কাটারে উইকেট পাওয়ায় খুশি মাশরাফি

ব্যাটের কানায় লেগে একটা বাউন্ডারি হয়ে গেলে ঘুরে যেতে পারে ম্যাচের মোড়। তবে নিজের সামর্থ্যে আস্থা রেখে ঝুঁকিটা নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। করে যান একের পর এক কাটার। তাতেই আসে সাফল্য। অভিজ্ঞ এই পেসার খুশি পুরানো বলে কাটারে উইকেট পাওয়ায়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2018, 04:44 PM
Updated : 6 March 2018, 04:44 PM

ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে আবাহনীর ১১ রানের জয়ে দারুণ অবদান মাশরাফির। ৪৪ রানে নেন ৬ উইকেট।

ম্যাচ শেষে নিজের প্রতিক্রিয়ায় মাশরাফি জানান, পুরান বলে নিজের শক্তির জায়গাটা ঝালিয়ে নিতে পারায় তিনি খুশি।

“আমার জন্য নতুন বলে শুরুটা ভালো হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। উইকেট না পাই, বোলিং ভালো হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। পুরানো বলে আমার শক্তি যে কাটার, আমি আজকেও তার চেষ্টা করেছি। শেষের চারটা উইকেটই নিয়েছি কাটারে।”

“হ্যাটট্রিক তো করেছি, সত্যি কথা বলতে ওই অনুভূতিটা নেই। ম্যাচ জিততে পেরেছি সেটাই ভালো লাগছে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতেই আমাদের দলে পেস বোলিংয়ে কিছুটা ঘাটতি আছে। গত ম্যাচটা আমরা এই কারণেই হেরেছিলাম। আজকে আমরা বোলিংয়ের জন্য হেরে যাচ্ছিলাম। এবার জিততে পেরে ভালো লাগছে।”          

৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ২২ রান দিয়ে মাশরাফি ছিলেন উইকেটশূন্য। দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম ওভারে ফেরান সেঞ্চুরিয়ান শাহরিয়ার নাফীসকে। উইকেট শিকার সেই শুরু, থামেন প্রতিপক্ষকে অলআউট করে।

শেষ ওভারে অগ্রণী ব্যাংকের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। সেই ওভার থেকে মাত্র এক রান নিতে পারে প্রতিপক্ষ। ওভারটি করার সময় ঠিক কী ভাবনা কাজ করছিল মাথায় জানালেন মাশরাফি।

“প্রতিপক্ষ যেই থাকুক আমি সব সময় আমার শক্তির জায়গা থেকেই বোলিং করি। আমি কাটারই করছিলাম। দুই একটা হয়তো ক্রস সিমে করছি। ইয়র্কার করার চেষ্টা করিনি। রাজ্জাকের বিপক্ষে একটা করেছি, চার খেয়েছি। আমি মিড অফ উপরে রেখে কাটার করে বোলিং করেছি। ওই সময় ওর উইকেটটা খুব প্রয়োজন ছিল। উইকেটটা নেওয়ার জন্যই বলটা করেছি।”

“এভাবে বোলিং করায় অনেক চাপ থাকে। ধরেন, থার্ডম্যান উপরে রেখেছেন। কিন্তু কানায় লেগে চার হয়ে গেল, এতে চাপ বেড়ে যাবে। এসব চিন্তা কিন্তু আসে। এসব ক্ষেত্রে ভালো বোলিং করলেও হয় না, ভাগ্যটা পক্ষে আসতে হয়। কেননা, যে কোনো সময় কানায় লেগে চার হয়ে যেতে পারে। তখন কিছু করার থাকে না।”

এমন ভাবনা থেকে মাশরাফি একবার থার্ড ম্যান পিছিয়ে দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন।

“এইসব নেতিবাচক চিন্তা না করে উচিত নিজের শক্তির জায়গা মেনেই বোলিং করা। আমার মাথায়ও নেতিবাচক চিন্তা এসে ছিল। একবার ভেবেছি থার্ডম্যান পেছনে নিব নাকি। তারপরও উপরে রেখেই বোলিং করেছি। যদি হয়ে যায় কিছু করার নাই।”

এবারের লিগের জন্য উন্মুখ ছিলেন মাশরাফি। দক্ষিণ আফ্রিকায় বিবর্ণ সফর শেষেই ঠিক করেছিলেন, ঢাকা লিগ দিয়ে ওয়ানডের জন্য নিজের বোলিংটা ঝালাই করে নিবেন। 

“লিগের আগেই আমি পরিকল্পনা করেছিলাম, জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুতিটা ঠিকভাবে করার জন্য এটা আমার জন্য দারুণ সুযোগ। সবচেয়ে বড় কথা, এটা আমার অনুশীলনের জন্য দারুণ সুযোগ। অন্যরা হয়তো টেস্ট খেলছে, টি-টোয়েন্টি খেলছে, আমি হয়তো পারছি না। এই ১৬টা ম্যাচ আমার কাজে লাগানোর খুব ইচ্ছে ছিল। সুস্থ থাকলে হয়তো সব ম্যাচ খেলতে পারব।”

সব মিলিয়ে এবারের ঢাকা লিগে ৮ ম্যাচে মাশরাফির উইকেট হলো ২৫টি। চার ও পাঁচ উইকেট দুবার করে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে করলেন নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক। দেশের প্রথম বোলার হিসেবে টানা চার বলে উইকেট নিয়ে গড়লেন ইতিহাস। পরের আট ম্যাচে মাশরাফির নজর ধারাবাহিকতা ধরে রাখায়।