দারুণ জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করলেন তামিম ইকবাল। ঝড়ো ফিফটিতে শেষ করলেন মাহমুদউল্লাহ। মাঝখানে ঝড় তুলে গেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রেকর্ড সংগ্রহ পেল বাংলাদেশ। বাকিটা সারলেন বোলাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয়বারের মতো সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2018, 01:07 PM
Updated : 28 July 2018, 10:40 PM

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় সিরিজ জয়
 
তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে জেসন হোল্ডারের দলকে ১৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ ঘরে তুলেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। 
 
বাংলাদেশের দেওয়া ৩০২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ থামে ২৮৩ রানে।
 
দ্বিতীয়বারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে তৃতীয়বারের মতো ওয়ানডে সিরিজে হারাল দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। 
 
জয়ের জন্য শেষ ২ ওভারে ৩৪ রান দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। রোভম্যান পাওয়েলের খুনে ব্যাটিংয়ে সেটা সম্ভব মনে হচ্ছিল। তবে ৪৯তম ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচের পাল্লা বাংলাদেশের দিকে ঘুরিয়ে দেন রুবেল হোসেন। 
 
জয়ের জন্য শেষ ওভারে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ২৮ রান। মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান রোভম্যান পাওয়েল। তবে বাঁহাতি পেসার চাপে ভেঙে পড়েননি। শেষ ৫ বলে দেন মাত্র তিনটি সিঙ্গেলস।
 
আশা জাগিয়েও দলকে জেতাতে পারলেন না রোভম্যান পাওয়েল। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ৪১ বলে অপরাজিত থাকেন ৭৪ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩০১/৬ (তামিম ১০৩, এনামুল ১০, সাকিব ৩৭, মুশফিক ১২, মাহমুদউল্লাহ ৬৭*, মাশরাফি ৩৬, সাব্বির ১২, মোসাদ্দেক ১১*; কট্রেল ১/৫৯, হোল্ডার ২/৫৫, বিশু ১/৪২, পল ০/৭৭, নার্স ২/৫৩, গেইল ০/১৪)
 
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৮৩/৬ (গেইল ৭৩, লুইস ৩৩, হোপ ৬৪, হেটমায়ার ৩০, কাইরন পাওয়েল ৪, রোভম্যান পাওয়েল ৭৪*, হোল্ডার ৯, নার্স ৫*; মাশরাফি ২/৬৩, মিরাজ ১/৪৫, মুস্তাফিজ ১/৬৩, মোসাদ্দেক ১০/০, মাহমুদউল্লাহ ০/২০, রুবেল ১/৩৪, সাকিব ০/৪৫)
 
ফল: বাংলাদেশ ১৮ রানে জয়ী।

রুবেলের দুর্দান্ত ওভার
 
৪৯তম ওভারে রুবেল হোসেনকে আক্রমণে ফেরালেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। অধিনায়ককে হতাশ করেননি রুবেল। দুর্দান্ত বোলিংয়ে দিয়েছেন মাত্র ৬ রান। তার অসাধারণ বোলিংয়ে সিরিজ জয়ের আশা উজ্জ্বল হয়েছে বাংলাদেশের। 
 
জয়ের জন্য শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ২৮ রান। স্বাগতিকদের হাতে আছে ৪ উইকেট।

হোল্ডারকে ফেরালেন মুস্তাফিজ
 
দ্বিতীয় স্পেলে খরুচে বোলিং করা মুস্তাফিজুর রহমান তৃতীয় স্পেলে ফিরেই আঘাত হেনেছেন। ফিরিয়ে দিয়েছেন জেসন হোল্ডারকে। 
 
এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে মুস্তাফিজকে উড়াতে চেয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। লং অফ থেকে ছুটে গিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নেন রুবেল হোসেন। ১০ বলে ৯ রান করে ফিরে যান হোল্ডার। ভাঙে তার সঙ্গে রোভম্যান পাওয়েলের ৪ ওভার স্থায়ী ৩৮ রানের জুটি। 
 
৪৭.১ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ২৬২/৬। ক্রিজে পাওয়েলের সঙ্গী অ্যাশলি নার্স।

পাওয়েলের ঝড়ো ফিফটি
 
ঝড়ো ফিফটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে রেখেছেন রোভম্যান পাওয়েল। তার ব্যাটে সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে স্বাগতিকরা। 
 
২৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন রোভম্যান পাওয়েল। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে তিনটি করে ছক্কা-চার। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো ব্যাটসম্যানের এটি দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি।
 
৪৬ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ২৫১/৫। রোভম্যান পাওয়েল ৫০ ও জেসন হোল্ডার ৭ রানে ব্যাট করছেন।

হোপকে ফেরালেন মাশরাফি
 
ফিফটি করার পর রানের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন শেই হোপ। তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। 
 
স্লগ করে মিপ মিডউইকেট দিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ককে উড়াতে চেয়েছিলেন হোপ। মাশরাফির অফ কাটারে ঠিক মতো টাইমিং করতে পারেননি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ক্যাচ মুঠোয় নেন সাকিব আল হাসান। 
 
৯৪ বলে পাঁচটি চারে ৬৪ রান করে ফিরেন হোপ। 
 
৪৪ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ২২৯/৫। ক্রিজে রোভম্যান পাওয়েলের সঙ্গী জেসন হোল্ডার। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের চাই আরও ৭৩ রান।

কাইরন পাওয়েলের রান আউটে চাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
 
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে জীবন পেলেও তা কাজে লাগাতে পারলেন কাইরন পাওয়েল। একাদশে ফেরা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সেই ওভারেই ফিরে গেলেন রান আউট হয়ে। 
 
শেই হোপ বল কাভারে পাঠালে রানের জন্য ছুটেন কাইরন পাওয়েল। হোপ তাতে সাড়া দেননি। মাশরাফি বিন মুর্তজার থ্রো ধরে বেলস ফেলে দেন মিরাজ। ৭ বলে ৪ রান করে ফিরে যান বাঁহাতি কাইরন পাওয়েল।
 
৩৮ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৮০/৪। ক্রিজে হোপের সঙ্গী রোভম্যান পাওয়েল।

৭৭ বলে হোপের ফিফটি
 
তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ায় মন্থর এক ফিফটি করলেন শেই হোপ। একবার জীবন পাওয়া ডানহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান পঞ্চশ ছুয়েছেন ৭৭ বলে। 
 
ফিফটি পাওয়ার পথে চারটি বাউন্ডারি হাঁকান হোপ।

কাইরন পাওয়েলকে জীবন দিলেন সাব্বির
 
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আবার হাতছাড়া হল সুযোগ। এবার কাইরন পাওয়েলের ক্যাচ ছাড়লেন সাব্বির রহমান। 
 
লং অন দিয়ে অফ স্পিনারকে উড়াতে চেয়েছিলেন পাওয়েল। এগিয়ে এসে ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি সাব্বির। সেই সময় ২ রানে ব্যাট করছিলেন পাওয়েল।

হেটমায়ারকে ফেরালেন মিরাজ
 
সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা ব্যাটসম্যান শিমরন হেটমায়ারকে বিদায় করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ভেঙেছেন স্বাগতিকদের ৬৭ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।
 
স্টাম্পের বল লেগে উড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন হেটমায়ার। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান দ্রুত গতির বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি। দারুণ এক বলে ফিরে যান বোল্ড হয়ে।
 
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা হেটমায়ার ফিরেন ৪২ বলে দুটি চারে ৩০ রান করে।
 
৩৬ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৭৩/৩। ক্রিজে শেই হোপের সঙ্গী কাইরন পাওয়েল। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের চাই আরও ১২৯ রান।

তৃতীয় উইকেটেও পঞ্চাশ রানের জুটি
 
টানা তিনটি উইকেটে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 
 
উদ্বোধনী জুটি পঞ্চাশ ছুঁয়েছিল ৫৪ বলে। দ্বিতীয় উইকেট জুটির ফিফটি আসে ৬০ বলে। শেই হোপ ও শিমরন হেটমায়ারের তৃতীয় উইকেট জুটির রান পঞ্চাশে যায় ৬৫ বলে। ধীরে ধীরে রান সংগ্রহ যেন কঠিন হয়ে পড়ছে স্বাগতিকদের জন্য।
 
৩৪ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৬৩/২। হোপ ৪২ ও হেটমায়ার ২৮ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের চাই আরও ১৩৯ রান।

