জাহানারার রেকর্ডের পর বাংলাদেশের রুদ্ধশ্বাস জয়

এশিয়া কাপের ফাইনালে শেষ বলে জয়ের রেশ এখনও কাটেনি পুরোপুরি। আয়ারল্যান্ড সফরের সূচনাতেও ফিলে এল সেই রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা। বল হাতে জাহানারা আলমের রেকর্ড গড়া কীর্তির পর রান তাড়ায় বাংলাদেশ জিতেছে শেষ বলে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2018, 04:45 PM
Updated : 28 June 2018, 04:45 PM

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে আয়ারল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। 
 
ডাবলিনে বৃহস্পতিবার ২০ ওভারে আইরিশ মেয়েরা তুলতে পেরেছিল ১৩৪ রান। ৫ উইকেট নিয়েছেন জাহানারা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই বাংলাদেশের মেয়েদের প্রথম ৫ উইকেট পাওয়ার ঘটনা এটি। 
 
রান তাড়ায় শেষ দিকে পেণ্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচ শেষ পর্যন্ত শেষ বলে হেলেছে বাংলাদেশের পক্ষে।
 
মিডল অর্ডারে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছেন নিগার সুলতানা। শেষ দিকে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন ফাহিমা খাতুন।
 
ম্যাচের শুরুতে টস জিতে বাংলাদেশ হাতে নিয়েছিল বল। ম্যাচের প্রথম ওভারেই দলকে সাফল্য এনে দেন জাহানারা। 
 
ম্যাচের প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় ২১ বছরের অভিজ্ঞ ক্লেয়ার শিলিংটন। তবে এক বল পরই ৩৭ বছর বয়সী ওপেনারকে এলবিডব্লিউ করে দেন জাহানারা।
 
নিজের পরের ওভারের প্রথম বলে আরেক অভিজ্ঞ সিসিলিয়া জয়েসকেও ফিরিয়ে দেন জাহানারা।
 
তিনে নেমে পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছিলেন গ্যাবি লুইস। ১৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের ঝড় থামান সালমা খাতুন। ১৬ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ২৮ রান করে লুইস বোল্ড বাংলাদেশ অধিনায়কের বলে।
 
এরপর অধিনায়ক লরা ডেলানি ও কিম গার্থের সঙ্গে জুটি বেধে আইরিশদের টেনে দেন ইসোবেল জয়েস। ২২ রানে ডেলানি স্টাম্পড হন খাদিজা তুল কুবরার স্পিনে।
 
জাহানার দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে ফিরিয়ে দেন ১৯ বলে ২০ রান করা গার্থকে। ওই ওভারে নেন আরও একটি উইকেট।
 
বাংলাদেশের সামনে তখন মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে ইসোবেল জয়েস। ৪১ রানে তাকে ইয়র্কারে বোল্ড করেই জাহানারা ধরেন পঞ্চম শিকার।
 
৪ ওভারে ২৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন জাহানারা। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে আগের সেরা বোলিং ছিল সালমা খাতুনের ৬ রানে ৪ উইকেট। ওয়ানডেতে সেরা বোলিং রুমানা আহমেদের ২০ রানে ৪ উইকেট।
  রান তাড়ায় বাংলাদেশ নির্ভরযোগ্য ওপেনার শামিমা সুলতানাকে হারায় দ্রুতই। তবে চাপটা বুঝতে দেননি আরেক ওপেনার আয়েশা রহমান। যদিও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনিও। চারটি চারে করেছেন ২৩ বলে ২৪।
 
তিনে নেমে দলের অন্যতম সেরা ব্যাটার ফারজানা হক আউট হন ২৫ বলে ১৩ করে। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ছিল ২ উইকেটে ৪৯।
 
বাংলাদেশকে পথে রাখে নিগার সুলতানার ব্যাট। দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। ৯ ওভারে যখন প্রয়োজন ৮৩ রান, এক ওভারে তার তিন বাউন্ডারি খানিকটা সহজ করে দেয় সমীকরণ।
 
দলের সেরা পারফরমার রুমানা আহমেদ এদিন ব্যর্থ। তবে সেটি পুষিয়ে দিয়ে ফাহিমা খাতুন মিটিয়েছেন শেষ দিকের দাবি। প্রথম বলেই জীবন পেয়েছিলেন, এরপর ভুগিয়েছেন আইরিশদের।
 
নিগার আউট হয়েছেন ৩৮ বলে ৪৬ করে। টি-টোয়েন্টিতে তার আগের সর্বোচ্চ ছিল ৪১ রান। 
 
শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ১৯তম ওভারের শেষ তিন বলে একটি করে চার মারেন সানজিদা ও ফাহিমা। 
 
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল কেবল ৪ রান। প্রথম চার বলে আসে তিনটি সিঙ্গেল, একটিতে হয়নি রান। পঞ্চম বলে রান আউট সানজিদা। আবারও জমে যায় ম্যাচ।
 
তবে স্নায়ুর চাপে হার মানেননি ফাহিমা। শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে জিতিয়েছেন দলকে। অপরাজিত ছিলেন ১৮ বলে ২৬ রানে।
 
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শুক্রবার। 
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
আয়ারল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৩৪/৮ ( শিলিংটন ৪, সিসিলিয়া ১, লুইস ২৮, ডেলানি ২২, ইসোবেল ৪১, গার্থ ২০, রিচার্ডসন ২, কাভানাউ ৯, ওয়ালড্রন ৩*; জাহানারা ৫/২৮, নাহিদা ০/২০, সালমা ১/২০, ফাহিমা ০/১৯, কুবরা ১/২০, রুমানা ০/২৫)।
 
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৫/৬ (শামিমা ৪, আয়েশা ২৪, ফারজানা ১৩, নিগার ৪৬, রুমানা ৭, ফাহিমা ২৬*, সানজিদা ৫, জাহানারা ০*; রিচার্ডসন ২/২০, লুইস ২/২০)
 
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী
 
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ১-০তে এগিয়ে