আবাহনীর জয়ের নায়ক মিরাজ

আগের ম্যাচে ঝড় তুলে বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়া আবাহনী ব্যাটিংয়ে বিবর্ণ পরের ম্যাচেই। ১৫৬ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে খেলাঘরের বিপক্ষে বিপদে পড়ে যাওয়া দলটির ত্রাতা মেহেদী হাসান মিরাজ। এই অলরাউন্ডারের ফিফটিতে ঘুরে দাঁড়ানো আবাহনী পরে বোলারদের নৈপুণ্যে পেয়েছে বড় জয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 April 2018, 10:19 AM
Updated : 2 April 2018, 12:16 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সুপার সিক্সের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে ১২৭ রানে জিতেছে আবাহনী। ২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২৭.৩ ওভারে ১১৪ রানে গুটিয়ে যায় খেলাঘর। সুপার সিক্সে চার ম্যাচে এটি তাদের চতুর্থ পরাজয়।

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দেন এনামুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ১০.৪ ওভারে তাদের ৬৪ রানের জুটি ভাঙে এনামুলের রান আউটে।

দলকে একশ রানে নিয়ে ফিরে যান শান্ত। ৫৬ বলে ৫৪ রান করা ওপেনারকে ফিরিয়ে শিকার শুরু করেন আব্দুল হালিম। ১৯ বছর বয়সী এই পেসার পরে দ্রুত ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ মিঠুন, যশপাল সিং ও মোসাদ্দেক হোসেনকে।

১ উইকেটে ১০০ থেকে এক সময়ে আবাহনীর স্কোর পরিণত হয় ১৫৬/৮-এ।

সেখান থেকে দলকে আড়াইশ রানের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব মিরাজের। নবম উইকেটে ৪৯ রানের জুটিতে তাকে দারুণ সঙ্গ দেন তাসকিন আহমেদ। ২৫ বলে খেলা তার ২৬ রানের ইনিংসে দুটি ছক্কার পাশে একটি চার।

১১ নম্বর ব্যাটসম্যান সন্দীপ রায়ের সঙ্গে মিরাজ যোগ করেন আরও ৩৬ রান। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরেই ফিরে যান অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার। ৪৪ বলে খেলা মিরাজের ৫০ রানের ইনিংস গড়া ৫ চার ও ৩ ছক্কায়।

১০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে খেলাঘরের সেরা বোলার হালিম। দুটি করে উইকেট নেন সাদিকুর ও আনজুম।

রান তাড়ায় কখনও সেভাবে গতি পায়নি খেলাঘরের ইনিংস। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই সাদিকুরকে ফিরিয়ে দেন মিরাজ।

দ্বিতীয় উইকেটে ৪২ রানের জুটি গড়েন রবিউল ইসলাম রবি ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। দুই জনকেই ফিরিয়ে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। থিতু হয়ে ফিরে যান মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আনজুম। শেষের দিকে তিন ছক্কায় পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমান মাসুম খান।       

৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে আবাহনীর সেরা বোলার মাশরাফি। দুটি করে উইকেট নেন সন্দীপ, নাসির হোসেন ও তাসকিন।

১৫ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রয়েছে আবাহনী। শিরোপা লড়াইয়ে থাকা অন্য দুই দল লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের পয়েন্ট ২০ করে।

নিজেদের শেষ ম্যাচে রূপগঞ্জকে হারালেই ২৪ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে আবাহনী।

শেষ রাউন্ডে আবাহনী রূপগঞ্জের কাছে হারলে এবং শেখ জামাল খেলাঘরকে হারালে তিন দলেরই পয়েন্ট হবে ২২ করে। তখন তিন দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় শিরোপা ঘরে তুলবে শেখ জামাল।      

তিন দলের আগের পাঁচ ম্যাচে শেখ জামালের জয় তিনটি, আবাহনীর দুটি।

আবাহনী ও শেখ জামাল হারলে সুযোগ থাকবে রূপগঞ্জের (০.৫০৭)। তবে রান রেটে এগিয়ে থাকা (০.৮৬৮) আবাহনীকে বড় ব্যবধানে হারাতে হবে তাদের। তা না হলে শেখ জামাল হারলে আবাহনী হেরেও শিরোপা ঘরে তুলবে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৪৬.৩ ওভারে ২৪১ (এনামুল ২৭, নাজমুল ৫৪, মিঠুন ১৮, যশপাল ৫, নাসির ১৫, মোসাদ্দেক ৪, সানজামুল ২৩, মিরাজ ৫০, মাশরাফি ০, তাসকিন ২৬, সন্দীপ ৪*; তানভীর ০/২৬, রবি ০/৪৫, ইরফান ১/৩৩, হালিম ৪/১০, নিরঞ্জন ০/২৫, আনজুম ২/৫২, সাদিকুর ২/৪৬)

খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি: ২৭.৩ ওভারে ১১৪ (রবি ২০, সাদিকুর ০, মাহিদুল ২৭, সাব্বির ৩, আনজুম ২৪, নাজিম ০, তানভীর ৬, মাসুম ২৩*, হালিম ০, ইরফান ১, নিরঞ্জন ১; মাশরাফি ৩/৩২, মিরাজ ১/১০, সানজামুল ০/৩৪, তাসকিন ২/২৫, নাসির ২/৮, সন্দীপ ২/৫)

ফল: আবাহনী ১২৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মেহেদী হাসান মিরাজ