ক্রিকেট পরিবার
“আমি কিন্তু ওদের ক্রিকেটে আসতে জোর করিনি। চাইলে ওরা যে কোনো কিছুই হতে পারত”, শুরুর দিকেই হাসতে হাসতে বলে নিলেন হাশান। দুই ছেলের হাসি তুলে ধরছিল যেন অন্য সুর, এমন ক্রিকেটীয় আবহে বেড়ে উঠলে জোর করতে হবে কেন! বাবা টেস্ট ক্রিকেটার, দেশের অধিনায়ক। জন্মের পর থেকেই চারপাশের জগত ক্রিকেটময়। ছেলেবেলার খেলনাও ছিল ব্যাট-বল। ক্রিকেটার না হয়ে উপায় আছে! বাবার পথ অনুসরণ করতে পারায় দুজনই যে দারুণ তৃপ্ত, সেটি ফুটে উঠল দুভিন্দুর কণ্ঠে।
“ক্রিকেটীয় পরিবেশে বেড়ে ওঠাই আমাদের দুজনের ক্রিকেটে আগ্রহী হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ। আমরা দুজনই এখন নিজেদের নিয়ে অনেক খুশি যে আমরা ক্রিকেটে এসেছি। শ্রীলঙ্কার একজন সাবেক অধিনায়কের ছেলে হওয়াটাও দারুণ গর্বের।”
বাবা ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। দলের প্রয়োজনে লম্বা সময় কিপিংও করেছেন। দুই ছেলেও বাঁহাতি। তবে বাবার মতো ব্যাটসম্যান নন কেউ। দুভিন্দু অর্থোডক্স স্পিনার, রাভিন্দু রপ্ত করছেন চায়নাম্যানের কঠিন শিল্প। বাবার তাতে আপত্তি নেই।
২১ বছর বয়সী দুই যমজ ভাই এখন খেলছেন শ্রীলঙ্কার ঘরোয়া ক্রিকেটে। তবে কলেজ থেকেই দুজনের দল আলাদা। কুমার সাঙ্গাকারার সৌজন্যে বিখ্যাত হয়ে ওঠা ট্রিনিটি কলেজে ছিলেন দুভিন্দু। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী সেন্ট টমাস কলেজে রাভিন্দু। এখন দুজন দুই ক্লাবে।
ক্রিকেট পরিবারের গল্প শেষ নয় এই তিন জনেই। হাশানের ছোট ছেলে রাজিন্দু তিলকরত্নে খেলছেন অনূর্ধ্ব-১৩ ক্রিকেটে। “রাজিন্দু লেগ স্পিনার ও ডানহাতি ব্যাটসম্যান। আমাদের সবার মধ্যে সবচেয়ে প্রতিভাবান মনে হয় সে”, বাবার চোখ স্বপ্নাতুর।
গোটা পরিবারকে এক সুতোয় গেঁথে রেখেছেন অপ্সরি তিলকরত্নে। হাশান যদিও স্ত্রীকে ডাকেন ‘দিপিকা’ নামে। এক সময় ছিলেন এমিরেটস এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু। হাশানের সঙ্গে পরিচয়, ভালোলাগা দ্রুত রূপ নিয়েছিল পরিণয়ে। পেশাদার ক্রিকেটারের সংসার সামলানো ভীষণ ঝক্কির। এক সময় তাই আকর্ষণীয় চাকরিটি ছেলে মন দিয়েছিলেন সংসার গড়ায়। সেই আত্মত্যাগ তৃপ্তি হয়ে ফিরে পান নিজের শান্তিময় জগতে।
এই পরিবার শেষ পর্যন্ত তাকেও টেনেছে ক্রিকেটে। গত বছর দায়িত্ব নিয়েছেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে মেয়েদের কমিটির আহবায়ক হিসেবে। ‘তিলকরত্নে অ্যান্ড কোম্পানি’ এখন সত্যিকার অর্থেই পরিপূর্ণ ক্রিকেট পরিবার!
দুই ভাইয়ের বেড়ে ওঠা
১৯৯৬ সাল, হাশানের জীবনের এক অদ্ভুত আনন্দময় বছর। দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেলেন মার্চে। সন্তানসম্ভবা অপ্সরি ডাক্তারের নিষেধ অমান্য করে লাহোরে উড়ে গেলে বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখতে। দুজনে ফিরলেন বিশ্বজয়ের আনন্দে। সেপ্টেম্বরে দেশের মাটিতে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে চার দেশীয় ওয়ার্ল্ড সিরিজ কাপ জিতল শ্রীলঙ্কা। সেই ঘোরলাগা সময়েই আরেকটি অপার আনন্দ। পিতৃত্বের অতুলনীয় স্বাদ!
৭ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড সিরিজের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারালেন। ৯ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর আলোয় তার যমজ সন্তান। স্বপ্নময় সময়টায় ফিরে তাকিয়ে এত বছর পরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে হাশানের চোখজোড়া।
“আমাদের হাউজ ওয়ার্মিং পার্টি ছিল সেদিন। হুট করে অসুস্থ হয়ে পড়ল দিপিকা, দ্রুত হাসপাতালে নিলাম। কিছুক্ষণ পরই আমার দুই সন্তান আমার কোলে। কী রোমাঞ্চকর সময়টাই না ছিল! ওদের জন্মর আধঘণ্টার মধ্যে অর্জুনা (রানাতুঙ্গা) থেকে শুরু করে দলের সবাই হাসপাতালে এসেছিল দেখতে।”
দুভিন্দুর এক মিনিট পর জন্ম রাভিন্দুর। জন্মের পরপরই চোখের সামনে বিশ্বজয়ী তারকারা, ক্রিকেটার না হয়ে যাবেন কোথায়!
হাঁটতে শেখার পর থেকেই দুই ভাই ক্রিকেট পাগল। বাসার ঝাড়ু, রান্নাঘরের ছুরি, চামচ, টেবিলের প্লেট, হাতের কাছে এমন যা মিলত, সবই ছিল তাদের কাছে ব্যাট। পরে যদিও আপন করে নেন বলকে।
যমজ ভাইদের চেহারায় এত মিল ছিল যে দুজনের ১২ বছর বয়স অব্দি তাদের মা পর্যন্ত হিমশিম খেতেন আলাদা করতে। একবার দুজনের একসঙ্গে অসুখ করল। মা একই ট্যাবলেট দুইবার খাইয়ে ফেলেছিলেন দুভিন্দুকে!
দুই ভাইয়ের রক্তে ছিল ক্রিকেট। সেটা ভাবনায় আর স্বপ্নে চলে এলো বাবার সৌজন্যে। দুজনই ছিলেন বাবার খুব ন্যাওটা, “আমার সঙ্গে সবসময় থাকতে চাইত ওরা। শ্রীলঙ্কার ড্রেসিং রুম কেমন, ওরা সেটা জানে। আমি ছোট থেকেই ওদেরকে ড্রেসিং রুমে নিয়ে গেছি। অনেক সময় সফরে নিয়ে গেছি সঙ্গে। ক্রিকেটাররাও ওদেরকে খুব পছন্দ করত, আদর করত। আমার ক্লাবের খেলায় তো নিয়মিতই নিয়ে যেতাম।”
আয়নায় হাশান তিলকরত্নে
চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা। লড়াকু মানসিকতা। ক্রিকেটার হাশান তিলকরত্নেকে ভাবলে সবার আগে ভেসে ওঠে এই প্রতিচ্ছবি। শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সেরা ব্যাটসম্যানদের ওপরের দিকে হয়ত থাকবেন না। তবে সবচেয়ে লড়িয়ে ক্রিকেটারদের তালিকায় থাকবেন শুরুর দিকে।
এমনিতে পরিসংখ্যানও খুব বিবর্ণ নয়। ৮৩ টেস্ট খেলেছেন। ১১ সেঞ্চুরিতে ৪ হাজার ৫৪৫ রান করেছেন ৪২.৮৭ গড়ে। এমনকি সনাৎ জয়াসুরিয়া, তিলকরত্নে দিলশান, মারভান আতাপাত্তু, অর্জুনা রানাতুঙ্গাদের চেয়ে ভালো তার টেস্ট গড়। কিপিং করেছেন ১১ টেস্টে। দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১১ টেস্টে।
২০০ ওয়ানডেতে ২ সেঞ্চুরিতে রান ৩ হাজার ৭৮৯। দলে তার ভুমিকা ছিল ফিনিশারের। ক্যারিয়ারের অর্ধেকের বেশি ইনিংস ব্যাট করেছেন ছয়-সাতে, নইলে হয়ত আরেকটু বেশি থাকত ওয়ানডে রান।
আরেকটি মজার কারণেও অবশ্য আলাদা করে মনে রাখা যায় তিলকরত্নে। মাঝেমধ্যে হাত ঘোরাতেন। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে এক ওভারে তিন বল করেছিলেন বাঁহাতে, তিন বল ডান হাতে!
তবে পরিসংখ্যান তাকে বোঝাতে পারবে না সবটা। একসময় যে পার্থে খেলতে পা কাঁপত উপমহাদেশের দলগুলির, বিশ্বের সবচেয়ে ভীতিকর সেই ২২ গজে ম্যাকডারমট-ম্যাকগ্রা-ওয়ার্নদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন ১৯৯৫ সালে। প্রথম শ্রীলঙ্কান হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় সেঞ্চুরি করেছেন ২০০২ সালে। তার সামর্থ্য বলে দেয় এই ইনিংসগুলোই। হাশানের মনে এখনও দোলা দেয় সেই টুকরো টুকরো স্মৃতিগুলো।
“শ্রীলঙ্কার হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের চেয়ে বড় আর কিছু নেই। জীবনের সেরা অর্জন। তবে সেরা ইনিংস দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরিয়নের সেঞ্চুরি। মনে আলাদা জায়গা নিয়ে আছে। ওখানে আগে এত এত ব্যর্থতা ছিল আমাদের, সেবার আমি দারুণ প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিলাম। সেটির ফল পাওয়াটা ছিল তৃপ্তির।”
“উপমহাদেশ থেকে গিয়ে আমাদের সবাইকেই ওখানে ভুগতে হয়। আমরা আগেও সেখানে গিয়েছি। ব্যর্থ হয়েছি। আমি নিজেকে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম যে ওই সব কন্ডিশনে ভালো করলেই ভালো হতে পারব। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি, ব্যাক ফুটে খেলা নিয়ে কাজ করেছি। বল ছাড়া নিয়ে কাজ করেছি। এসব আমাকে সাহায্য করেছে।”
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে শেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০০৪ সালে। ২০০৬ সালে ননডেসক্রিপ্টস ক্লাবের হয়ে ১৭১ রানের ইনিংস খেলে ইতি টানেন প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের।
এরপর নানা ভূমিকায় সম্পৃক্ত থেকেছেন ক্রিকেটেই। নানা সময়ে ছিলেন শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের ম্যানেজার, নির্বাচক, ব্যাটিং কোচ। জড়িয়েছেন রাজনীতিতে। তবে অনেক ভোগান্তির পর রাজনীতি ছেড়েছেন। এখন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ব্যাটিং কোচ হিসেবে কাজ করছেন একাডেমি, ইমার্জিং ও ডেভলপমেন্ট স্কোয়াডের সঙ্গে।
বাবার শিক্ষা ছেলেদের প্রেরণা
ছেলেরা যখন সত্যিকার অর্থেই ক্রিকেটকে ভবিষ্যত হিসেবে নিল, দুটি কথা তাদেরকে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিলেন বাবা। তিলকরত্নে নামকে খুঁটি হিসেবে নেওয়া যাবে না আর কঠোর পরিশ্রম ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
বাসা থেকে মাঠ কিংবা মাঠ থেকে বাসায় ফেরার পথে, ট্রেনিংয়ে, আড্ডায় এই কথা ভাঙা রেকর্ডের মতো ছেলেদের কানে বাজিয়ে গেছেন হাশান।
“আমি সবসময়ই বলে এসেছি, ওদেরকে নিজেদের পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে। আমার নামে ভর করে এগিয়ে যাওয়া চলবে না। কঠোর পরিশ্রমই সাফল্যের মূল মন্ত্র। শিখতে হবে কঠিন পথে হেঁটেই। সাফল্যের কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই।”
দুই ছেলের সেই কঠিন অভিজ্ঞতা হয়েও গেছে এর মধ্যে অনেক। সাবেক অধিনায়কের ছেলে হিসেবে যতটা মসৃণ হওয়ার কথা, ততটাই কণ্টকাকীর্ণ ছিল তাদের পথচলা। বয়সভিত্তিক দলে জায়গা পেতে কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। অনুর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে খেলেছেন, কিন্তু যুব বিশ্বকাপে জায়গা পাননি। এখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে জায়গা পাকা করতেও লড়তে হচ্ছে। অনেক ক্রিকেট রাজনীতির শিকারও হয়েছেন, কিন্তু বাবার কাছে অভিযোগ করেননি বা প্রভাব খাটাননি। নিজেদের পথ বের করার চেষ্টা করেছেন।
দুভিন্দু অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের শুরুতেও ছিলেন বাঁহাতি পেসার। কোচ সম্পত পেরেরার পরামর্শে পরে হয়ে গেছেন স্পিনার। বাবা কোনো বাধা দেননি।
বাবার শেখানো মন্ত্র দুই ছেলে মন দিয়েই জপছেন, সেটার প্রমাণ রাভিন্দুর কথায়।
“আমি একটি কথা সবসময় বিশ্বাস করি। আমার বাবাই শিখিয়েছেন যে, কোনো কিছু পেয়ে যাওয়ার চেয়ে অর্জন করে নেওয়া অনেক ভালো। আমরা দুজনই তাই এখন পরিশ্রম করছি। নিজেদের তৈরি করার চেষ্টা করছি। যখন উপযুক্ত হবো, সুযোগ মিলবেই। আমাদের তাড়া নেই।”
পাশ থেকে সুর মেলালেন দুভিন্দু, “প্রতিভার কম-বেশি থাকতেই পারে, কিন্তু কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। একটি পর্যায় পর্যন্ত যেতে হলো অনেক ঘাম ঝরাতে হয়। আমরা জানি, চেষ্টা করে গেলে ফল মিলবেই।”
পরস্পরের চোখে দুই ভাই
একটা সময় পর্যন্ত দুজনে ছিলেন মাণিকজোড়। পরে বদলে গেছে জগত। দুজনে আলাদা কলেজে, আলাদা ক্লাবে। বন্ধুরাও সব আলাদা। তার পরও দুজন সুযোগ খোঁজেন একসঙ্গে সময় কাটানোর। একসঙ্গে ট্রেনিং করার।
রাভিন্দুর চোখে এক মিনিটের বড় ভাই দুভিন্দুর বোলিংয়ের বড় শক্তি, তার ধৈর্য।
“ও ব্যাটসম্যানকে পড়তে পারে দ্রুত। তার পরও সেই দুর্বল জায়গায় বল করতে থাকে। সময় নিয়ে ব্যাটসম্যানকে কাবু করার পথে টানতে পারে। এটা বড় গুণ।”
দুভিন্দু জানালেন চায়নাম্যান রাভিন্দুর বড় গুণের কথা।
“ও দুই দিকেই বল টার্ন করাতে পারে। ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করতে পারে। অনেক বড় ব্যাপার বেশ দ্রুত রপ্ত করেছে।”
স্বপ্নের পথে হাঁটা
ক্রিকেটে যমজ ভাইদের কথা বললে সবার আগেই আসবে স্টিভ ও মার্ক ওয়াহর নাম। চার মিনিটের ব্যবধানে পৃথিবীতে আসা অস্ট্রেলিয়ান দুই ভাইয়ের ক্রিকেট বিশ্ব আলোকিত করার গল্প অনুপ্রাণিত করে দুভিন্দু ও রাভিন্দুকে। একসঙ্গে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখেন তারাও।
তবে স্বপ্নে বিভোর নন তারা। বোঝেন বাস্তবতা। তাই এগোতে চান ছোট ছোট পদক্ষেপে। উন্নতি করতে চান প্রতিদিন একটু একটু করে। আপাতত দুজনেরই চাওয়া, পরের মৌসুমে আরও উন্নতি করে ঘরোয়া ক্রিকেটে আলো ছড়ানো। ছেলেদের নিয়ে তাড়া নেই হাশানেরও।
“ধীরে ধীরে এগোচ্ছে ওরা। আমার তাড়া নেই। চাই ওরা সময় নিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করুক। মৌলিকতার শিক্ষা জোরদার হোক। এটা ১০০ মিটার স্প্রিন্ট নয়, ম্যারাথন। ধৈর্য ধরতে হবে।”
‘তিলকরত্নে’ নাম থেকে কোনো সুবিধা না পেলেও অদৃশ্য একটা চাপ তারা ঠিকই টের পেয়েছেন ক্রিকেট শুরুর পর থেকেই। তবে সেই চাপকেও করতে শিখে গেছেন তারা, বললেন দাভিন্দু।
“অবশ্যই অনেক প্রত্যাশার চাপও আছে। হাশান তিলকরত্নের ছেলে কেমন করছে, জানতে চায় সবাই। আমরা সেটিকে অনুপ্রেরণায় রূপ দিতে চেয়েছি। কারণ এটিই আমাদের ভালো করতে উজ্জীবিত করে।”
বাবার সঙ্গে এখনও প্রচুর সময় কাটান দুজন। কথা বলেন ক্রিকেট নিয়ে। নিজের সময়ের প্রচুর গল্প বলে উৎসহ জোগান ছেলেদের। বাবার দারুণ ইনিংসগুলোর ভিডিও প্রায়ই দেখেন দুই ভাই। উজ্জীবিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন আরও বেশি পরিশ্রমে।
ক্রিকেটের ভুবনে দুজনের জায়গা কোথায় হবে, সেটি বলে দেবে সময়। তা নিয়ে খুব একটা ভাবনাও নেই হাশানের। বরং জীবনের আঙিনায় ছেলেদের দেখতে চান মহীরূহ হয়ে উঠতে।
“আমি চাই ওরা ভালো মানুষ হোক। ক্রিকেটার ভালো-খারাপ হতেই পারে, যেন ভালো মানুষ হয়। ক্রিকেটেও ভালো সময়, খারাপ সময় আসবে। বড় মানুষ হলে ক্রিকেটের ভালো-খারাপকেও সহজভাবে নিয়ে যেন সামনে এগিয়ে যেতে পারবে। বড় ক্রিকেটার হলে হয়ত জনপ্রিয়তা পাবে। বড় মানুষ হলে আরও বেশি পাবে শ্রদ্ধা।”