বাসী না। কারণ যার জায়গায় খেলব, সে হয়তো এক ধরনের ভূমিকা পালন করত, আমি ভিন্ন ভূমিকা পালন করব। আমি পুরোপুরি আলাদা একজন মানুষ। আমি হয়তো তার থেকেও ভালো করতে পারি। আমার অবশ্যই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এবং আমার দিক থেকে সম্ভাব্য সেরাটি দেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।”

তবে মূল ভাবনা ছয় নম্বর পজিশন নিয়ে হলেও, মিঠুনকে নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের আরেকটি স্বস্তির জায়গা, ব্যাট করতে পারেন তিনি সব পজিশনেই। টপ অর্ডারে যেমন মানিয়ে নিতে পারেন, সমস্যা নেই মিডল অর্ডারেও। মিঠুনও দলের চাওয়ার সঙ্গে নিজেকে যে কোনো জায়গায় খাপ খাইয়ে নিতে প্রস্তুত।

“দলের যখন কিছু প্রয়োজন হয়, তখন আসলে নিজের পছন্দকে ফোকাস করার কিছু নেই। প্রতিটি মানুষেরই জীবনে লক্ষ্য থাকে। তার সবই যে পূরণ হবে, এমন নয়। দলের স্বার্থে সব জায়গার জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। যেখানেই আমি খেলব, চেষ্টা করব শতভাগ দেয়ার এবং চাইব আমাকে দিয়ে যেন দল উপকৃত হয়।”