হোপকে জীবন দিলেন রুবেল
 
আক্রমণে ফিরেই উইকেট পেতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বলে শেই হোপকে জীবন দিয়েছেন রুবেল হোসেন। 
 
প্রচুর ডট বল খেলা হোপ ঝটফট করছেন রানের জন্য। চেপে বসা ফাঁসটা আলগা করতে চেয়েছিলেন মিরাজকে ছক্কা হাঁকিয়ে। টাইমিং হয়নি, ক্যাচ উঠে যায় এক্সট্রা কাভারে। লং অফ থেকে ছুটে গিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি রুবেল। 
 
সে সময় ৩৬ রানে ব্যাট করছিলেন হোপ। 
 
৩২ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৫৩/২। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের প্রয়োজন আরও ১৪৯ রান।

বিপজ্জনক গেইলকে ফেরালেন রুবেল

স্ট্রেইট বাউন্ডারি বেশ ছোট। তার সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাঁচটি ছক্কা তুলে নিয়েছিলেন ক্রিস গেইল। রুবেল হোসেনের বলে চেষ্টা করেছিলেন আরেকটি ছক্কা হাঁকিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড নিজের করে নেওয়ার। সেই চেষ্টা সফল হয়নি। উল্টো গেইল ঝড় থামিয়েছেন রুবেল।

লং অন দিয়ে রুবেলকে উড়াতে চেয়েছিলেন গেইল। ঠিক মতো টাইমিং করতে পারেননি। ধরা পড়েন মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে।

৬৬ বলে ৭৩ রান করে ফিরেন গেইল। এই ম্যাচের ৫ ছক্কা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ছক্কা হল ৪৭৬টি। স্পর্শ করলেন পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদির সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড।

২২ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১০৬/২। ক্রিজে শেই হোপের সঙ্গী শিমরন হেটমায়ার।

দ্বিতীয় উইকেটেও পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি
 
প্রথম উইকেটের মতো দ্বিতীয় উইকেটেও পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টপ অর্ডার বড় লক্ষ্য তাড়ায় কক্ষপথে রেখেছে স্বাগতিকদের। 
 
৬০ বলে ফিফটি স্পর্শ করে ক্রিস গেইল ও শেই হোপের দ্বিতীয় উইকেট জুটির রান।
 
২১ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১০৪/১। গেইল ৭৩ ও হোপ ১৩ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের চাই আরও ১৯৮ রান। 

গেইলের ফিফটি
 
বড় রান তাড়ায় দলকে পথ দেখাচ্ছেন ক্রিস গেইল। বিস্ফোরক এই ওপেনার পেয়েছেন সিরিজে নিজের প্রথম ফিফটি। 
 
মুস্তাফিজুর রহমানের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চশ স্পর্শ করেন গেইল। ৪০ বলে ক্যারিয়ারের ৪৯তম ফিফটি পাওয়ার পথে হাঁকান ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। 
 
১৫ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৭৬/১। গেইল ৫০ ও শেই হোপ ৮ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের চাই আরও ২২৬ রান।‘

লুইসকে ফেরালেন মাশরাফি
 
দারুণ এক ডেলিভারিতে নড়বড়ে এভিন লুইসকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাত হেনেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ভেঙেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুর জুটি। 
 
অফ স্টাম্পের বাইরের লাফিয়ে উঠা অফ কাটারে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান লুইস। বাঁহাতি ওপেনার ৩৩ বলে করেন ১৩। সিরিজে এ নিয়ে তৃতীয় লুইসকে আউট করলেন মাশরাফি। 
 
১০.১ ওভারে লুইস ফেরার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৫৩/১। ক্রিজে ক্রিস গেইলের সঙ্গী শেই হোপ।

পাওয়ার প্লেতে উইকেটশূন্য বাংলাদেশ
 
পাওয়ার প্লেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটিকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি বাংলাদেশ। ক্রিস গেইল ও এভিন লুইস স্বাগতিকদের এনে দিয়েছেন ভালো শুরু।
 
দুই ওপেনারের শুরুটা দুই রকম। গেইল প্রথম থেকেই খেলছেন মাঝ ব্যাটে। এক-দুই করে এগিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে তুলে নিচ্ছেন বাউন্ডারি। 
 
