অপরাজিত সেঞ্চুরিতে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। আগের ম্যাচে ৯৯ রানে আউট হওয়া অগ্রণী ব্যাংকের ওপেনার শাহরিয়ার নাফীস এবার করেন সেঞ্চুরি। কিন্তু এবারও হেরেছে তার দল।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচে ১১ রানে জিতেছে আবাহনী। ২৯০ রান তাড়ায় এক বল বাকি থাকতে ২৭৯ রানে গুটিয়ে যায় অগ্রণী ব্যাংক।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে এনামুল হক ও সাইফ হাসানের ব্যাটে আবাহনীর শুরুটা ছিল সতর্ক। দুই ব্যাটসম্যানই ফিরেন থিতু হয়ে।
অধিনায়ক নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনও ফিরেন থিতু হয়ে। নিয়মিত উইকেট হারানোয় সেভাবে গতি পাচ্ছিল না আবাহনীর ইনিংস।
৩৬তম ওভারে মোসাদ্দেক ফিরে যাওয়ার সময় আবাহনীর স্কোর ১৪৭/৪। ক্রিজে এসেই শট খেলতে শুরু করেন মোহাম্মদ মিঠুন। ডানা মেলেন শান্তও। জমে উঠে দুই জনের জুটি।
১৪ ওভারে দুই জনে তুলেন ১৪০ রান। ৩৮ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৪৬ রান করে মিঠুনের বিদায়ে ভাঙে জুটি। ইনিংসের শেষ বলে ফিরে যান মাশরাফি।
৭৮ বলে শান্ত পৌঁছান ফিফটিতে। পরের পঞ্চাশ ছুঁতে লাগে মাত্র ৩০ রান। শেষ পর্যন্ত ১২৩ বলে ১১টি চার ও তিনটি ছক্কায় বাঁহাতি ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ১৩৩ রানে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটা তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। দায়িত্বশীল এই ইনিংসে তিনি জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
অগ্রণী ব্যাংকের সালমান হোসেন ও আল আমিন নেন দুটি করে উইকেট।
রান তাড়ায় অগ্রণী ব্যাংকের শুরুটা ছিল মন্থর। অষ্টাদশ ওভারে ৬৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে কক্ষপথে ফেরান শাহরিয়ার ও রাজা আলি দার। তৃতীয় উইকেটে দুই জনে গড়েন ১৪৬ রানের জুটি।
পাঁচটি চারে ৬২ রান করা রাজাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত আরিফুল হাসান। ক্রিজে এসেই শট খেলতে শুরু করেন ধীমান। তার সঙ্গে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সপ্তম সেঞ্চুরি পাওয়া শাহরিয়ারের জুটি।
১১৯ বলে ১৩টি চার ও তিনটি ছক্কায় ১২১ রান করা শাহরিয়ারকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেট নেন মাশরাফি। পরের ওভারে অভিজ্ঞ এই পেসার ফিরিয়ে দেন সালমানকে।
আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে দলকে পথেই রেখেছিলেন ধীমান। তাদের ব্যাটে লক্ষ্যের দিকে দ্রুত ছুটছিল অগ্রণী ব্যাংক। পঞ্চাশতম ওভারের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে ধীমানকে স্ট্রাইক দেন রাজ্জাক।
২৭ বলে ৪৬ রান করা ধীমানকে ফিরিয়ে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন মাশরাফি। পরের বলে ফিরিয়ে দেন রাজ্জাককে। শফিউল ইসলামের উইকেট নিয়ে মাশরাফি লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে করেন নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক।
মাশরাফির শিকার শেষ হয়নি সেখানে। পরের বলে ফিরিয়ে দেন অভিষিক্ত ফজলে রাব্বিকে। চার বলে মাশরাফির চার উইকেটে এক বল বাকি থাকতে অলআউট হয়ে যায় অগ্রণী ব্যাংক।
চলতি লিগে আসিফ হাসান ও মোহাম্মদ শরীফের পর তৃতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করলেন মাশরাফি।
আট ম্যাচে সপ্তম জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগের শীর্ষে অবস্থান দৃঢ় করেছে আবাহনী। সমান ম্যাচে ষষ্ঠ হারের স্বাদ পেয়েছে অগ্রণী ব্যাংক।
আবাহনী: ৫০ ওভারে ২৯০/৬ (এনামুল ২৩, সাইফ ২৪, শান্ত ১৩৩*, নাসির ২৫, মোসাদ্দেক ১৯, মিঠুন ৪৬, মাশরাফি ১; আল আমিন ২/৫৫, শফিউল ১/৪২, রাব্বি ০/৩৫, সালমান ২/৪০, রাজ্জাক ১/৭৮, রাজা ০/৩১)
অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৪৯.৫ ওভারে ২৭৯ (শাহরিয়ার ১২১, আজমির ২১, সায়মন ৬, রাজা ৬২, ধীমান ৪৬, সালমান ০, জাভেদ ২, রাজ্জাক ১২, শফিউল ০, রাব্বি ০, আল আমিন ০*; মাশরাফি ৬/৪৪, মনন ১/৪২, আরিফুল ২/৫৭, সানজামুল ১/৪১, নাসির ০/৫২, মোসাদ্দেক ০/৩৪, সাকলাইন ০/৯)
ফল: আবাহনী ১১ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাজমুল হোসেন শান্ত