উপভোগের মন্ত্রে মাশরাফির সাফল্য

উইকেটের পিছনে না ছুটে মাশরাফি বিন মুর্তজা মনোযোগী ছিলেন ভালো জায়গায় বোলিং করে যাওয়ায়। তার চেষ্টা ছিল, খেলা উপভোগ করে দলের জয়ে অবদান রাখার। তাতেই এল সাফল্য। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ করলেন রেকর্ড ৩৯ উইকেট নিয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2018, 05:06 PM
Updated : 5 April 2018, 05:13 PM

লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড ছিল আবু হায়দারের। গত আসরে বাঁহাতি এই পেসার নিয়েছিলেন ৩৫ উইকেট। তার চেয়ে চার উইকেট বেশি নিলেন মাশরাফি।

১৬ ম্যাচে ১৪.৬১ গড়ে মাশরাফির উইকেট ৩৯টি। দুবার করে নেন চার ও পাঁচ উইকেট। ওভার প্রতি খরচ করেন ৪.৪২ করে।

লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে সহজেই হারিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের পর বৃহস্পতিবার বিকেএসপিতে মাশরাফি জানান, এবার যেভাবে সব করতে চেয়েছিলেন, সেভাবেই করতে পেরেছেন।

“সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, আমি যেখানে ছিলাম, সেটা ধরে রাখা। ফিটনেসে যেন ঘাটতি না হয়, সেই দিকে মনোযোগী হওয়া। এই সব জায়গায় আমি কাজ করতে চেয়েছি। কখনও চিন্তা করিনি, উইকেট নিতে হবে।”

সাফল্য পাওয়ার গোপন কোনো ফর্মুলা নেই মাশরাফির। তিনি জানান, ছোট ছোট ব্যাপারগুলো মনোযোগ দিয়ে আরও ভালোভাবে করাটা গড়ে দিয়েছে পার্থক্য।

“গোপন কিছুই না, পুরো মনোযোগ রেখেছিলাম (এই টুর্নামেন্টের দিকে)। কারণ, আমি জানি আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি না। এই কারণে, পুরো লিগেই আমার মনোযোগ ছিল। এর বাইরে সুশৃঙ্খল ছিলাম। নিয়মিত জিম করেছি, যতটুকু অনুশীলন দরকার করেছি। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারগুলোও মেনে চলেছি। উইকেটের জায়গায় আমাকে ভাগ্যবান বলতে হবে। কারণ, উইকেট নিয়ে আমি ভাবিনি।”

নিজের বোলিংয়ের দিকে বাড়তি মনোযোগ দিতে লিগে অধিনায়কত্ব করেননি মাশরাফি। খেলেন নাসির হোসেনের অধীনে। বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক মনে করেন, নেতৃত্বের বাইরে থাকাটা খুব ভালোভাবে কাজে লেগেছে।

“আমি চেয়েছি নাসিরই করুক বেশিরভাগ জিনিসগুলো। যখন খুব প্রয়োজন হয়েছে, তখন আমি করেছি। আমি একটু নির্ভার থাকতে চেয়েছি।”

“সত্যি কথা বলতে, খেলাটাতেই মনোযোগ বেশি দেওয়ার জন্য অধিনায়কত্ব করিনি। আমি জানতাম ১৬টা ম্যাচ খেলবো। অধিনায়কত্ব করলে মাঠে অনেক কিছুই করতে হয়। এই কারণে, আমি নির্ভার থেকে বোলিংটা উপভোগ করতে চেয়েছি।”

মাশরাফি উপভোগ করেছেন নিজের বোলিং। তাতে পিষ্ট হয়েছে প্রতিপক্ষ। অন্য বোলারদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থেকে লিগ শেষ করেছেন অভিজ্ঞ এই পেসার।

মাশরাফির চেয়ে ১০ উইকেট করে কম পেয়েছেন পরের তিনটি স্থানে থাকা লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের আসিফ হাসান ও মোহাম্মদ শহীদ এবং প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের ফরহাদ রেজা।

সেরা পাঁচে থাকা একমাত্র বাঁহাতি স্পিনার আসিফ হাসান ২২.৬৫ গড়ে নেন ২৯ উইকেট। পেসার শহীদ তার সমান উইকেট নেন ২৬.৫৫ গড়ে।

দোলেশ্বর অধিনায়ক অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা ২৬.৮৬ গড়ে নেন ২৯ উইকেট। মোহামেডান সুপার সিক্সে উঠতে না পারায় প্রাথমিক পর্বেই লিগ শেষ হয়ে যায় কাজী অনিকের। বাঁহাতি এই পেসার ১৯.১০ গড়ে ২৮ উইকেট নিয়ে আছেন পঞ্চম স্থানে।