ক্যারিয়ারের প্রথম হাজার রান ছোঁয়া লুইস সংগ্রাম করছেন মাঝ ব্যাটে খেলতে। গ্যাপ খুঁজে পাচ্ছেন কমই। পাওয়ার প্লেতে তার ব্যাট থেকে এসে মোটে একটি বাউন্ডারি।   
 
১০ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৫৩/০। গেইল ৩৫ ও লুইস ১৩ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের চাই আরও ২৪৯ রান।

জিততে রেকর্ড গড়তে হবে স্বাগতিকদের
 
সিরিজ জিততে রেকর্ড গড়তে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ওয়ার্নার পার্কে প্রথম দল হিসেবে জিততে হবে তিনশ রানের লক্ষ্য তাড়া করে। 
 
সেন্ট কিটসের এই মাঠে এর আগে সাতবার হয়েছে তিনশ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো দলই তিনশ ছুঁতে পারেনি। 
 
ওয়ার্নার পার্কে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড স্বাগতিকদের অধিকারে। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৬৬ রান তাড়া করে ৪ উইকেটে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ
 
শেষটায় ঝড় তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো তিনশ রানের সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের সেঞ্চুরির পর অপরাজিত ফিফটিতে দলকে রেকর্ড গড়া সংগ্রহ এনে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। 
 
৬ উইকেটে ৩০১ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ৪৯ বলে পাঁচ চার ও তিন ছক্কায় ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ ওভারে ৫ বলে ১১ রান নিয়ে দলকে তিনশ রানে নিয়ে যান মোসাদ্দেক হোসেন। 
 
২০১২ সালে খুলনায় করা ২৯২ রান ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ। ওয়েস্ট ইন্ডিজে স্বাগতিকদের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ ছিল প্রথম ওয়ানডেতে করা ২৭৯। 
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩০১/৬ (তামিম ১০৩, এনামুল ১০, সাকিব ৩৭, মুশফিক ১২, মাহমুদউল্লাহ ৬৭*, মাশরাফি ৩৬, সাব্বির ১২, মোসাদ্দেক ১১*; কট্রেল ১/৫৯, হোল্ডার ২/৫৫, বিশু ১/৪২, পল ০/৭৭, নার্স ২/৫৩, গেইল ০/১৪)

ফিরে গেলেন সাব্বির
 
দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ফিরে গেলেন সাব্বির রহমান। ষষ্ঠ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। 
 
শেলডন কট্রেলকে টানা দুটি চার হাঁকিয়ে ফিরে যান সাব্বির। অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্লগ করার চেষ্টায় ধরা পড়েন এভিন লুইসের হাতে। 
 
৯ বলে ১২ রান করে ফিরেন সাব্বির।

মাহমুদউল্লাহর ফিফটি
 
কিমো পলকে ছক্কা হাঁকিয়ে সিরিজে নিজের প্রথম ফিফটি তুলে নিলেন মাহমুদউল্লাহ। তার ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ছে বাংলাদেশ। 
 
৪৪ বলে ফিফটিতে পৌঁছান মাহমুদউল্লাহ। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে চারটি চার ও দুটি ছক্কা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের চতুর্থ ফিফটি। 

ঝড় তুলে ফিরে গেলেন মাশরাফি
 
প্রমোশন পেয়ে ছয় নম্বরে নেমে ঝড় তুলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। আশা জাগিয়েছেন তিনশ ছোঁয়া সংগ্রহের। 
 
২৫ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় মাশরাফি ফিরেন ৩৬ রান করে। তার ঝড়ের সবচেয়ে বড় অংশটা যায় জেসন হোল্ডারের ওপর দিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়কই শেষ পর্যন্ত ফিরিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ককে। 
 
জায়গা করে নিয়ে হোল্ডারকে গ্লান্স করেছিলেন মাশরাফি। কিন্তু গ্যাপে খেলতে পারেননি, সহজ ক্যাচ যায় শর্ট থার্ড ম্যানে ক্রিস গেইলের কাছে। 
 
৪৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৫৩/৫। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী সাব্বির রহমান।

