দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে ৮৬ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। সমতা ফিরিয়েছে তিন ম্যাচ সিরিজে।
শনিবার লর্ডসে ইংল্যান্ডের ৩২২ রান তাড়ায় ভারত অলআউট হয়েছে ২৩৬ রানে।
ইংল্যান্ডের ইনিংসের মেরুদণ্ড ছিল রুটের সেঞ্চুরি। একটা পাশ আগলে রেখে টেনে নিয়েছেন দলকে। দ্বাদশ সেঞ্চুরিতে স্পর্শ করেছেন মার্কাস ট্রেসকোথিকের রেকর্ড। ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন যৌথভাবে এই দুজনের।
ইংল্যান্ডের ইনিংসের প্রথম ভাগটা ছিল ঠিক আগের ওয়ানডের মতো। সেদিন ১০ ওভারে ৭০ রান তুলেছিলেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। এদিন দুজনে ১০ ওভারে তুলেছেন ৬৯।
সেদিন নিজের প্রথম ওভারেই জুটি থামিয়ে ইংল্যান্ডকে ভুগিয়েছিলেন কুলদীপ যাদব। এদিনও একই ভূমিকায় এই চায়নাম্যান বোলার। একাদশ ওভারে বোলিংয়ে এসেই ভেঙেছেন জুটি। আগের ম্যাচের মতো ৩৮ রানে ফিরেছেন বেয়ারস্টো।
কুলদীপ পরে ফিরিয়ে দেন ৪০ রান করা রয়কেও। আগের ম্যাচের মতো ব্যাটিং ধসের শঙ্কা তখন ঘিরে ধরেছিল ইংল্যান্ডকে। সেটি হতে দেননি রুট।
এই জুটিও ভাঙেন কুলদীপ। তবে তাতে দায় বেশি ছিল ব্যাটসম্যানের। ৫১ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলে কুলদীপের ফুলটসে সীমানায় ক্যাচ দেন মর্গ্যান।
এরপর বেন স্টোকসকে দ্রুতই ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া, উমেশ যাদবের শিকার ফর্মে থাকা জস বাটলার। যুজবেন্দ্র চেহেলের বলে রোহিতের দারুণ ক্যাচে ফেরেন মইন আলি। ইংল্যান্ডের ইনিংস আবার হারায় গতি।
রুট তখনও উইকেটে। খুঁজছিলেন যোগ্য একজন সঙ্গী। ডেভিড উইলি উইকেটে গিয়ে মেটান সময়ের দাবি। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে এলোমেলো করে দেন ভারতের বোলিং।
১০৯ বলে রুট স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। উইলি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ফিফটি করেন ৩০ বলেই। ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের যেটি দ্রুততম ওয়ানডে ফিফটি। শেষ ১০ ওভারে ৯৪ রান তুলে ইংল্যান্ড শেষটা করে ভালো।
৩২৩ রানের লক্ষ্য অবশ্য ভারতের ব্যাটিং লাইন আপের জন্য ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল না। তিনশর বেশি রান তাড়ায় তারা জেতে নিয়মিতই। এদিন সেটি হতে দেয়নি ইংলিশ বোলাররা।
আগের মাচে অপরাজিত ১৩৭ রান করা রোহিত এবার থামেন ১৫ রানে। মার্ক উডের বলে বোল্ড হয়েছেন বাজে শট খেলে।
১১ রানের মধ্যে ভারত হারায় ৩ উইকেট। ইংল্যান্ড পায় জয়ের বিশ্বাস।
এমন পরিস্থিতি থেকেও ভারতকে অনেকবার জিতিয়েছেন বিরাট কোহলি। এদিনও ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। সুরেশ রায়নার সঙ্গে গড়েছিলেন ৮০ রানের জুটি।
তবে ৪৫ রানে কোহলিকে এলবিডব্লিউ করে দেন মইন। ইংল্যান্ড জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যায় ওই উইকেটেই।
৪৬ রান করে রায়না বোল্ড হয়েছেন আদিল রশিদকে স্লগ করতে গিয়ে। চতুর্থ ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে দলকে জয়ের দিকে নিতে পারেননি। ফিরেছেন ৩৭ রানে।
লোয়ার অর্ডাররা পরে কিছুটা কমিয়েছে ব্যবধান। ইংল্যান্ডের জয় তার পরও বড় ব্যবধানে। মঙ্গলবার হেডিংলিতে হবে সিরিজের ফয়সালা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩২২/৭ (রয় ৪০, বেয়ারস্টো ৩৮, রুট ১১৩*, মর্গ্যান ৫৩, স্টোকস ৫, বাটলার ৪, মইন ১৩, উইলি ৫০*; উমেশ ১/৬৩, সিদ্ধার্থ ০/৫৯, পান্ডিয়া ১/৭০, চেহেল ১/৪৩, কুলদীপ ৩/৬৮, রায়না ০/১৮)।
ভারত: ৫০ ওভারে ২৩৬ (রোহিত ১৫, ধাওয়ান ৩৬, কোহলি ৪৫, রাহুল ০, রায়না ৪৬, ধোনি ৩৭, পান্ডিয়া ২১, উমেশ ০, কুলদীপ ৮*, সিদ্ধার্থ ১, চেহেল ১২; উড ১/৩১, উইলি ২/৪৮, প্লাঙ্কেট ৪/৪৬, স্টোকস ০/২৯, মইন ১/৪২, রশিদ ২/৩৮)।
ফল: ইংল্যান্ড ৮৬ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা
ম্যান অব দা ম্যাচ: জো রুট