মিরাজের ৫ উইকেট, দুর্দান্ত আবু জায়েদ

নিখুঁত সিম পজিশন, দুই দিকেই সুইং। বাংলাদেশের পেস বোলারই তো? ঘোর লাগা সকালে সুইং বোলিংয়ের দারুণ প্রদর্শনী মেলে ধরলেন আবু জায়েদ চৌধুরী। পরপর দুই বলে উইকেট নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ পূর্ণ করলেন ৫ উইকেট। দ্বিতীয় দিন সকালে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2018, 05:12 PM
Updated : 13 July 2018, 05:12 PM

জ্যামাইকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালে প্রথম ইনিংসে ৩৫৪ রানে অলআউট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

৪ উইকেটে ২৯৫ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল ক্যারিবিয়ানরা। দৃষ্টি ছিল তাদের বড় স্কোরে। কিন্তু আবু জায়েদ ও মিরাজের সৌজন্যে বাংলাদেশ এদিন ১৬ ওভারের মধ্যেই নিতে পেরেছে শেষ ৬ উইকেট।

টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থবার ৫ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। অভিষেক টেস্টে ৩ উইকেট নেওয়ার পর এই টেস্টেও আবু জায়েদ নিয়েছেন ৩ উইকেট।

দিনের প্রথম ঘণ্টায় নায়ক ছিলেন আবু জায়েদ। লাল বলে সুইং করানোর সামর্থ্যের কারণেই তাকে নেওয়া হয়েছে টেস্ট দলে। ৬২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে দুইশর কাছাকাছি উইকেট নেওয়ার পর সুযোগ পেয়েছেন টেস্ট দলে। আগের টেস্টেও কিছুটা সুইং করাতে পেরেছিলেন। তবে এই টেস্টে দেখালেন যেন সামর্থ্যের প্রায় পুরোটা।

এদিন দুর্দান্ত প্রথম স্পেলে আবু জায়েদই বেঁধে দেন সুর। সকালে তার স্পেল ছিল ৬-৩-৬-২। দুই ওভার ছিল উইকেট মেডেন। সেই ৬ রানের ৪ রানই এসেছিল ব্যাটের কানায় লাগা বাউন্ডারিতে, তৃতীয় স্লিপে ফিল্ডার থাকলে যেটি হতে পারত ক্যাচ!

আগের দিন শেষ সেশনে ওয়ানডের গতিতে রান তোলার শিমরন হেটমায়ারকে এদিন ডানা মেলতে দেয়নি বাংলাদেশ। ৮৪ রান নিয়ে শুরু করা ব্যাটসম্যানকে ৮৬ রানেই থামান আবু জায়েদ।

অফ স্টাম্প ঘেঁষে সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে একবার পরাস্ত হয়েছিলেন বাঁহাতি হেটমায়ার। পরের বলে আবারও প্রায় একই ডেলিভারিতে কটবিহাইন্ড।

খানিক পর আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যানকেও ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ। ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ রোস্টন চেইস।

পেস বোলিংয়ের সহায়তাটুকু পেয়ে জ্বলে ওঠেন স্পিনাররাও। আগের সিরিজেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যান অব দা সিরিজ হওয়া শেন ডাওরিচকে ফেরান তাইজুল ইসলাম।

মিরাজ পরপর দুই ডেলিভারিতে বিদায় করেন কিমো পল ও মিগেল কামিন্সকে। আগের দিনের তিনটির সঙ্গে মিলিয়ে পূর্ণ করেন ৫ উইকেট।

২০১৪ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। চার বছর পর আবার বিদেশর মাটিতে ৫ উইকেট পেল বাংলাদেশের কোনো বোলার!

২২ রানের মধ্যে তখন নেই ক্যারিবিয়ানদের ৫ উইকেট। ৪ উইকেটে ২৯৭ থেকে রান হয়ে যায় ৯ উইকেটে ৩১৯!

শেষ জুটিতে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে নিয়ে দলকে সাড়ে তিনশতে নিয়ে যান জেসন হোল্ডার। তাইজুল ইসলামের এক ওভারে মারেন দুটি ছক্কা। স্পিন সরিয়ে তখন দুই পাশ থেকেই পেস আনেন সাকিব। গ্যাব্রিয়েলের ব্যাট থেকেও আসে তিনটি বাউন্ডারি। শেষ পর্যন্ত গ্যাব্রিয়েলকে বোল্ড করে ইনিংসের ইতি টানেন আবু জায়েদ।

সফরের প্রথমবারের মতো হাসি মুখে ড্রেসিং রুমে ফিরতে দেখা যায় বাংলাদেশ দলকে। পরের চ্যালেঞ্জ সামলানোর দায়িত্ব ব্যাটসম্যানদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ১১২ ওভারে ৩৫৪ (আগের দিন ২৯৫/৪)(ব্র্যাথওয়েট ১১০, স্মিথ ২, পাওয়েল ২৯, হোপ ২৯, হেটমায়ার ৮৬, চেইস ২০, ডাওরিচ ৬, হোল্ডার ৩৩*, পল ০, কামিন্স ০, গ্যাব্রিয়েল ১২; আবু জায়েদ ১৮-৭-৩৮-৩, সাকিব ২২-৩-৬০-০, মিরাজ ২৯-৯-৯৩-৫, তাইজুল ২৫-৪-৮২-২, কামরুল ১০-১-৩৪-০, মাহমুদউল্লাহ ৮-১-২০-০)।