মাহমুদউল্লাহ-মাশরাফি জুটির পঞ্চাশ
 
ক্রিজে এসেই ঝড় তুলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। দায়িত্বশীল ব্যাটিং করছেন মাহমুদউল্লাহ। দুই জনের ব্যাটে পঞ্চম উইকেটে পঞ্চাশ রানের জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ।
 
মাত্র ৩৬ বলে আসে মাহমুদউল্লাহ-মাশরাফি জুটির পঞ্চাশ। 
 
দুই জনের দারুণ ব্যাটিংয়ে তিনশ রানের আশা জাগিয়েছে বাংলাদেশ।

সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফিরে গেলেন তামিম
 
ডিপ স্কয়ার লেগে কোনো ফিল্ডার ছিলেন না, তাই সুযোগটা নিতে চেয়েছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু পার করতে পারেননি স্কয়ার লেগ ফিল্ডারকে। বাঁহাতি ওপেনার ফিরে গেছেন কাইরন পাওয়েলের চমৎকার এক ক্যাচে।
 
নিজের শেষ ওভারে আঘাত হেনেছেন চমৎকার বোলিং করা দেবেন্দ্র বিশু। লেগ স্পিনার মিডল স্টাম্পে থাকা বল ঠিক মতো স্লগ সুইপ করতে পারেননি তামিম। ১২৪ বলে ৭ চার ও দুই ছক্কায় ফিরে যান ১০৩ রান করে। 
 
তামিমের বিদায়ের সময় ৩৮.৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ২০০/৪। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী মাশরাফি বিন মুর্তজা। অধিনায়ক প্রমোশন পেয়ে ব্যাট করছেন ছয় নম্বরে।
 
তামিম একাদশ সেঞ্চুরি
 
সিরিজে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেলেন তামিম ইকবাল। তার দারুণ ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। 
 
অ্যাশলি নার্সের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারে একাদশ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটি বাঁহাতি এই ওপেনারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। 
 
১২০ বলে নিজের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান তামিম। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৭টি চার ও দুটি ছক্কা। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে দেবেন্দ্র বিশুকে হাঁকিয়েছিলেন নিজের দ্বিতীয় ছক্কা। 
 
৩৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৯৬/৩। তামিম ১০০ ও মাহমুদউল্লাহ ২৫ রানে ব্যাট করছেন।

বোল্ড হয়ে ফিরলেন মুশফিক
 
ক্রিজে আসার পর থেকে রানের জন্য ছটফট করছিলেন মুশফিকুর রহিম। ফিরে গেলেন দ্রুত রান তোলার চেষ্টাতেই।
 
অফ স্পিনার অ্যাশলি নার্সের মিডল স্টাম্পের বল শাফল করে স্কুপ করতে চেয়েছিলেন মুশফিক। স্পিন করে ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি। ফিরে যান বোল্ড হয়ে। 
 
এক ছক্কায় ১৪ বলে ১২ রান করেন মুশফিক। ৩১.১ ওভার তার বিদায়ের সময় দলের স্কোর ১৫২/৩। ক্রিজে তামিম ইকবালের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।

সাকিবের বিদায়ে ভাঙল জুটি
 
দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ফিরে গেলেন সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে বিদায় করে ১৬ ওভার স্থায়ী ৮১ রানের জুটি ভেঙেছেন অ্যাশলি নার্স।
 
টার্নের বিপরীতে অফ স্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে চেয়েছিলেন সাকিব। মাঝ ব্যাটে খেলতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে সহজ যায় কিমো পলের কাছে।
 
তিনটি চারে ৪৪ বলে ৩৭ রান করে ফিরেন সাকিব। তার বিদায়ে সময় ২৫.৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১১৬/২। ক্রিজে তামিম ইকবালের সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।

তামিমের ফিফটি
 
টেস্টে সিরিজে খুব একটা ভালো না করতে পারা তামিম ইকবাল নিজেকে মেলে ধরেছেন ওয়ানডে সিরিজে। তুলে নিয়েছেন আরেকটি ফিফটি। 
 
৬৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তামিম। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে চারটি চার। ওয়ানডেতে বাঁহাতি ওপেনারের এটি ৪৩তম পঞ্চাশ।  
 
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে করেছিলেন অপরাজিত ১৩০ রান। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫৪। এবারও তামিম ছাড়ালেন পঞ্চাশ।

