রবির চুক্তি বাতিলের কারণ গ্রহণযোগ্য নয়: বিসিবি

মেয়াদ শেষের অনেক আগেই রবি স্পন্সরশিপ চুক্তি বাতিল করায় বিস্মিত বিসিবি। চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে রবি যে কারণ দেখাচ্ছে, সেটিও গ্রহণযোগ্য নয় বিসিবির কাছে। তবে রবির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে শিগগিরই নতুন স্পন্সর খোঁজার প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে ক্রিকেট বোর্ড।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2018, 11:40 AM
Updated : 27 August 2018, 11:40 AM

বিসিবির সঙ্গে রবির স্পন্সরশিপ চুক্তির দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হয়েছিল গত বছরের জুলাইয়ে, শেষ হওয়ার কথা আগামী বছরের জুনে। কিন্তু রোববার এক বিবৃতিতে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।

বিবৃতিতে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে রবি আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছিল, চুক্তিটি প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। সোমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জানালেন, তাদের কাছে রবি কারণ জানিয়েছে। তবে সেই কারণ বোর্ড গ্রহণ করতে রাজি নয়।

“তারা মূলত যে কারণ বলেছে, ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপে সাংঘর্ষিক ব্র্যান্ড নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল। সেটা পুরোপুরিভাবে প্রতিকার না হওয়াতেই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে আমরা এই বিষয়কে পুরোপুরি গ্রহণ করতে রাজি নই।”

“আমাদের ধারণা, এটা তাদের অন্য কোনো কৌশলগত কারণেও হতে পারে। কারণ আমরা রবির সঙ্গে আলোচনার পর আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। সাকিব আল হাসানের যে চুক্তি ছিল, তিনি তা বাতিল করেছেন। তামিম ইকবালও গ্রামীণ ফোনের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছেন। মাশরাফি বিন মুর্তজার গ্রামীণ ফোনের সঙ্গে চুক্তিও বাতিলের প্রক্রিয়া চলছিল। তারা আমাদের কাছে যা বলেছে তা গ্রহণযাগ্য নয়। আমরা যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলাম, তারা সে সম্পর্কে অবগত আছে। আমাদের কাছে তাই সিদ্ধান্তটি বিস্ময়কর।”

ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপের ক্ষেত্রেও সাধারণত ক্রিকেট বোর্ডের অনুমতি নিতে হয় ক্রিকেটারদের। মাশরাফি-সাকিবদের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ছিল না। তবে ২০১৫ সালে যখন প্রথম মেয়াদে স্পন্সর হয়েছিল রবি, তখন ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগতভাবে অন্য ফোন কোম্পানির স্পন্সর হওয়ায় বাধা ছিল না। পরেরবার রবি শর্ত জুড়ে দেওয়ার পর জটিলতা সৃষ্টি হয়, দাবি বিসিবির প্রধান নির্বাহীর।

“ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপের চুক্তি এককজনের একেক সময়ে হয়েছে। মাশরাফির চুক্তিটা যখন হয়েছে, তখন রবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক ওই ধারাটা ছিল না। আগে রবির যে চুক্তি ছিল দুই বছরের, তখন এটা ছিল না। পরে হয়েছে। সাকিবের বিষয় বা তামিমের বিষয় যখন এসেছে, আমরা ওইভাবে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। রবির সঙ্গে যে সেটলমেন্ট হয়েছিল, তাতেও বলেছি যে আমরা বের হয়ে আসার চেষ্টা করছি।”

“এসব চুক্তি যখন হয়, ওই ব্র্যান্ড কিন্তু ব্যাপক প্রচার চালায়। এগুলো হুট করে তুলে নিয়ে আসাটাও সময়ের ব্যাপার। আমরা আশা করেছিলাম রবি সেই সময়টুকু আমাদের দেবে।” 

চুক্তি বাতিলের কারণ নিয়ে আপত্তি থাকলও বাস্তবতা মেনেই নিয়েছে বিসিবি। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু এশিয়া কাপ। তার আগেই নতুন স্পন্সর পাওয়ার আশা করছে বিসিবি।

“বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্পন্সরশিপ থেক রবি তাদেরকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আমরা বিষয়টি গ্রহণ করে নিয়েছি এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে জানিয়ে দিয়েছি। এখন অবশ্যই নতুন স্পন্সর দেখতে হবে। দু-একদিনের মধ্যেই আমরা সার্কুলারে যাব। চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব নেওয়ার জন্য। সেটি শুধু এশিয়া কাপও হতে পারে, আবার দীর্ঘমেয়াদীও হতে পারে।”

নতুন স্পন্সর পাওয়ার পর এবারের শিক্ষা কাজে লাগাতে চায় বোর্ড। বিসিবির স্পন্সরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো ব্র্যান্ডকে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত স্পন্সর হতে দেবে না বোর্ড, জানালেন প্রধান নির্বাহী।

“ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা ও টিম স্পন্সরশিপ, দুটি একসঙ্গে হয় না। করা যাচ্ছে না। কোনো একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে কেউ ম্যাসিভ ব্র্যান্ডিংয়ে গেলে তা টিম স্পন্সরশিপকে বাধাগ্রস্থ করে। সেক্ষেত্রে এখন থেকে যেটি হবে, বোর্ডের স্পন্সরশিপের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো ব্র্যান্ডের সঙ্গে ক্রিকেটাররা চুক্তি করতে পারবে না।”