সিলেটের শুরুতে শেষ ভালোর আশায় বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়ে গেছে বছর চারেক আগে। কদিন আগে টইটম্বুর গ্যালারিতে বিপিএলের সাড়া জাগানো আয়োজনও হয়ে গেল। তবু একটি কমতি ছিল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের। নিজেদের জাতীয় দলের পা পড়েনি এখনও! এবার শেষ হচ্ছে সেই অপেক্ষার প্রহর। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি দিয়ে নয়নাভিরাম এই মাঠে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের পথচলা। সিলেটে শুরুর ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য সুযোগ হতাশার সিরিজের শেষটা ভালো করার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2018, 12:01 PM
Updated : 17 Feb 2018, 12:42 PM

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মিরপুরে হেরে সিরিজে পিছিয়ে বাংলাদেশ। রোববার শেষ টি-টোয়েন্টি সিলেটে। ম্যাচটি শুধুই একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নয়, বাংলাদেশের জন্য কিছু পাওয়ার সুযোগও। সিলেটে নিজেদের প্রথম ম্যাচ জয় দিয়ে স্মরণীয় করে রাখার হাতছানি, পাশাপাশি হতাশায় মোড়ানো সিরিজে অন্তত শেষটা ভালো করার সুযোগ।

কাজটি যদিও কঠিন। ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের শেষ ভাগ থেকে হতাশার যে স্রোত শুরু, টেস্ট সিরিজ হয়ে তা প্রবাহিত হয়েছে টি-টোয়েন্টির শুরুতেও। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের রেকর্ড ১৯৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচও শ্রীলঙ্কা অনায়াসে জিতেছে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে।

এমন হারের পর দলের মনোবল থাকার কথা তলানিতে। তবে মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠে তবু ফুটে উঠল প্রত্যয়।

“টেস্ট সিরিজ ও ওয়ানডে সিরিজে আমরা আশাবাদী ছিলাম, আশানুরূপ ফল পাইনি। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচটা ব্যাটসম্যানরা ভালো পারফর্ম করেছে, কিন্তু বোলাররা হয়তো পরিকল্পনা ঠিকমতো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। কিন্তু এখনও একটা ম্যাচ আছে। সেটিতে গর্ব নিয়ে নামার মানসিকতা এখনও আছে আমাদের। আমরা সেটার জন্য খেলব। ওটাই আমরা চিন্তা করছি।”

শেষ টি-টোয়েন্টির আগে ভাঙা মনোবল চাঙা করাই বড় চ্যালেঞ্জ। সেটি অস্বীকার করছেন না মাহমুদউল্লাহ। শোনালেন চ্যালেঞ্জটা জয় করার তাড়নার কথা।

“আমরা নিজেদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করছি যেন সিরিজটা জিততে না পারি, অন্তত ড্র করতে পারি। এটাই লক্ষ্য। প্রত্যেকটা ম্যাচই আমরা খেলেছি জেতার জন্য। চেষ্টা থাকবে এটাই, যেন নিজেরাই অনুপ্রাণিত হয়ে ভালো একটা ফল নিয়ে শেষ করতে পারি।”

“ঘুরে দাঁড়ানোর একটা তাগিদ সবার মাথায় কাজ করছে। আশা করি, আমরা মাঠে কিছু একটা করে দেখাতে পারব। যেটা আমি আগেই বললাম যে, নিজেরা অনুপ্রাণিত হওয়া, বাংলাদেশ দলকে কিছু দেওয়ার জন্য বাড়তি কিছু করা। এই জিনিসগুলো নিয়ে আমরা চেষ্টা করছি। নিজেরাও ওই জিনিসটা অনুভব করছি। আশা করছি, ভালো কিছু দেখাতে পারব।”

গত বিপিএলে দেখা গেছে, এই মাঠে পরে ব্যাট করা দলই জিতেছে বেশি। ৮ ম্যাচের ৬টিতেই জিতেছে রান তাড়া করা দল। সেদিক থেকে টস হয়ে উঠতে পারে গুরুত্বপূর্ণ। স্কিলের বাস্তবায়ন নিয়ে চিন্তিত মাহমুদউল্লাহ অবশ্য টসের ভাবনায় যেতেই নারাজ।

“টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যেকটি বিভাগেই ভালো করতে হবে। আগে ব্যাটিং করেন বা বোলিং, স্কিল পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারলে সেটিই যথেষ্ট। কন্ডিশন যদি একটু ভিন্ন থাকে, তাহলে টসের ইস্যুতে বিবেচনার বিষয় থাকে। নইলে আগে ব্যাটিং বা বোলিং নিয়ে ভাবনার কিছু নেই।”

বাংলাদেশের যেখানে কিছু একটা পাওয়ার হাহাকার, শ্রীলঙ্কার সেখানে হাতছানি দারুণ কিছুর। ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জয়, টেস্ট সিরিজ জয়ের পর সাফল্যমণ্ডিত সফরের শেষটায় সোনায় সোহাগা হতে পারে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়। শ্রীলঙ্কান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহের কণ্ঠে সেটিরই তাগিদ।

“অবশ্যই আমরা চাইব ২-০তে জিততে। আমরা কোনো ম্যাচেই হারার জন্য নামি না, ম্যাচ জিততেই এখানে এসেছি। এই সফরে ভালো করেছি। শেষটাও জয় দিয়ে করতে পারলে দারুণ হবে।”

সিলেটে বাংলাদেশের শুরুর ম্যাচটিই এখন দুই দলের শেষের হিসাব মেলানোর মঞ্চ।