তামিম-সাকিব জুটির পঞ্চাশ
 
উদ্বোধনী জুটির মন্থর শুরুর পর রানের গতি বাড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। তামিম ইকবালের সঙ্গে উপহার দিয়েছেন আরেকটি পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি। 
 
দেবেন্দ্র বিশুকে চার হাঁকিয়ে ৫৬ বলে জুটির রান পঞ্চাশে নিয়ে যান তামিম। চলতি সিরিজে এটি দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের টানা তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি। 
 
তৃতীয় উইকেটে এনিয়ে সপ্তমবার জুটি গড়েছেন তামিম-সাকিব। তার ছয়টিতেই দলকে উপহার দিয়েছেন পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি।

পাওয়ার প্লেতে ৪২ ডট বল
 
ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো উইকেটে পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশ। রান বের করার চেষ্টা ছিল তামিম ইকবালের। আগের ম্যাচে খেপাটে এক ইনিংস খেলা এনামুল হক এবার ছিলেন দৃষ্টিকটু মন্থর।
 
১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩৭/১। তামিম ইকবাল ২৩ ও সাকিব আল হাসান শূন্য রানে ব্যাট করছেন। 
 
এনামুল ৩১ বলে করেন মোটে ১০ রান। 
 
পাওয়ার প্লেতে দুই পেসার জেসন হোল্ডার ও শেলডন কট্রেল ২১টি করে মোট ৪২টি ডট বল খেলিয়েছেন। সিঙ্গেলস নিতে ভুগেছে বাংলাদেশ। বাউন্ডারিও এসেছে মোটে তিনটি।

শর্ট বলে ফিরলেন এনামুল
 
উইকেটে বোলারদের জন্য তেমন কিছু নেই। বল ভালোভাবে আসছে ব্যাটে। এমন উইকেটে মন্থর ব্যাটিংয়ে দলকে চাপে ফেলে বিদায় নিলেন এনামুল হক। 
 
জেসন হোল্ডারের শর্ট বল পুল করে উড়াতে চেয়েছিলেন এনামুল। টাইমিং করতে পারেননি। সহজ ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ৩১ বলে তার ১০ রানের ইনিংস।
 
এনামুলের বিদায়ের সময় ৯.৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩৫/১। ক্রিজে তামিম ইকবালের সঙ্গী সাকিব আল হাসান।

উইন্ডিজ দলে দুই পরিবর্তন
 
দুটি পরিবর্তন এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে। আগের ম্যাচে খরুচে বোলিং করা পেসার আলজারি জোসেফ বাদ পড়েছেন। একাদশে জায়গা হারিয়েছেন জেসন মোহামেদ। দলে ফিরেছেন পেসার শেলডন কট্রেল ও ব্যাটসম্যান কাইরন পাওয়েল। 
 
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: জেসন হোল্ডার, দেবেন্দ্র বিশু, ক্রিস গেইল, শিমরন হেটমায়ার, শেই হোপ, শেলডন কট্রেল, এভিন লুইস, অ্যাশলি নার্স, কিমো পল, কাইরান পাওয়েল, রোভম্যান পাওয়েল।
 
অপরিবর্তিত বাংলাদেশের একাদশ
 
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি বাংলাদেশ। টিকে গেছেন ওপেনার এনামুল হক ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। এ নিয়ে তৃতীয় দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে সব ম্যাচে একই একাদশ নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, এনামুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।
 
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
 
সিরিজে টানা তৃতীয়বারের মতো টস ভাগ্যকে পাশে পেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিয়েছেন ব্যাটিং।
 
উইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় সিরিজ জয়ের হাতছানি
 
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে সিরিজ জয়ের হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। দুইবারের সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এনিয়ে অষ্টম সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ক্যারিবিয়ায় প্রথম সিরিজ জিতেছিল তারা। ২০১২ সালে দেশের মাটিতে জিতেছিল পাঁচ ম্যাচের সিরিজ।
 
এবার মাশরাফি বিন মুর্তজার দল প্রথম ওয়ানডে জেতে ৪৮ রানে। পরের ম্যাচে ৩ রানের নাটকীয় জয়ে সমতা ফেরায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শনিবার সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডে শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে সাতটায়।