বাংলাদেশকে রেকর্ড ব্যবধানে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

সম্ভাবনার কবর খোঁড়া হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই। তৃতীয় দিনে সমাধি হয়ে গেল প্রথম সেশনেই। নুরুল হাসান সোহান লড়াই করলেন বটে। হারের ধরন এরপরও বাংলাদেশের জন্য বিব্রতকর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেল রেকর্ড ব্যবধানেরর জয়।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2018, 04:33 PM
Updated : 6 July 2018, 04:49 PM

অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশকে ইনিংস ও ২১৯ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০তে।

দেশের মাটিতে ক্যারিবিয়ানদের এটি সবচেয়ে বড় জয়। সেই ১৯৫৮ সালে জ্যামাইকায় পাকিস্তানকে ইনিংস ও ১৭৪ রানে হারানো ছিল আগের রেকর্ড।

একশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় শুক্রবার দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। সোহানের ফিফটিতে এবার দল করতে পারে ১৪৪ রান।

দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের রান ১৮৭। এই প্রথম এক টেস্টে সব মিলিয়ে দুইশ রানের নিচে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। দুই ইনিংস মিলিয়ে আগের সর্বনিম্ন ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই ঢাকায় ২২৬ (১৩৯ ও ৮৭)।

৬ উইকেটে ৬২ রান নিয়ে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের দিন। যতটা খারাপ হতে পারত, শুরুটা হয় ততটাই খারাপ। প্রথম বলেই আউট মাহমুদউল্লাহ।

আগের দিন শেষ বিকেলে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন বোলার নো বল করায়। জীবন পাওয়াটা কাজে লাগাতে পারলেন না। বাড়তি বাউন্সের বলে ক্যাচ দিলেন স্লিপে।

ম্যাচ তখন দ্রুতই শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের অপেক্ষাকে একটু দীর্ঘায়িত করলেন নুরুল। খেললেন দারুণ কিছু শট।

তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। তবে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের একটি শর্ট বল হেলমেটে লাগার পর নড়ে যায় তার মনোযোগ। একটু পর তেঁড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন গ্যাব্রিয়েলের বলেই।

বাংলাদেশ ম্যাচের একমাত্র অর্ধশত রানের জুটি পেয়েছে এরপরই। রুবেল হোসেনের সঙ্গে সোহান গড়েন ৫৫ রানের জুটি।

দলের বিপর্যয় আর প্রতিপক্ষের বোলিং তোপের মাঝেও দারুণ সাহসী ছিলেন সোহান। শর্ট বলে পুল করেছেন, আপার কাট করেছেন। বাইরের বলে কাট খেলেছেন। গ্যাব্রিয়েলকে ছক্কা মেরেছেন মাথার ওপর দিয়ে।

সোহানকে ফেরাতে ম্যাচে প্রথমবার স্পিন নিয়ে আসেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। কিন্তু দেবেন্দ্র বিশুর প্রথম বলেই সোহান মারেন ছক্কা।

৩৬ বলে সোহান স্পর্শ করেন পঞ্চাশ, দেশের বাইরে যা বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড।

ততক্ষণে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন রুবেল। সোহানও তাই শট খেলা কমিয়ে মন দেন সময় কাটানোয়। কিন্তু আউট হলেন শট খেলতে গিয়েই। মিগেল কামিন্সের শর্ট বলে সোজা পুল করেছিলেন, মাথার ওপর থেকে দারুণ ফিরতি ক্যাচ নেন বোলার। ৬ চার ও ২ ছক্কায় সোহান ফিরেছেন ৭৪ বলে ৬৪ রানে।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে অভিষেকে কঠিন কন্ডিশনে ৪৭ রান করার পরও বাদ পড়েছিলেন সোহান। দেড় বছর পর দ্বিতীয় টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে এমন ইনিংস, এবার একটু বেশি সুযোগ দাবি করতেই পারেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।

সোহান ফেরার এক ওভার পর রুবেলকেও ফিরিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেন কামিন্স।

২ ইনিংস মিলিয়ে কামিন্স নিয়েছেন ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে গ্যাব্রিয়েল নিয়েছেন ৫টি। তবে ম্যাচের প্রথম সকালে বিধ্বংসী সেই স্পেলে ৫ ওভার বোলিং করেই ম্যাচের সেরা কেমার রোচ।

দ্বিতীয় টেস্ট আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু জ্যামাইকায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৩

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪০৬

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৪০.২ ওভারে ১৪৪ (আগের দিন ৬২/৬) (তামিম ১৩, লিটন ২, মুমিনুল ০, মুশফিক ৮, সাকিব ১২, মাহমুদউল্লাহ ১৫, মিরাজ ২, সোহান ৬৪, রুবেল ১৬, আবু জায়েদ ০*; গ্যাব্রিয়েল ৫/৭৭, হোল্ডার ৩/৩০, কামিন্স ২/১৬, বিশু ০/১৬, চেইস ০/৪)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস ও ২১৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: কেমার রোচ