প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরিতে আবাহনীকে জেতালেন বিহারি

শচিন রানাকে দিয়ে শুরু। এরপর মানপ্রিত গনি হয়ে মনন শর্মা। তিনজন ভারতীয়কে এনেও প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স পায়নি আবাহনী। মাঝে দুই ম্যাচ খেলেছে বিদেশি কোনো ক্রিকেটার ছাড়াই। অবশেষে হয়তো একজন বিদেশিকে নিয়ে থিতু হওয়ার সুযোগ এল দলটির। তিনিও ভারতীয়। লিগে প্রথম খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি করেছেন হনুমা বিহারি; জিতেছে আবাহনী।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2018, 12:25 PM
Updated : 24 March 2018, 12:50 PM

জয় দিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগ শুরু করেছে আবাহনী। শিরোপা প্রত্যাশী দলটি ৭৩ রানে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার আবাহনীর ২৭৮ রান তাড়ায় গাজী গুটিয়ে যায় ২০৫ রানেই। 

উইকেট এদিন ব্যাটিংয়ের জন্য খুব সহজ ছিল না। বিহারি নেমেছিলেন দলের কঠিন পরিস্থিতিতে। সেখান থেকেই দারুণ সেঞ্চুরিতে দলকে এনে দেন ভালো স্কোর।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা আবাহনী শুরুতেই হারায় এনামুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্তকে। মন্থর উইকেটে রানের গতিও ছিল শ্লথ।

তৃতীয় উইকেটে সাইফ হাসানের সঙ্গে বিহারি গড়েন ৫২ রানের জুটি। তবে মন্থর উইকেট বিবেচনাও ভীষণ ধীরগতির ছিলেন সাইফ। ৩০ রান করতে খেলেন ৬৩ বল। সাইফের বিদায়ের পর অধিনfয়ক নাসির হোসেনও ফেরেন দ্রুত।

আবাহনীর ইনিংস গতি পায় পরের জুটিতে। উইকেট শট খেলার জন্য কঠিন হলেও মোহাম্মদ মিঠুন শুরু থেকেই খেলতে থাকেন দারুণ সব শট। আরেক পাশে বিহারি ঠাণ্ডা মাথায় এগিয়ে নেন দলকে।

ষষ্ঠ উইকেটে দুজন গড়েন ১৩৬ রানের জুটি। বিহারি প্রথম পঞ্চাশ ছুঁয়েছিলেন ৮০ বলে। পরের পঞ্চাশ করতে লাগে ৩৭ বল। শেষ পর্যন্ত অফ স্পিনার মেহেদি হাসানের ফুল টসে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ১২৪ বলে ১০৯ রান করে।

মিঠুন ফিফটি করেন ৪১ বলে। মাশরাফি বিন মুর্তজা ১৪ রান করে ফেরেন সীমানায় ক্যাচ দিয়ে। ইনিংসের শেষ চার বলে আবাহনীর রানটাকে আরও হৃষ্টপুষ্ট করে তোলেন মোসাদ্দেক হোসেন।

এক পেসার নিয়ে নামা গাজী শেষ ওভারে বোলিংয়ে এনেছিল তরুণ অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে। ওভারের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মারেন মোসাদ্দেক। পরের বলে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে ছক্কা। পরের দুই বলে ছক্কা লং অফ দিয়ে। শেষ ওভার থেকে আসে ২৫ রান।

৬ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক। মিঠুন অপরাজিত ৬২ বলে ৭১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে।

রান তাড়ায় গাজী পথ হারিয়েছে শুরু থেকেই। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সানজামুলের স্পিনে এলবিডব্লিউ অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম। যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট জহুরুল বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন উইকেটে।

ছোট রান আপে ছোট ছোট সুইং আর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আবার ব্যাটসম্যানদের ভোগান মাশরাফি। হাঁসফাস করতে করতে মাশরাফিকে উইকেট দিয়ে আসেন ইমরুল কায়েস।

মুমিনুল হক খেলছিলেন দারুণ। ৫১ বলে ৪৬ রান করে এই বাঁহাতি ফিরেছেন তাসকিনের বলে। এবারের লিগে প্রথম খেলতে নামা ভারতীয় ব্যাটসম্যান অনুস্তুপ মজুমদারের ৬৪ রান কিছুটা কমিয়েছে ব্যবধান। শেষ দিকে ২৯ বলে ২৯ করেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জাকের আলি।

আগের ৫ ম্যাচে মাত্র ১ উইকেট নেওয়া সানজামুল এবার নিয়েছেন ৪ উইকেট। লিগের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মাশরাফি আবারও ছিলেন দুর্দান্ত। ৭ ওভারে দুটি মেডেন নিয়ে ৩০ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৫০ ওভারে ২৭৮/৬ (সাইফ ৩০, এনামুল ৫, শান্ত ৩, বিহারি ১০৯, নাসির ৯, মিঠুন ৭২*, মাশরাফি ১৪, মোসাদ্দেক ২৩*; মেহেদি ২/৪৯, আবু হায়দার ২/৪৫, টিপু ০/৪৭, মুমিনুল ১/৪৭, নাঈম ১/৭৮, অনুস্তুপ ০/৯)।

গাজী গ্রুপ: ৪৩ ওভারে ২০৫ (জহুরুল ৫, ইমরুল ৫, মুমিনুল ৪৬, মেহেদি ০, অনুস্তুপ ৬৪, নাদিফ ১৮, আসিফ ২০, জাকের ২৯*, আবু হায়দার ০, নাঈম ৬, টিপু ২; মাশরাফি ২/৩০, সানজামুল ৪/৫০, মিরাজ ২/২৮, তাসকিন ২/৪৯, নাসির ০/৪৫)।

ফল: আবাহনী ৭৩ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: হনুমা বিহারি