বোল্ট-সাউদির সুইংয়ে ৫৮ রানে অলআউট ইংল্যান্ড

অনুকূল কন্ডিশনে অসাধারণ সুইং বোলিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসলেন ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি। গোলাপি বলে তাদের দারুণ সব ডেলিভারির জবাব খুঁজে পেল না ইংল্যান্ড। দিবা-রাত্রির টেস্টের প্রথম সেশনেই ৫৮ রানে গুটিয়ে গেল জো রুটের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2018, 09:07 AM
Updated : 22 March 2018, 09:07 AM

বোলিংয়েও দিনটি ভালো কাটেনি ইংলিশদের। দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে বড় লিডের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন উইলিয়ামসন। সুইং কী করে সামলাতে হয় দেখিয়ে চলেছেন স্বাগতিক অধিনায়ক।

প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৭৫ রান। স্বাগতিকরা এগিয়ে ১১৭ রানে।

বোল্টের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে মাত্র ২০.৪ ওভারে ৫৮ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। ১৯০০ সাল থেকে দলটির ইনিংস এর চেয়ে কম ওভার টিকেছে মাত্র দুইবার।

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের আগের সর্বনিম্ন ছিল ১৯৭৮ সালে ওয়েলিংটনে করা ৬৪। সব মিলিয়ে টেস্টে এটা ইংল্যান্ডের ষষ্ঠ সর্বনিম্ন স্কোর।

বোলিংয়ে কোনো পরিবর্তন আনতে হয়নি নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে। টানা ২০.৪ ওভার করেন দুই পেসার বোল্ট ও সাউদি। টেস্টে এ নিয়ে ১৫ বার কোনো দলের দুই বোলার গুঁড়িয়ে দিলেন প্রতিপক্ষকে।

অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে বৃহস্পতিবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। আনপ্লেয়েবল এক ডেলিভারিতে অ্যালেস্টার কুককে ফিরিয়ে দেন বোল্ট। পরে ঠিক একই রকমের আরেকটি ডেলিভারিতে তুলে নেন ডাভিড মালানের উইকেট।

দুই উইকেটের মাঝে শূন্য রানে জো রুটকে ফেরান বোল্ট। ১২০ ইনিংসে এনিয়ে চার বার রানের খাতা খোলার আগে আউট হলেন রুট। যার তিনটিই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে।

মিডল অর্ডারকে দাঁড়াতেই দেননি বোল্ট-সাউদি। বেন স্টোকস, জনি বেয়ারস্টো ও মইন আলির কেউই খুলতে পারেননি রানের খাতা। 

মার্ক স্টোনম্যানকে কট বিহাইন্ড করে শিকার শুরু করা সাউদি ফিরিয়ে দেন বেয়ারস্টো ও মইনকে। স্টোকসকে বিদায় করেন বোল্ট। বাঁহাতি পেসারের পঞ্চম শিকার ক্রিস ওকস।

২৩ রানে ৮ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডের সামনে ছিল টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা। ১৯৫৫ রানে নিউ জিল্যান্ডের করা ২৬ রান ছাড়িয়ে আউট হন স্টুয়ার্ট ব্রড। তাকে শূন্য রানে ফেরান সাউদি। 

প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের পাঁচ ব্যাটসম্যান ফিরেন শূন্য রানে, যা তাদের যৌথ সর্বোচ্চ। টেস্টে এনিয়ে তৃতীয়বার পাঁচ ইংলিশ ব্যাটসম্যান ফিরলেন রানের খাতা খোলার আগেই।

১৮৮৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করা ৪৫ এখনও টেস্টে ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন। দশম উইকেট জুটির দৃঢ়তায় সেই রান ছাড়িয়ে যায় তারা। ২৫ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন ক্রেইগ ওভারটন।

জেমস অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে ৩১ রানের দশম উইকেট জুটি ভাঙেন বোল্ট। আগের নয় জুটির মিলিত রানকে দশম উইকেট জুটির ছাড়িয়ে যাওয়ার চিত্র টেস্ট ক্রিকেট এ নিয়ে দেখল পঞ্চমবার।

৩২ রানে ৬ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের সেরা বোলার বোল্ট। ২০১৩ সালে ওয়েলিংটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪০ রানে ৬ উইকেট ছিল তার আগের সেরা। সাউদি ৪ উইকেট নেন ২৫ রানে।

নিউ জিল্যান্ড ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানেন অ্যান্ডারসন। ফিরিয়ে দেন জিত রাভালকে।

টম ল্যাথামের সঙ্গে ৮৪ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে লিড এনে দেন উইলিয়ামসন। জমে যাওয়া জুটি ভাঙেন ব্রড। ল্যাথামকে ফিরিয়ে নেন নিজের চারশতম টেস্ট উইকেট।

বেশিক্ষণ টিকেননি রস টেইলর। অ্যান্ডারসনের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে ফিরে যান ওকসকে ক্যাচ দিয়ে।

নিকোলসের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৫২ রানের জুটিতে দলের লিড তিন অঙ্কে নিয়ে যান উইলিয়ামসন। দিন শেষে অধিনায়ক সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৯ রান দূরে। তার ১৭৭ বলের ইনিংসে ১০টি চারের পাশে একটি ছক্কা। হেনরি নিকোলস ব্যাট করছেন ২৪ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২০.৪ ওভারে ৫৮ (কুক ৫, স্টোনম্যান ১১, রুট ০, মালান ২, স্টোকস ০, বেয়ারস্টো ০, মইন ০, ওকস ৫, ওভারটন ৩৩*, ব্রড ০, অ্যান্ডারসন ১; বোল্ট ৬/৩২, সাউদি ৪/২৫)

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৬৯ ওভারে ১৭৫/৩ (রাভাল ৩, ল্যাথাম ২৬, উইলিয়ামসন ৯১*, টেইলর ২০, নিকোলস ২৪*; অ্যান্ডারসন ২/৩২, ব্রড ১/২৪, ওভারটন ০/৪৩, ওকস ০/৩৬, মইন ০/৩৪)