সেরা সময়ের ডাক শুনছেন মুশফিক

অন্য দুই সংস্করণের পাশে বেশ মলিন তার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে ইঙ্গিত বিবর্ণ রেকর্ড রঙিন করে তোলার। মুশফিকুর রহিম দেখছেন নিজের সেরা সময়ের শুরু। সাজিয়ে তুলতে চান টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার।

ক্রীড়া প্রতিবেদক কলম্বো থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2018, 04:42 PM
Updated : 12 March 2018, 05:46 PM

দেশের মাটিতে সবশেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে ৬১ টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকের ফিফটি ছিল কেবল একটি। বিপিএলে তিনে দেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যানদের একজন তিনি। কিন্তু সেই সাফল্য অনুদিত হচ্ছিল না আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে।

বদলটা দেখা যাচ্ছে গত কিছুদিনে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের মাটিতে সিরিজে ক্যারিয়ারে প্রথমবার সুযোগ পেলেন তিনে ব্যাট করার। প্রথম সুযোগেই ক্যারিয়ার সেরা ৪৪ বলে ৬৬।

শ্রীলঙ্কায় এসে খেলছেন চারে। প্রস্তুতি ম্যাচে খেললেন ৬৫ রানের দারুণ ইনিংস। এই ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথম ম্যাচে ফিরেছিলেন ১৮ রানে। শনিবার ৩৫ বলে অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংস খেলে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন দলকে।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারটা নিয়ে আক্ষেপ আছে মুশফিকেরও। সেখানে বড় দায় দেখছেন ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় নিজের ব্যাটিং অর্ডারের।

“টি-টোয়েন্টিতে শুরুটা যেভাবে করতে চেয়েছিলাম, অবশ্যই সেভাবে হয়নি। সবারই স্বপ্ন থাকে দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখার। টপ অর্ডারে সেই সুযোগটা বেশি। টপ অর্ডারে হয়ত ১০-১৫টি ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছি। এখন একজন পাওয়ার হিটার না হয়ে সাত-আটে নেমে সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই জায়গায় আমি পিছিয়ে ছিলাম।”

“অবশ্যই দলের প্রয়োজন সব জায়গায় ব্যাট করব। তবে টপ অর্ডারে নিয়মিত সুযোগ পেলে হয়ত এভাবেই ভালো করতে পারব। সামনে যতদিন খেলব সামনে, চেস্টা করব ক্যারিয়ারটা ঠিক করতে। পাশাপাশি দলের রেকর্ড ঠিক করতে।”

এই বছরের আগে টি-টোয়েন্টিতে ৬১ ম্যাচের ৫৩ ইনিংসে ২৪টিতে চারে ব্যাট করেছিলেন মুশফিক। ২৯টিতেই নেমেছেন তার পরে। এমনকি সাত, আট ও নয় নম্বরেও খেলতে হয়েছে মোট ১৪ ইনিংস।

গত বছর ৪টি টি-টোয়েন্টি খেলে মুশফিকের ব্যাটিং গড় ছিল ৯.৫০। এ বছর এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচে গড় ৮১!

ব্যাটিং অর্ডারে ওপরে নামা তো বটেই, মুশফিকের এই উন্নতির পেছনে আছে দিনের পর দিন পরিশ্রম, ঘাম ঝরানো আর নিবেদন। পেশি শক্তিতে তিনি দানবীয় নন, তাই টি-টোয়েন্টির দাবি মেটাতে যোগ করেছেন স্কিল।

“কিছু বাড়তি শট যোগ করার চেষ্টা করেছি। ব্যাটিংয়ে কারণ টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাইক রেটই গুরুত্বপূর্ণ। পাওয়ার হিটার না হলে স্কিল দিয়ে সেই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। আমি সেটিই চেষ্টাই করেছি। চেষ্টা থাকবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখার।”

ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতির পাশাপাশি স্কিলে উন্নতি, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, সব কিছুর মিশেলে মুশফিকে শুনতে পাচ্ছেন নিজের সেরা সময়ের ডাক।

“১৩-১৪ বছর ধরে খেলছি। বাংলাদেশ দল ও ক্রিকেট খেলাটা থেকে আমি যা পেয়েছি, তার কিছু ফিরিয়ে দিতেই হবে। এটিই হয়ত সেরা সময়। যতদিন খেলব, আশা করি দেশকে কিছু দিতে পারব।”