সোধি বীরত্বে সিরিজ জিতল নিউ জিল্যান্ড

দিনের শুরুটা কী দুর্দান্ত ছিল ইংল্যান্ডের। প্রথম দুই বলে তুলে নিয়েছিল দুই উইকেট। তবে টেলএন্ডার ব্যাটসম্যানদের প্রতিরোধে শেষটা ছিল জো রুটদের জন্য হতাশার। ইশ সোধি ও নিল ওয়েগনারের দৃঢ়তায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ড্র করেছে নিউ জিল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2018, 07:07 AM
Updated : 3 April 2018, 07:07 AM
এই ড্রয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতল কেন উইলিয়ামসনের দল। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমের পর দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতল নিউ জিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৯৯ সালে সবশেষ টেস্ট সিরিজ জিতেছিল তারা।

সোধি ও ওয়েগনার অষ্টম উইকেটে ৩১.২ ওভারে গড়েন ৩৭ রানের জুটি। সোধি ১৬৮ বলে ৯টি চারে অপরাজিত থাকেন ৫৬ রানে। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া ওয়েগনার ১০৩ বলে খেলে করেন ৭ রান।

হ্যাগলি ওভালে মঙ্গলবার বিনা উইকেটে ৪২ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করে নিউ জিল্যান্ড। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল আরও ৩৪০ রান। সেই লক্ষ্য তাড়ার চেষ্টাতেই যায়নি নিউ জিল্যান্ড।

আগের দিন কোনো ক্ষতি ছাড়াই ২৩ ওভার কাটিয়ে দিয়েছিলেন নিউ জিল্যান্ডের দুই ওপেনার। পঞ্চম দিন প্রথম বলেই তাদের বিচ্ছিন্ন করেন স্টুয়ার্ট ব্রড। লেগ স্টাম্পে থাকা হাফ ভলি বলে মিডউইকেটে মার্ক স্টোনম্যানকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জিত রাভাল।

পরের বলে মিলে আরও বড় শিকার। অধিনায়ক উইলিয়ামসনের উইকেট। দারুণ এক ডেলিভারিতে তাকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দেন ব্রড।

ব্রডের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া রস টেইলর বেশিক্ষণ টিকেননি। তাকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম উইকেট নেন জ্যাক লিচ। মিডল অর্ডারের আরেক ভরসা হেনরি নিকোলসকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন জেমস অ্যান্ডারসন।

প্রথম ইনিংসে প্রতিরোধ গড়া উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বিজে ওয়াটলিং এবার বেশিদূর যেতে পারেননি। মার্ক উডকে ফ্লিক করে করা পড়েন ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে।

এক প্রান্ত আগলে রাখা টম ল্যাথামকে ফেরান লিচ। বাঁহাতি স্পিনারের বলে দারুণ এক ক্যাচ নেন জেমস ভিন্স। ২০৭ বলে খেলা ল্যাথামের ৮৩ রানের ইনিংস গড়া ১০টি চারে।

এরপরই শুরু হয় সোধির প্রতিরোধ। প্রথম পর্বে তার সঙ্গী ছিলেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। দুই জনে কাটিয়ে দেন ২৫.৫ ওভার। উডের শর্ট বল পুল করে উড়ানোর চেষ্টায় ডি গ্র্যান্ডহোমের বিদায়ে ভাঙে ৫৭ রানের জুটি।

তখনও খেলার অনেক বাকি। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল শেষ ৩ উইকেট। কিন্তু ওয়েগনারকে নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটিতে ম্যাচ বাঁচান তৃতীয় ফিফটি পাওয়া সোধি।

শেষের দিকে ইংল্যান্ডের সব ফিল্ডার ছিলেন ৩০ গজের ভেতরে। উইকেট নিতে যতভাবে সম্ভব চেষ্টা করে অতিথিরা। কিন্তু সেই উইকেট আসে বড় দেরিতে। ম্যাচের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ওয়েগনারকে ফিরিয়ে দেন রুট। আর এই উইকেট দিয়েই শেষ হয়ে যায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। সোধির ব্যাটিং বীরত্বে টেস্ট ড্র করে নিউ জিল্যান্ড।

অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন টিম সাউদি। দুই ম্যাচেই দারুণ বোলিং করা ট্রেন্ট বোল্ট জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩০৭

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৭৮

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৩৫২/৯ ইনিংস ঘোষণা

নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৮২) ১২৪.৪ ওভারে ২৫৬/৮ (ল্যাথাম ৮৩, রাভাল ১৭, উইলিয়ামসন ০, টেইলর ১৩, নিকোলস ১৩, ওয়াটলিং ১৯, ডি গ্র্যান্ডহোম ৪৫, সোধি ৫৬*, ওয়েগনার ৭; অ্যান্ডারসন ১/৩৭, ব্রড ২/৭২, উড ২/৪৫, লিচ ২/৬১, রুট ১/২৮, স্টোকস ০/২, মালান ০/৯)

ফল: ড্র

সিরিজ: ১-০ ব্যবধানে জয়ী নিউ জিল্যান্ড

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: টিম সাউদি

ম্যান অব দ্য সিরিজ: ট্রেন্ট বোল্ট