মাশরাফির দুর্দান্ত নৈপুণ্যেও পারল না আবাহনী

বল হাতে ৪ উইকেট। ব্যাটিংয়ে শেষ দিকে ২১ বলে ২২। যথারীতি আবারও দারুণ উজ্জ্বল মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে এবার তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সও যথেষ্ট হয়নি আবাহনীর জন্য। প্রায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা দলটিকে প্রথম হারের স্বাদ দিয়েছে লিগে ধুঁকতে থাকা প্রাইম ব্যাংক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2018, 12:46 PM
Updated : 2 March 2018, 12:46 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডকে ৯ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। বিকেএসপিএত শুক্রবার প্রাইম ব্যাংকের ২৪৬ রান তাড়ায় আবাহনী থমকে যায় ২৩৭ রানে।

লিগে টানা ৬ জয়ের পর প্রথম হারল আবাহনী। প্রথম ৬ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জয়ী প্রাইম ব্যাংক সপ্তম ম্যাচে উপহার দিল চমক।

ম্যাচের শুরুটা ছিল মাশরাফির ঝলকে। প্রথম ওভারেই তিনি ফিরিয়ে দেন মেহরাব হোসেন জুনিয়রকে। পরে তুলে নেন আরেক ওপেনার মেহেদি মারুফের উইকেটও।

তৃতীয় উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়েন জাকির হাসান ও মোহাম্মদ আল আমিন। ৬২ রান করা জাকিরকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন সাকলাইন সজিব।

আল আমিন এরপর জুটি গড়ে তোলেন ইউসুফ পাঠানকে নিয়ে। চতুর্থ উইকেটে দুজনে যোগ করেন ৬৮ রান। ইউসুফকে ২৮ রানে ফিরিয়ে এই জুটিও ভাঙেন সাকলাইন।

এরপর দলকে বলতে গেলে একাই টেনেছেন আল আমিন। ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৮৪ রান করে আউট হন ৪৫তম ওভারে। শেষ দিকে অধিনায়ক মনির ১৫ বলে করেন ২০ রান।

নতুন বলে দুই উইকেটের পর পুরোনো বলেও মাশরাফি নেন দুটি উইকেট। ৭ ম্যাচে ১৯ উইকেটে এখন তিনি লিগের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। চার উইকেট হলো দুবার, আরও একবার ৫ উইকেট।

২৪৭ রানের লক্ষ্য খুব চ্যালেঞ্জিং হওয়ার কথা ছিল না শক্তিশালী আবাহনীর জন্য। কিন্তু বল হাতে প্রাইম ব্যাংকের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। আগের দুই ম্যাচে উইকেট শূন্য এনামুল হক জুনিয়র এদিন নতুন বলে শুরুতেই ফেরান এবারের লিগে আবাহনীর সেরা ব্যাটসম্যান এনামুল হককে।

নতুন বলের আরেক বোলার পেসার শরিফুল ইসলাম ষষ্ঠ ওভারে তিন বলের মধ্যে তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোহাম্মদ মিঠুনকে। আবাহনীর রান তখন ৩ উইকেটে ১৭।

নড়বড়ে শুরুর পর দারুণ এক জুটিতে দলকে পথে ফেরান সাইফ হাসান ও নাসির হোসেন। চতুর্থ উইকেটে দুজনে গড়েন ১২৭ রানের জুটি।

একটি উইকেটের জন্য দিশাহারা প্রাইম ব্যাংককে আবার ম্যাচে ফেরান সেই শরিফুল। নাসিরকে ফিরিয়ে ভাঙেন এই জুটি। ৮৮ বলে ৬৫ রান করে ফেরেন আবাহনী অধিনায়ক।

এরপর আবাহনী পায়নি আর বলার মত জুটি। দারুণ শুরু করলেও ১০ বলে ১৬ রানে ফেরেন মোসাদ্দেক। একপ্রান্ত আগলে রাখা ওপেনার সাইফ হাসান রান আউট হয়ে যান ১২৪ বলে ৭৫ রান করে।

শেষ দিকে লিস্ট ‘এ’তে অভিষিক্ত মোহাম্মদ রাকিব ও মাশরাফি চেষ্টা করেছেন। কিন্তু রান বলের টানাপোড়েন মেটানো সম্ভব হয়নি। ২৭ বলে ২৫ করেন রাকিব, ২১ বলে ২২ মাশরাফি।

শেষ দিকে ভারতীয় মানপ্রিত গনির উইকেট নিয়ে শরিফুল স্বাদ পান লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে প্রথমবার ৪ উইকেটের। মাশরাফিকে ছাপিয়ে দলকে জিতিয়ে ম্যাচ সেরাও এই পেসার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম ব্যাংক: ৪৯.২ ওভারে ২৪৬ (মারুফ ১৫, মেহরাব ০, জাকির ৬২, আল আমিন ৮৪, ইউসুফ ২৮, নাহিদুল ৬, সাজ্জাদুল ১৪, দেলোয়ার ৩, মনির ২০, এনাম জুনিয়রে ২*, শরিফুল ৬; মাশরাফি ৪/৪১, গনি ২/৫৩, নাসির ১/৩৭, সানজামুল ০/৪৮, সাকলাইন ২/৪৭, মোসাদ্দেক ০/১৯)।

আবাহনী: ৫০ ওভারে ২৩৭/৯ (এনামুল ৫, সাইফ ৭৫, শান্ত ৫, মিঠুন ০, নাসির ৬৫, মোসাদ্দেক ১৬, রাকিব ২৫, মাশরাফি ২২, গনি ৬, সানজামুল ৫*, সাকলাইন ৯*; এনাম জুনিয়র ১/৩৪, শরিফুল ৪/৫১, দেলেয়ার ২/৪৩, ইউসুফ ০/৪৫,মনির ০/৫১, নাহিদুল ১/১২)

ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শরিফুল ইসলাম