ইতিহাস গড়া সেঞ্চুরিতে উদ্ভাসিত কেভিন ও’ব্রায়েন

আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত সেঞ্চুরিটি তার ব্যাট থেকেই এসেছিল। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে। এবার সংস্করণ অন্য, সময় ভিন্ন, প্রেক্ষাপট আলাদা। কিন্তু নায়ক আবার সেই কেভিন ও’ব্রায়েন। উপলক্ষ্য রাঙালেন সেঞ্চুরিতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2018, 06:35 PM
Updated : 14 May 2018, 07:43 PM

আয়ারল্যান্ডের অভিষেক টেস্ট স্মরণীয় করে রাখলেন ইতিহাস গড়া ইনিংসে।

কেভিনের অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ডাবলিন টেস্টে দারুণ ভাবে লড়ে যাচ্ছে আয়ারল্যান্ড। ফলো অনের পর আগের দিন যে লড়াইয়ের সূচনা করেছিলেন দলের দুই ওপেনার, সেই লড়াইয়ে চতুর্থ দিনেও হাল ছাড়েনি আইরিশরা। সোমবার দিন শেষে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের রান ৭ উইকেটে ৩১৯।

প্রথম ইনিংসের ১৮০ রানের ঘাটতি পুষিয়ে আইরিশরা এখন এগিয়ে ১৩৯ রানে। শেষ দিনে রান তাড়ার কাজটি পাকিস্তানের জন্য সহজ হওয়ার কথা নয় মোটেও!

দেশের অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরির করার মাত্র চতুর্থ কীর্তি গড়েছেন কেভিন। যে কৃতিত্ব এর আগে দেখিয়েছিলেন ইতিহাসের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান, জিম্বাবুয়ের প্রথম টেস্টে ডেভ হটন ও বাংলাদেশের অভিষেকে আমিনুল ইসলাম।

দিনে শেষটা যেমন আইরিশদের সুখকর, দিনের শুরুটা ছিল উল্টো। বিনা উইকেটে ৬৪ রান নিয়ে শুরু করে ৬৯ রানে যেতেই নেই দুই উইকেট।

নির্ভরতায় খেলতে থাকা এড জয়েস রান আউট ৪৩ রানে। প্রথম ইনিংসের মতোই দ্বিতীয় ইনিংসে রানের দেখা পাননি অ্যান্ড্র বালবার্নি। অভিষেকে ‘পেয়ার’ পাওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত অর্জন।

খানিক পর আবার জোড়া ধাক্কা। ও’ব্রায়েন ভাইদের বড় জন, নিয়ালের স্টাম্প উপড়ে দেন মোহাম্মদ আমির। নিজের পরের ওভারে ফেরান থিতু হয়ে যাওয়া আইরিশ অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকেও (১২০ বলে ৩২)।

আয়ার‌্যান্ডের রান তখন ৪ উইকেটে ৯৫। ইনিংস পরাজয় এড়ানো নিয়ে তখন শঙ্কা। কেভিনের লড়াই শুরু সেখান থেকে। পল স্টার্লিং ও গ্যারি উইলসন খানিকটা সঙ্গ দিয়ে ফিরে যান। কেভিনের লড়াইয়ে যোগ্য সঙ্গত ধরেন স্টুয়ার্ট টমসন।

চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় দুইজন দলকে উদ্ধার করেন বিপদ থেকে। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুর সেই ম্যাচে ৫০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ও’ব্রায়েন। এবার ১০০ বলে স্পর্শ করেন ৫০, টেস্টে আইরিশদের প্রথম ফিফটি। পরে ফিফটি করেন টমসনও।

দুজন মিলে আয়ারল্যান্ডকে উপহার দেন টেস্টে প্রথম শতরানের জুটি। সপ্তম উইকেটে ১১৪ রানে মহামূল্য জুটি।

দারুণ এক ডেলিভারিতে টমসনকে ৫৩ রানে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার শাদাব খান। তবে কেভিনের লড়াইয়ে ভাঙন ধরাতে পারেনি কেউ। নয়ে নেমে টাইরোন কেইন দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন সেঞ্চুরিয়ানকে। দিন শেষে অবিচ্ছিন্ন অষ্টম জুটিতেও উঠে গেছে ৪৮ রান। ৬৭ বলে ৮ রানে অপরাজিত কেইন।

ও’ব্রায়েন সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ১৮৯ বলে। ৩৪ বছর ৭১ দিন বয়সে করলেন সেঞ্চুরি, ব্যক্তিগত অভিষেকে তার চেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরি করেছেন কেবল অ্যাডাম ভোজেস ও ডেভ হটন।

আইরিশদের আশার সূর্য মধ্যগগণে রেখে দিন শেষে অপরাজিত কেভিন। নামের পাশে ১২ চারে ২১৬ বলে ১১৮।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৩১০/৯ (ডি.)

আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৩০

আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: (ফলো অনের পর) ১২২ ওভারে ৩১৯/৭ (আগের দিন ৬৪/০) (জয়েস ৪৩, পোর্টারফিল্ড ৩২, বালবার্নি ০, নিয়াল ১৮, স্টার্লিং ১১, কেভিন ১১৮*, উইলসন ১২, টমসন ৫৩, কেইন ৮*; আমির ৩/৫৭, আব্বাস ২/৫৪, রাহাত ০/৭৫, ফাহিম ০/৫১, শাদাব ১/৬৩)।