ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ইউনিভার্সিটিজ অব ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ইউডব্লিউআই) চ্যান্সেলরস একাদশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
জ্যামাইকায় শুক্রবার ৮৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়েও শেষ পর্যন্ত ইউডব্লিউআই করতে পারে ২২৭ রান। মিডল অর্ডারে দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারানো বাংলাদেশ পরে জিতেছে ৩৯ বল বাকি রেখে।
গেইল খেলেছেন এই ম্যাচে, স্মারক গ্রহণ করেছেন নিজে। তবে থাকতে পারেননি প্যাটারসন। তার হয়ে স্মারক গ্রহণ করেন জ্যামাইকার আরেক কৃতি সন্তান, বাংলাদেশের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ।
বাংলাদেশের হয়ে এদিন খেলেননি সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। লম্বা ভ্রমণের ক্লান্তির জন্য সেভাবে অংশ নেননি মাশরাফি বিন মুর্তজা, মাঠে নেমেছিলেন অল্প সময়ের জন্য। নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
বাংলাদেশের শুরুটা ছিল প্রতিপক্ষ অধিনায়কের উইকেট দিয়ে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ইউডব্লিউআই। অধিনায়ক চাডউইক ওয়ালটন ফিরে যান শূন্য রানেই।
গেইল সেভাবে ঝড় তুলতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে জুটি গড়ে তোলেন আমির জাঙ্গুর সঙ্গে। জুটির পঞ্চাশ হয় ৭৮ বলে।
মোসাদ্দেকের বোলিং চমকের শুরু গেইলকে শিকার করেই। নিজের প্রথম ওভারেই বোল্ড করে দেন ২৯ রান করা গেইলকে।
ওয়ানডে সিরিজের ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে থাকা রোভম্যান পাওয়েলকে যখন ৬ রানে ফেরালেন, ৬ ওভারে ৮ রান দিয়ে মোসাদ্দেকের উইকেট ৪টি!
মুস্তাফিজুর রহমানকে চার ও ছক্কায় পাল্টা আক্রমণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু বিপজ্জনক অলরাউন্ডারকে ১১ রানেই থামান মুস্তাফিজ।
২৫.৫ ওভারে ক্যারিবিয়ানদের রান তখন ৬ উইকেটে ৮৯।
তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু এরপর থেকেই। সপ্তম উইকেটে ৯১ রানের জুটি গড়েন ইয়ানিক ওটলি ও কাভেম হজ।
৪৪ রান করা হজকে আউট করে জুটি ভাঙেন রুবেল। নতুন ব্যাটসম্যান বিকাশ মোহানকে ১ রানেই ফেরান বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার।
শেষ দিকে দ্রুত রান বাড়ান ওটলি। শেষের আগের ওভারে ছক্কা মারার চেষ্টায় আউট হন ৫৮ রানে।
মুস্তাফিজের করা ইনিংসের শেষ ওভারের শেষ দুই বলে বাউন্ডারিতে ইউডব্লিউআই করে ২২৭ রান।
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরুটাও ছিল প্রতিপক্ষের মতো। প্রথম ওভারেই উইকেট, দ্বিতীয় উইকেটে ফিফটি জুটি!
ইনিংসের তৃতীয় বলেই এনামুল হককে শূন্য রানে এলবিডব্লিউ করে দেন আন্দ্রে রাসেল।
দ্বিতীয় জুটিতে সেই ধাক্কা সামাল দেন লিটন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। একটু সামলে শুরুর পর শট খেলেছেন দুজনই। রাসেলকেই পুল করে চার মারেন শান্ত, ওই ওভারেই ছক্কা লিটনের ব্যাটে। ওয়াল্টার্সকে লং অন দিয়ে ছক্কা মারেন শান্ত।
দুজন যখন ছুটছেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে, জুটির রান ৯০, তখনই একটু ছন্দপতন। হাতে চোট পেয়ে ৪১ রানে অবসর নেন লিটন।
সঙ্গীকে হারিয়ে ফিরে যান শান্তও। ৪৩ রানে আউট হন পাওয়েলের বলে।
লক্ষ্য বড় ছিল না, রানের চাপ ছিল না। কিন্তু ব্যাটিং অনুশীলনের বড় সুযোগ হারান মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির।
মিডল অর্ডারে দ্রুত ৩ উইকেটের পতনে তখন শঙ্কায় বাংলাদেশ। আবার ব্যাটিংয়ে নামেন লিটন। অন্য পাশে তখন দারুণ খেলে চলেছেন মুশফিক। দুজনে মিলে দলকে নিয়ে যান জয়ের দিকে।
লিটন ফিফটি করেন ৬১ বলে। ৭০ রান করে যখন হজের বলে ফিরছেন, দলের জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন আর ১৪ রান। টেস্ট সিরিজ বাজে কাটলেও ওয়ানডে একাদশে জায়গার দাবি জানিয়ে রাখলেন এই ইনিংস খেলে।
মুশফিক ফিফটি করেন ঠিক ৫০ বলেই। পঞ্চাশের পর ছুটেছেন আরও দ্রুতগতিতে। সিয়ারলেসকে টানা দুটি বাউন্ডারিতে শেষ করেছেন ম্যাচ। অপরাজিত ছিলেন ৭৫ রানে।
প্রস্তুতি ম্যাচ জ্যামাইকায় হলেও মূল সিরিজের শুরু গায়নায়। প্রথম দুটি ওয়ানডে রোববার ও বুধবার।
ইউডব্লিউআই চ্যান্সেলরস একাদশ: ৫০ ওভারে ২২৭/৯ (গেইল ২৯, ওয়ালটন ১, জাঙ্গু ৩৬, কার্টন ৫, পাওয়েল ৬, রাসেল ১১, ওটলি ৫৮, হজ ৪৪, মোহান ১; মোসাদ্দেক ৪/১৪, রুবেল ৩/৪০)।
বাংলাদেশ: ৪৩.৩ ওভারে ২৩০/৬ (এনামুল ০, লিটন ৭০, শান্ত ৪৩, মুশফিক ৭৫* মাহমুদউল্লাহ ১০, সাব্বির ৪, মোসাদ্দেক ১১, মিরাজ ৪*; পাওয়েল ২/৩২)।
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী