এমন নয় যে নেতৃত্ব আগে ভালো লাগছিল না। বরং বরাবরই তিনি নেতৃত্বে দিতে ভালোবাসেন। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্নের কথা বলেছেন বহুবার। তবে আরাধ্য জগতে যখন পা রাখলেন, আনাগোনা শুরু হলো দুঃস্বপ্নের!
নেতৃত্ব যেভাবে পেয়েছিলেন, সেটা আদর্শ নয় অবশ্যই। মূল অধিনায়ক চোটে দলের বাইরে, তিনি ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। অন্তবর্তীকালীন কাজ চালানো সবসময়ই কঠিন। সেই অধিনায়ক আবার দলের সেরা ক্রিকেটারও। তাকে হারিয়ে দলের ভারসাম্যেও লেগেছে চোট।
এই দলের নেই একজন কোচও। সব মিলিয়ে হুট করেই দলটি পড়ে গেল দুঃসময়ের বলয়ে। নেতার জন্যও তাই দুঃসময়!
এমনিতে ড্রেসিং রুমে দারুণ জনপ্রিয় মাহমুদউল্লাহ। নিজস্ব বলয়ের বাইরে অন্তর্মুখী হিসেবে পরিচিত থাকলেও নিজের জগতে তিনি ভীষণ আমুদে। দলের সবার প্রিয় চরিত্র। কিন্তু দুঃসময়ের থাবায় সেই মানুষরই মন গুমোট।
ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব, কিন্তু আনুষ্ঠানিক অধিনায়ক তো তিনিই। দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি টেস্ট, দুটি টি-টোয়েন্টিতে জয় নেই। শ্রীলঙ্কায় এসেও প্রথম ম্যাচে জয় অধরা। মনের ভেতর অস্থিরতা। কবে মিলবে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম জয়ের দেখা?
সেই খরার পর বর্ষণ তাই দারুণ মধুর হয়ে এসেছে মাহমুদউল্লাহর কাছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্মরণীয় জয় দিয়ে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ খুললেন জয়ের খাতা। ভেতরটায় যা বইয়ে দিয়েছে স্বস্তির হিমেল হাওয়া। সেই স্বস্তির কথা শোনালেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমকে।
এমনিতে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ সফল অধিনায়ক মাহমুউল্লাহ। পরিচিতি আছে অনুপ্রেরণাদায়ী অধিনায়ক হিসেবে। তবে যে সময়, যে পরিস্থতিতে জাতীয় দলের নেতৃত্ব পেলেন, তার জন্য কাজটি খুবই কঠিন। আত্মবিশ্বাসে তলানিতে থাকা দলকে জাগানো সহজ নয়।
টানা হারে থাকলে অধিনায়ক হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও উঠতে থাকে প্রশ্ন। চারদিকে নানা সমালোচনা তাকে স্পর্শ করেছে। তাছাড়া সাধারণ্যে তা বটেই, না জিতলে ড্রেসিং রুমেও থাকে সংশয়ের মেঘ। মাহমুদউল্লাহর বিশ্বাস, এই জয়ের পর কাজটি সহজ হবে।
“আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, অধিনায়ক হিসেবে দলকে অনুপ্রাণিত করতে পারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জয়ের পর সেই কাজটা সহজ হয়। আমরা হয়ত কিছুটা হলেও খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। অনেকেই অনেক কথা বলতে শুরু করেছিল। অনেকের সংশয় ছিল। সেটা সরানো দরকার ছিল।”
তবে এই স্বস্তি পাওয়ার চেয়ে ধরে রাখা যে কঠিন, সেটি ভালো করেই জানেন মাহমুদউল্লাহ। জানেন, একটু দূরে সরে যাওয়া প্রশ্নগুলো আবার ভিড় করতে পারে সামনে। তাই স্বস্তিটাকে সঙ্গীকে এগিয়ে যেতে চান সাফল্যের পথে।
“আমি মনে করি, এটা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। এখান থেকে সামনে এগোনোর বিষয়। ভালো খেলতে হবে অবশ্যই। আমাদের প্রয়োজন ছিল আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া। সেটি আমরা পেয়েছি। এবার তা কাজে লাগাতে হবে। নইলে আগের জয়েরও মূল্য থাকবে না। বিশ্বাস আছে, আমরা পারব।”